কী ভাবে দেখাতে হয়
সুনন্দ ঘোষের লেখাটি (‘দেখে বড় দুঃখ হয়’, ১৬-১১) পড়ে মনে পড়ল আজ থেকে প্রায় ৩০ বছর আগেকার একটি ঘটনা। তখন আমার বয়স ছিল ২৫। সমীর রায়চৌধুরী তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের উপ-সংস্কৃতি অধিকর্তা (চারুকলার দায়িত্বপ্রাপ্ত), পর্যটনে অত্যন্ত আগ্রহী ছিলেন। তিনি আমার বিশেষ ঘনিষ্ঠও। যে কোনও স্থানে পর্যটনে উৎসাহী এই মানুষটি আমাকে সঙ্গে নিয়ে দুই দফায় বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর ও মুর্শিদাবাদে গিয়েছিলেন।
তাঁর মুখেই বিষ্ণুপুরের মল্ল রাজাদের ইতিহাস, মল্ল রাজার আশ্রিতা লালবাইয়ের কাহিনি প্রথম শুনেছিলাম। একটি নিজর্র্ন অঞ্চল এবং একটি বিশাল সরোবর, আপাতভাবে যা কোনও পর্যটককে আকর্ষণ করার মতো কিছুই বহন করে না, সেখানে বসে আমি যেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম রানি চন্দ্রপ্রভার হাহাকার, রাজপুরোহিতের সহায়তায় লালবাইকে দিঘির জলে ময়ূরপঙ্খী বজরায় সপুত্র হত্যা করার দৃশ্য।
এর পরেও অন্য এক সময়ে সমীরদার সঙ্গে মুর্শিদাবাদের মতিঝিল, সিরাজের সমাধি ইত্যাদি দেখার সময়েও সমীরদার অপূর্ব কথন ও বর্ণনায় আমার চোখের সামনে উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছিল মুর্শিদাবাদের হারেমে সিরাজের বিরুদ্ধে ঘসেটি বেগমের চক্রান্ত... গভীর রাতে মতিঝিল প্রাসাদের তোরণদ্বারে চক্রান্তের চক্রীদের অশ্বক্ষুরের আওয়াজ... আত্মগোপন করে তাদের আসা যাওয়া— সবই যেন দৃশ্যমান হয়ে উঠেছিল। এ জন্য কোনও ‘সনে লুমিয়ে’ বা লাইট অ্যান্ড সাউন্ড অনুষ্ঠানের আয়োজন দরকার পড়েনি। শুধু সহায়ক হয়েছিল তাঁর ইতিহাসচেতনা, সাহিত্যমনস্কতা ও আশ্চর্য বর্ণনাকৌশল।
অনেক পরে, বিদেশ ভ্রমণকালে এ রকমই একটি সাইটসিইং করার সুযোগ হয়েছিল ইংল্যান্ডের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে। সেখানে অবশ্য অতি-আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রতিটি পর্যটকের জন্য ওই ক্যাথিড্রালে আর্চবিশপ টমাস বেকেটের হত্যার আশ্চর্য ইতিহাস পার্সোনাল পকেট টেপ রেকর্ডারের সাহায্যে দেখার (না কি শোনার) ব্যবস্থা ছিল। ঐতিহাসিক স্থানগুলির নিছক বাড়িঘর না-দেখে তার রোমাঞ্চকর ইতিহাসগুলিও জানতে পেরে আনন্দ, অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা— সবই লাভ করা গিয়েছিল।
এই বঙ্গে অথবা এই ভারতে এ রকম ভাবে যথাযথ গাইডের ব্যবস্থা কি করা যায় না? এ জন্য বিশেষ প্রযুক্তি, এবং গাইডদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রয়োজন।
উত্তম গঙ্গোপাধ্যায়। আজাদগড়, কলকাতা
ওষুধেরও চৈত্র সেল
ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান মারফত পরিষেবা পেয়েছেন ৯০ লক্ষ মানুষ। (‘ওষুধের বাজারে স্বাস্থ্য...’, সুগত মারজিৎ, ১৮-১২) কিন্তু মনে একটা প্রশ্ন দেখা দেয়: শতকরা ৪৮ থেকে ৬৭ ভাগ ‘ছাড়’ না দিয়ে আইনসংগত ভাবে ওষুধ-প্যাকেটের গায়ে ঠিক দাম (এমআরপি) লিখলে হত না? নিন্দুকেরা যে বর্তমান ব্যবস্থাটাকে ‘চৈত্র সেল’ ভাবছেন!
সুকুমার পানিগ্রাহী। কাঁথি, পূর্ব মেদিনীপুর
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy