প্রতীকী ছবি।
উদ্বেগ কিছুতেই পিছু ছাড়়ে না। খুব অনাকাঙ্খিত একটা ঘটনা আবার ঘটে গেল মহানগরে। ঘটনাটা রাতের কলকাতায় মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে আরও একবার প্রশ্ন তো তুলে দিলই।এ শহরের গণপরিবহণ ব্যবস্থা কতটা নিরাপদ, তা নিয়েও নতুন করে ভাবার অবকাশ তৈরি করল।
নিঃসঙ্গ মহিলা যাত্রীকে নির্জন এলাকায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেন এক শাটল কারের চালক। অভিযোগ এমনই। দক্ষিণ কলকাতার জমজমাট এলাকা থেকে শাটলে উঠেছিলেন ওই মহিলা। মাঝপথে বিপদ বুঝে চিৎকার শুরু করতে হল তাঁকে। উদ্দেশ্য সিদ্ধি হবে না বুঝেই সম্ভবত মহিলাকে গাড়ি থেকে প্রায় ফেলে দিলেন চালক। অভিযুক্ত ব্যক্তি পালাতে পারেননি, প্রথমে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়েছেন, তারপর পুলিশে হস্তান্তরিত হয়েছেন। কিন্তু ওই মহিলা যাত্রী গুরুতর জখম তো বটেই, তার চেয়েও অনেক বেশি আতঙ্কেও।
মহিলা যাত্রীর সঙ্গে চূড়ান্ত দুর্ভাগ্যজনক কিছু শেষ পর্যন্ত ঘটতে পারেনি। ওই মহিলার প্রাণপন চেষ্টায় এবং পথচলতিদের প্রশংসনীয় তৎপরতায়। কিন্তু ঘটনাটা যে দিকে গড়াচ্ছিল, তা অবশ্যই আতঙ্কের বিষয়। গাড়ি থেকে পড়ে যাওয়া মহিলা কতদিনে সুস্থ হবেন, শারীরিক আঘাতের নিরাময় হলেও মানসিক আঘাত কতদিনে ভুলতে পারবেন, সে সব প্রশ্নের উত্তর খুব একটা স্বস্তিদায়ক হবে না।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
আরও পড়ুন: রাতের কলকাতায় শাটল কারে নির্জন রাস্তায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা মহিলাকে
রাতের শহরে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসনকে যে আরও ভাবতে হবে, এই ঘটনা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। রাতের কলকাতায় মহিলারা রোজ এইরকম বিপদের মুখে পড়ছেন, তা নয়। কিন্তু ঘটনা আজ আমাদের উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলল, তা খুব বিচ্ছিন্ন ঘটনাও নয়। অ্যাপ ক্যাবে বা শাটল কারে মহিলা যাত্রীর বিপদে পড়ার অভিযোগ নৈশ কলকাতায় এর আগেও বেশ কয়েকবার উঠেছে। প্রবণতাটা অবশ্যই উদ্বেগজনক এবং একে আর বাড়তে দেওয়া চলেনা কিছুতেই। দায়টা কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীদেরই। এ শহরে আইনের শাসন পুরো মাত্রায় বহাল থাকলে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীদর প্রতি প্রয়োজনীয় সমীহ বহাল থাকলে এইসব প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে থাকে, দুষ্কৃতীরা আতঙ্কে থাকে। দুষ্কৃতীদের মধ্যে সেই আতঙ্কটা জাগিয়ে রাখতে আমাদের পুলিশ-প্রশাসন কি ব্যর্থ? যদি ব্যর্থ না হয়, তাহলে এইসব অপরাধমূলক প্রবণতা নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরনোর সাহস পায় কী করে? গোটা শহরই এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে। পুলিশ-প্রশাসনকেও এই প্রশ্নের উত্তরটা খুঁজতে হবে। নাগরিক আতঙ্কে থাকবেন, নাকি আতঙ্কে থাকবে দুষ্কৃতীরা? এই প্রশ্নের উত্তর পুলিশ প্রশাসনই দিতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy