Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

অপছন্দের উইকেটে কষ্ট করে জিততে হল ধোনিদের

কেন বাউন্স ও গতিময় উইকেট পছন্দ করে না আমাদের ব্যাটসম্যানরা, সেটাই বোঝা গেল শুক্রবার পারথে। আগের তিন ম্যাচে যে সমস্যায় পড়েনি ভারত। অর্থাৎ ওয়াকার মতো বাউন্স ও গতিতে ভরা উইকেট। পারথে তেমন উইকেটে পড়তেই ভারতের দুর্বল জায়গাটা বেরিয়ে পড়ল। নেহাত ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথমে ব্যাট করে বড় রান তুলতে পারেনি। মাত্র ১৮২। এ জন্য অবশ্য কৃতিত্ব প্রাপ্য ভারতের বোলারদের। কিন্তু ক্যারিবিয়ানদের রানটা বেশি হয়ে গেলে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ব্যথা এ দিন আরও বাড়ত হয়তো।

ম্যাচ শেষে মাঠ ছাড়ছেন ক্যাপ্টেন কুল। ছবি: এএফপি।

ম্যাচ শেষে মাঠ ছাড়ছেন ক্যাপ্টেন কুল। ছবি: এএফপি।

অশোক মলহোত্র
শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৫ ২১:৩৫
Share: Save:

কেন বাউন্স ও গতিময় উইকেট পছন্দ করে না আমাদের ব্যাটসম্যানরা, সেটাই বোঝা গেল শুক্রবার পারথে। আগের তিন ম্যাচে যে সমস্যায় পড়েনি ভারত। অর্থাৎ ওয়াকার মতো বাউন্স ও গতিতে ভরা উইকেট। পারথে তেমন উইকেটে পড়তেই ভারতের দুর্বল জায়গাটা বেরিয়ে পড়ল। নেহাত ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথমে ব্যাট করে বড় রান তুলতে পারেনি। মাত্র ১৮২। এ জন্য অবশ্য কৃতিত্ব প্রাপ্য ভারতের বোলারদের। কিন্তু ক্যারিবিয়ানদের রানটা বেশি হয়ে গেলে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ব্যথা এ দিন আরও বাড়ত হয়তো।

দুশোরও কম রান তাড়া করে জিততেই আর একটু হলে মুখ থুবড়ে পড়ছিল টিম ইন্ডিয়া। হারলে যে কোয়ার্টার ফাইনালের দৌড়ে বিশাল পিছিয়ে পড়ত মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা, তা নয়। কিন্তু বিশ্বকাপে টানা আটটা ম্যাচ জেতার রেকর্ডটা ধোনির দলের ছোঁওয়া হত না। ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখলাম ২০০৩-এ সৌরভের ভারতও টানা আটটা ম্যাচ জিতেছিল। ধোনিরা আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চার উইকেটে হারিয়ে সেই ভারতীয় রেকর্ড স্পর্শ করল। মঙ্গলবার আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে নিশ্চয়ই সেই রেকর্ড ভাঙবে ওরা। তবে আগের তিন ম্যাচে জেতার পর এই ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের এমন পারফরম্যান্স হতাশাজনক বই কি।

উইকেটের চরিত্রের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার আগেই যে ভাবে একের পর এক ভারতীয় ব্যাটসম্যান আউট হয়ে গেল, সেটা অবশ্যই চিন্তার বিষয়। এই বিশ্বকাপে তো এমন উইকেটে ফের নামতে হতে পারে ভারতকে। তখন কী হবে? যে কোনও পরিবেশ ও উইকেটে দ্রুত মানিয়ে নিয়ে কী ভাবে সেই উইকেট অনুযায়ী ভাল ব্যাট করতে হয়, তা শেখা উচিত ধোনির কাছ থেকে। ধোনির এই গুণটা বরাবরই। তাই একটার পর উইকেট পড়তে থাকলেও ধোনি যতক্ষণ উইকেটে ছিল, ততক্ষণ ভরসা ছিল যে ভারত এই ম্যাচে হার মানবে না। ধোনি যত ক্ষণ ছিল তত ক্ষণ আশা ছিল। সেই আশাই জিইয়ে রেখে ম্যাচ বার করে নিল ‘ক্যাপ্টেন কুল’। কেন তার এই ডাক নামটা, তা এ দিন ফের বুঝিয়ে দিল ধোনি।

এমন কিছু বিশাল রান তাড়া তো করতে হচ্ছে না। অযথা তাড়াহুড়ো করে ঝুঁকিপূর্ণ শট নিতে গিয়ে আউট হব না মাথায় এই কৌশলটা গেঁথে নিয়েই এ দিন ব্যাট করতে নেমেছিল ভারত অধিনায়ক। তাই ইনিংসের শেষে ৪৫ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে নিয়ে মাঠ ছাড়ল সে। কেন সে সফলতম ওয়ান ডে অধিনায়ক (ভারতকে ৫৯ ম্যাচ জিতিয়ে সেই রেকর্ড গড়ল এ দিনই), তা বুঝিয়ে দিল। রায়না, জাডেজারা যে ভাবে অপ্রয়োজনীয় শট খেলতে গিয়ে দরকারের সময় আউট হল, তাতে তাদের পরিবেশ ও উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার গুণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। কোহলির কাছ থেকেও ও রকম দায়িত্বজ্ঞানহীন শটে আউট হওয়া আশা করা যায় না।

বরং প্রশংসা করতে হবে ভারতীয় পেসারদের। পছন্দের উইকেট পেলেই শুধু হয় না। তাকে কাজে লাগাতেও জানতে হয়। শামি, উমেশ, মোহিতরা সেটাই করল। তা ছাড়া ভারতের তিন পেসার ১৪৫ কিমি বেগে সমানে বল করে চলেছে, এটা দেখতে যে কত ভাল লাগছিল, তা বলে বোঝাতে পারব না। উইকেটের উপযোগী একটা লাইন ও লেংথ ঠিক করে নিয়ে সেটা সমানে কাজে লাগানোটাই ওদের কৃতিত্ব। গুড লেংথে বল না ফেলে, একটু খাটো লেংথে সঠিক লাইনে বল ফেলেই যে মাত করল শামিরা, এতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ অনেকটা চাপে পড়ে যায়। তবু ৮৫ রানে সাত উইকেট পড়ে যাওয়ার পরও ওরা ১৮২-তে পৌঁছতে পারল ভারতের ডেথ ওভারে দুর্বল বোলিং ও খারাপ ফিল্ডিংয়ের জন্য। চার-চারটে ক্যাচ ফেলল এ দিন ভারত। না হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দেড়শোর মধ্যেই গুটিয়ে যেত। ভারতের কাজটা আরও সোজা হয়ে যেত। এই কষ্টার্জিত জয়ের ফলে অবশ্য যে সামান্য আত্মতুষ্টি ঢুকে পড়েছিল ভারতীয় শিবিরে, তা চলে যাবে। তাই শাপে বরই হল বলা যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

world cup 2015
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE