গোলান হাইটসের প্রবেশপথ দখলের যুদ্ধ। ইজরায়েল সীমান্ত থেকে। ছবি: এএফপি।
এ বার কার্যত ইজরায়েলের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেল ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিরা। বুধবার আইএস এবং নুসরা ফ্রন্টের জঙ্গিরা সিরিয়া সেনার হাত থেকে গোলান হাইটস-এর একটি প্রবেশপথ দখল করে নেয়। এই গোলান হাইট্সের অন্য একটি অংশ ইজরায়েলের দখলে রয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জ সূত্রে খবর, গোলান হাইটসে কর্মরত তাদের শান্তিরক্ষী বাহিনীর ৬৪ জন সদস্যকে সশস্ত্র একটি দল আটক করেছে। তবে সশস্ত্র দলটি আইএস জঙ্গিদের কি না সে বিষয়ে স্পষ্ট করে এখনও কিছু জানা যায়নি।
ইরাকে কুর্দ যোদ্ধা, ইরাকি সেনা ও আমেরিকার লাগাতার বিমানহানায় আইএস-এর অগ্রগতি ব্যাহত হয়েছে। তাদের দখল করা বেশ কিছু এলাকাও হাতছাড়া হয়েছে। এর পরে আবার সিরিয়ায় জমি দখলের উপরে তারা জোর দিয়েছে। নিজেদের শক্ত ঘাঁটি রাক্কায় সিরিয়ার সেনার দখলে থাকা তাবকো বিমানবন্দর তারা দখল করে নেয়। এ বার গোলান হাইট্সের প্রবেশপথ তাদের দখলে এল।
১৯৬৭ সালে ছ’দিনের যুদ্ধে সিরিয়ার থেকে গোলান হাইট্স-এর একটি বড় অংশ দখল করে নেয় ইজরায়েল। ১৯৭৩-এ আবার গোলান হাইট্স নিয়ে সিরিয়া ও ইজরায়েলের যুদ্ধ হয়। এর পরে গোলান হাইট্সের প্রায় ৭০ শতাংশ ইজরায়েলের দখলে চলে আসে। এর পরে রাষ্ট্রপুঞ্জ বিবদমান দু’পক্ষের মাঝের অংশকে সেনামুক্ত অঞ্চল বলে ঘোষণা করে। ওখানে রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা হয়। ১৯৮১-তে নিজেদের দখলে থাকা গোলান হাইট্সের অংশটিকে কার্যত ইজরায়েলের অংশীভূত করে নেওয়া হয়। যদিও রাষ্ট্রপুঞ্জ অংশটিকে অধিকৃত অঞ্চলের স্বীকৃতি দিয়েছে।
আইএস এর আগেও গোলান হাইট্স দখলের চেষ্টা করেছে। ২০১৩-তে সিরিয়ার সেনা তাদের হঠিয়ে দেয়। এ বার দামাস্কাসের ৪৫ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে গোলান হাইট্স-এর কুনেইট্রা অঞ্চলটি জঙ্গিদের দখলে এল। এখানে প্রায় ৮০ হাজার মানুষের বাস। অঞ্চলটি বেহাত হওয়ার কথা স্বীকার করলেও এখনও লড়াই জারি আছে বলে সিরিয়া সরকার জানিয়েছে। ওই অঞ্চল থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষী বাহিনী সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
তাবকো বিমানবন্দর বেদখল হওয়ার পরে গোলান হাইট্স বেদখল হওয়া সিরিয়ার শাসক বাসার আল-আসাদের পক্ষে বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি সতর্ক হয়েছে ইজরায়েলও। বুধবারই গোলান হাইট্সের সীমান্তে গোলার আঘাতে এক ইজরায়েলি সেনা আহত হয়েছেন। তার পরেই সীমান্তের পথ সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যদিও এই সীমান্ত হয়ে কেউ সিরিয়া ও ইজরায়েলের মধ্যে যাতায়াত করেন না। এ পথে পণ্য পরিবহণও হয় না। তবে জঙ্গিরা এর পরে ইজরায়েলের উপরে হামলা করতে পারে বলে সতর্ক হচ্ছে ইজরায়েল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy