শর্তসাপেক্ষে বিজেপি-কে সভার অনুমতি হাইকোর্টের

ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা করা নিয়ে হাইকোর্ট শর্তসাপেক্ষে বিজেপি-কে অনুমতি দিয়েছে।

হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের এই নির্দেশকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “আমরা আগেই বলেছিলাম, রায় আমাদের পক্ষে যাবে। তা-ই হল। এতে বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ল।” সিপিএমও ওই জায়গায় সভা করতে চেয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়ে আদালতে মামলা করেছে। কিন্তু সেই মামলা এখনও বিচারাধীন। তবে বিচারপতি বসাকের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ফের আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে প্রশাসনিক স্তরে। তেমন হলে প্রধান বিচারপতির বাড়িতে শনিবার বিশেষ শুনানির ব্যবস্থা হতে পারে বলেও সরকারি একটি সূত্রের ইঙ্গিত।

আইন মেনে সভা করা হচ্ছে না, এই যুক্তি দেখিয়ে বিজেপি-র সভার অনুমতি দেয়নি কলকাতা পুরসভা ও দমকল। সেই কারণে এ দিন সকালেই বিচারপতি দেবাংশু বসাকের আদালতে ফের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। শুনানির শুরুতেই বিজেপি-র আইনজীবীরা জানান, যে কোনও শর্তে তাঁরা সভা করতে রাজি। সভা করার ব্যাপারে বিজেপি-র পক্ষ থেকে যে আবেদন করা হয়েছিল, সেই আবেদনে বিস্তর ত্রুটি রয়েছে বলে আদালতে জানান, দমকলের আইনজীবী প্রণব দত্ত। বিচারপতি বসাক অবশ্য এ দিন মন্তব্য করেন, “এই প্রথম একটি রাজনৈতিক দল আইন মেনে সভা করার অনুমতি চাইছে। সভা করতে চাওয়ার আবেদনে ত্রুটি থাকতে পারে। সেই ত্রুটি তারা শুধরে নেবে বলে আশ্বাসও দিচ্ছে।” বিচারপতি জানান, পুরসভা ও দমকল যে ভাবে সভাস্থল বা মঞ্চ তৈরি করতে বলবে তা মানতে বাধ্য থাকবে বিজেপি।

ধর্মতলার যে জায়গায় বিজেপি সভা করতে চাইছে, সেখানে কোনও রাজনৈতিক দলকেই এখন সভা করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে এ দিনই আদালতে জানান রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়। তা জেনে, বিচারপতি বসাকের মন্তব্য, “ওই জায়গায় আর কোনও দিনই কোনও সভা করা হবে না বলে রাজ্য সরকার যদি জানিয়ে দেয়, তা হলে এই মামলা আমি খারিজ করে দেব।” আগামী কাল ধর্মতলায় বিজেপি-র সমাবেশ করার ব্যাপারে বিচারপতি বসাক এ দিন দু’জন স্পেশাল অফিসার নিয়োগ করেছেন। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, পুরসভা ও দমকলের নিয়ম মানলে তবেই বিজেপি ওই সভা করতে পারবে। তবে, ওই সমাবেশ নিয়ন্ত্রণ করার পূর্ণ অধিকার রয়েছে কলকাতা পুলিশের। আদালত পুলিশের অধিকারে হস্তক্ষেপ করেনি।

এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “আদালত যা নির্দেশ দেবে, সেটাই মেনে চলতে হবে। এই নিয়ে মন্তব্য করা যায় না।