Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

অন্ধ্র থেকে উদ্ধার কলকাতার অপহৃত বাসিন্দা, ধৃত ৩

পরিচিতের সঙ্গে দেখা করবেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন কালীঘাটের বাসিন্দা শঙ্কর ভট্টাচার্য। তার পর আর ফেরেননি। তাঁর মোবাইলে ফোন করে জানা যায়, অপহৃত হয়েছেন তিনি। এর পর মোবাইলের টাওয়ার এবং ব্যবহৃত এটিএম-এর সূত্র ধরে বুধবার সকালে অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়া থেকে তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় কুন্দনপল্লি মালালা (৩৮), বিজয় কুমার সিংহ (৪৩), রঘুনাথ তার্কা (৩৮) নামে তিন ব্যক্তিকে। পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৮ নভেম্বর এক পরিচিতের নাম করে শঙ্করবাবুর মোবাইলে ফোন আসে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৪ ১৮:৪৫
Share: Save:

পরিচিতের সঙ্গে দেখা করবেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন কালীঘাটের বাসিন্দা শঙ্কর ভট্টাচার্য। তার পর আর ফেরেননি। তাঁর মোবাইলে ফোন করে জানা যায়, অপহৃত হয়েছেন তিনি। এর পর মোবাইলের টাওয়ার এবং ব্যবহৃত এটিএম-এর সূত্র ধরে বুধবার সকালে অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়া থেকে তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় কুন্দনপল্লি মালালা (৩৮), বিজয় কুমার সিংহ (৪৩), রঘুনাথ তার্কা (৩৮) নামে তিন ব্যক্তিকে।

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৮ নভেম্বর এক পরিচিতের নাম করে শঙ্করবাবুর মোবাইলে ফোন আসে। লেক মলের কাছে দেখা করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন তিনি। বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় স্ত্রীকে বলে গিয়েছিলেন, একটা কাজে বেরোচ্ছেন। তাড়াতাড়ি ফিরেও আসবেন বলে গিয়েছিলেন তিনি। এর পর আর তিনি বাড়ি ফেরেননি। পরে বার বার ফোন করলেও তাঁর সঙ্গে সে রকম ভাবে কথা বলতে পারেননি পরিবারের লোকেরা।

এই ঘটনার দু’দিন পর অর্থাত্ ১০ তারিখ শঙ্করবাবুর মোবাইলে ফের ফোন করেন তাঁর স্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, তিনি ফোন করায় তা ধরেন অপরিচিত এক ব্যক্তি। ওই মহিলার বয়ান অনুযায়ী, ফোন তুলে সেই ব্যক্তি তাঁকে বলেন, “২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ না দিলে শঙ্করবাবুকে ছাড়া হবে না।” এর পর কালীঘাট থানায় একটি অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর স্ত্রী। পুলিশের পরামর্শ অনুযায়ী, শঙ্করবাবুর স্ত্রী অপহরণকারীদের প্রথমে কিছু টাকা দিয়ে পরে বাকি টাকাটা মিটিয়ে দেবেন বলে জানান। টাকাটা শঙ্করবাবুর অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিতে বলে অপহরণকারীরা। তিনি সেই মতোই কাজ করেন। এর মধ্যেই তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশ।

এর কয়েক দিন শঙ্করবাবুর স্ত্রীকে ফোন করে বাকি টাকাটা দিতে বলে অপহরণকারীরা। কাছে টাকা নেই, এই অজুহাতে কিছুটা সময় চেয়ে নেন তিনি। কিন্তু, অপহরণকারীরা তাঁকে জানায়, শিলিগুড়িতে শঙ্করবাবুর কিছু সম্পত্তি আছে। সেই সম্পত্তি বিক্রি করে বাকি টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে তারা। তাঁর স্ত্রীর তাদের জানান, ওই সম্পত্তির মালিকানা শঙ্করবাবু এবং তাঁর মায়ের নামে। বিক্রি করতে হলে তো তাঁর স্বামীকে স্বাক্ষর করতে হবে। তাই অপহরণকারীরা ওই সম্পত্তির দলিলের ড্রাফ্ট তাদের এক জনের ই-মেলে পাঠিয়ে দিতে বলে।

কলকাতা পুলিশ ওই ই-মেলের সূত্র ধরে জানতে পারে, শঙ্করবাবুকে বিজয়ওয়াড়াতে রাখা হয়েছে। এর পর স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় অন্ধ্রপ্রদেশ পৌঁছে উদ্ধার করা হয় তাঁকে। অপহরণের পাশাপাশি শঙ্করবাবুকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই দুষ্কৃতীরা শঙ্করবাবুকে প্রথমে হাওড়া এবং তার পরে ডানকুনিতে নিয়ে যায়। এর পর বিহার, হয়দরাবাদ হয়ে অবশেষে বিজয়ওয়াড়ায় ধৃতদের এক জনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁকে।

ধৃত ওই তিন জনকে এ দিন নিজামাবাদ আদালতে তোলা হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর। শঙ্করবাবুকেও কলকাতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE