ঔপনিবেশিক নামকরণ ব্যাঙ্গালোর ঝেড়ে ফেলে সরকারি ভাবে কর্নাটকের রাজধানী শহরের বেঙ্গালুরু হতে উঠতে লেগে গেল প্রায় ৫৮ বছর।
ইংরেজরা আসার পর ইংরেজি উচ্চারণে সেই যে শহরের নাম ব্যাঙ্গালোর হয়েছিল, ১৯৫৬-য় কর্নাটক রাজ্যের জন্ম লগ্নেও তাই-ই থেকে যায়। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজ্য সরকারের আবেদনের ভিত্তিতে ব্যাঙ্গালোর-মহীশূর-ম্যাঙ্গালোর-সহ মোট ১২টি শহরের নাম বদলে অনুমোদন দিয়েছে। শনিবার কর্নাটক রাজ্যের জন্মদিন। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, সেই উপলক্ষে শুক্রবার রাত থেকেই নামবদলের এই নির্দেশ কার্যকর করা হয়েছে।
ঔপনিবেশিক কালে ইংরেজদের উচ্চারণে বহু শহরের নামই পাল্টে যায়। বোম্বে, পণ্ডিচেরি, মাদ্রাজ, পুনা, এমনকী ক্যালকাটা সবই ওই উচ্চারণের ফসল। স্বাধীনতা পরবর্তী কালে পুরনো নামে ফিরে যাওয়া নিয়ে বহু আন্দোলন হয়েছে। ৪০ বছরের লড়াই শেষে ১৯৯৫-তে বোম্বে হল মুম্বই। পরের বছরেই মাদ্রাজের নাম সরকারি স্বীকৃতি পেল চেন্নাই হিসেবে। ২০০১ সালে ক্যালকাটাও ইংরেজিতে কলকাতা লেখার অনুমতি পায়। ২০০৬-এ পুদুচেরি, ২০০৮-এ পুণে এবং ২০১১-য় ওড়িশা পুরনো নামে ফিরে যায়।
ব্যাঙ্গালোরের নাম বদলের এই আন্দোলনও বেশ পুরনো। রাজ্যের সুবর্ণজয়ন্তী জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ২০০৫-এ তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এন ধর্ম সিংহের কাছে শহরের নাম বদলের আবেদন জানান সাহিত্যিক ইউ আর অনন্তমূর্তি। এর পর গোটা রাজ্য থেকে আরও ১১টি শহরের নাম বদলের প্রস্তাব আসে। রাজ্যের তরফে সেই প্রস্তাব তালিকা তৎকালীন ইউপিএ সরকারের কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু গোল বাধে বেলগাও কে নিয়ে। মহারাষ্ট্র সরকার মরাঠা জাত্যভিমানের কারণ দেখিয়ে বেলগাও-এর নাম পরিবর্তনে আপত্তি তোলে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পিছিয়ে আসে তখন। যদিও বেলগাও-এর নাম তত দিনে বেসরকারি ভাবে বেলাগাভি-তে পরিণত হয়েছে। কেন্দ্রে মোদী সরকার গঠনের পর ফের কর্নাটকের তরফে নাম বদল নিয়ে আর্জি জানানো হয়। সম্প্রতি সেই আর্জি মেনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ১২টি শহরের নাম বদলের অনুমতি দেয়।
তবে ব্যাঙ্গালোর বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইএম ব্যাঙ্গালোর, ম্যাঙ্গালোর বিশ্ববিদ্যালয়-এর নাম সম্ভবত অপরিবর্তিত থাকবে। এ দিন সকালে টুইট করে রাজ্যবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy