Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

অবশেষে আমেরিকার সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর আফগানিস্তানের

অবশেষে চুক্তি। দীর্ঘ টালবাহানার পরে আমেরিকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা-চুক্তি স্বাক্ষর করল আফগানিস্তান। মঙ্গলবার আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হানিফ আতমার এবং আফগানিস্তানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস কানিংহাম এই চুক্তিতে সই করেন। দীর্ঘ দিন আটকে থাকা এই চুক্তি বাস্তবায়িত করা প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল। গত কালই গনি আফগান প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন।

আফগানিস্তান এবং আমেরিকার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা-চুক্তি স্বাক্ষর করছেন (বাঁ দিকে) মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস কানিংহাম এবং আফগান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হানিফ আতমার। রয়েছেন প্রেসিডেন্ট অাশরফ গনি ও চিফ এগজিকিউটিভ আবদুল্লা আবদুল্লা। মঙ্গলবার কাবুলে। ছবি: এএফপি।

আফগানিস্তান এবং আমেরিকার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা-চুক্তি স্বাক্ষর করছেন (বাঁ দিকে) মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস কানিংহাম এবং আফগান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হানিফ আতমার। রয়েছেন প্রেসিডেন্ট অাশরফ গনি ও চিফ এগজিকিউটিভ আবদুল্লা আবদুল্লা। মঙ্গলবার কাবুলে। ছবি: এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৮:৪৪
Share: Save:

অবশেষে চুক্তি। দীর্ঘ টালবাহানার পরে আমেরিকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা-চুক্তি স্বাক্ষর করল আফগানিস্তান। মঙ্গলবার আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হানিফ আতমার এবং আফগানিস্তানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস কানিংহাম এই চুক্তিতে সই করেন। দীর্ঘ দিন আটকে থাকা এই চুক্তি বাস্তবায়িত করা প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল। গত কালই গনি আফগান প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন।

এই চুক্তির ফলে চলতি বছরের পরেও আফগানিস্তানে প্রায় ৯৮০০ মার্কিন সেনা থাকতে পারবে। আমেরিকা ছাড়াও জার্মানি, ইতালি, তুরস্ক-সহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের সেনা মিলিয়ে আগামী বছর থেকে আফগানিস্তানে ন্যাটোর সাড়ে ১২ হাজার সেনা আফগানিস্তানে থাকবে। ব্রিটেনের সেনা না থাকলেও আফগান সেনাকে প্রশিক্ষণের জন্য অফিসারদের পাঠানো হবে বলে ব্রিটিশ প্রশাসন জানিয়েছে। চুক্তি মোতাবেক ২০১৬ পর্যন্ত মার্কিন সেনা আফগানিস্তানে থাকবে। এই সেনা মার্কিন নেতৃত্বে বিভিন্ন সন্ত্রাসদমন অভিযান অংশ নেবে। পূর্বতন আফগান রাষ্ট্রপতি হামিদ কারজাই এই চুক্তির বিরোধী ছিলেন।

হামিদ কারজাই-এর নিরাপত্তা-চুক্তির বিরোধিতা আফগান-মার্কিন সম্পর্কের অবনতির অন্যতম কারণ। এর ফলে আফগানিস্তানে নানা আর্থিক সাহায্য কমিয়ে আনে আমেরিকা। এতে নানা উন্নয়নমূলক কাজে বিরূপ প্রভাব পড়ে। চুক্তি স্বাক্ষরিত না হলে একতরফা সেনা সরিয়ে নেওয়ার হুমকিও দেয় আমেরিকা। বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্প্রতি ইরাকের পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এই চুক্তি স্বাক্ষর দু’দেশের পক্ষেই খুব জরুরি ছিল। মার্কিন তথা ন্যাটোর সাহায্য ছাড়া তালিবানের পুনরুত্থান ঠেকিয়ে রাখা আফগানি সেনার পক্ষে অত্যন্ত কঠিন কাজ। সম্প্রতি পুনরুজ্জীবিত তালিবানের হামলা আটকাতে ব্যর্থ হয়েছে আফগান সেনা। কাবুলেই একাধিক হামলা হয়েছে। গনির শপথের দিনেই কাবুল বিমানবন্দরে তালিবান হামলায় সাত জনের প্রাণ গিয়েছে। পাশাপাশি ইরাক-সহ মধ্যপ্রাচ্যে অভিযান চালাতে এবং তালিবানের বাড়বাড়ন্ত রুখতে আমেরিকারও আফগানিস্তানে সেনাঘাঁটি থাকা দরকার। আফগানি ঘাঁটি থেকে ক্রমাগত ড্রোন আক্রমণ চালিয়ে আমেরিকা বিশ্বের দরবারে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হামিদ কারজাইও এর প্রবল বিরোধী ছিলেন। কিন্তু এই ক্রমাগত ড্রোন অভিযানে তালিবান ও আল-কায়দার শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশকে খতম করা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন আমেরিকার সামরিক নেতৃত্ব। ফলে এই অঞ্চল থেকে ঘাঁটি সরিয়ে নিয়ে যেতে তাঁদেরও আপত্তি ছিল।

ইরাকের তৎকালীন সরকারের সঙ্গে বোঝাপড়া না হওয়ায় সেখান থেকে একতরফা সেনা সরিয়ে নেয় আমেরিকা। তার পরে পরিস্থিতির ক্রমাবনতি হতে থাকে। অবশেষে ইসলামিক স্টেট-কে রুখতে ইরাকে আবার রণাঙ্গনে নামতে হয়েছে আমেরিকাকে। শুরু হয়েছে বিমান হানা। গড়তে হয়েছে মহাজোটও। এই অভিজ্ঞতার পুনরুবৃত্তি রুখতে শেষ মুহূর্তে দু’পক্ষই তৎপর হয়েছিল। আশরাফ গনির নির্বাচন প্রক্রিয়াটিকে আরও ত্বরান্বিত করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

afghanistan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE