অবশেষে সালকিয়ার অরূপ ভাণ্ডারী খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সকলেই পুলিশের হাতে এল। এর আগে পাঁচ জনের হদিশ পেলেও এক জন অভিযুক্ত অধরাই রয়ে গিয়েছিল। মাসখানেকেরও বেশি পালিয়ে বেড়ানোর পর সোমবার সিআইডি-র জালে ধরা পড়ল মূল অভিযুক্ত লালবাহাদুর রাই ওরফে লাল। এ দিন সকালে দক্ষিণেশ্বর থেকে তাকে গ্রেফতার করে সিআইডি। হাওড়া আদালতে পেশ করা হলে তাকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
গত ২৮ জানুয়ারি হাওড়ার বাঁধাঘাটে সরস্বতী পুজোর বিসর্জনের সময় কয়েকটি তরুণীকে কটূক্তি করে স্থানীয় দুষ্কৃতীরা। ঘটনার প্রতিবাদ করে সালকিয়ার বিবিবাগানের দুই যুবক— অরূপ ও তাঁর এক বন্ধু অভিজিত্ বসু। বিসর্জন সেরে ফেরার পথে রাস্তায় ফেলে লাঠি-রড-বাঁশ দিয়ে অরূপকে বেধড়ক পেটায় ওই দুষ্কৃতীরা। রেহাই পায়নি অভিজিত্ও। তাঁকে মেরে নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয়। মারের চোটে গুরুতর জখম হয় অরূপ। তাঁকে কলকাতার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। পরের দিনই কোমায় চলে যায় সে। ঘটনার পাঁচ দিন পর ২ ফেব্রুয়ারি সেখানেই মারা যায় অরূপ। ছ’জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করে অরূপের পরিবার।
অরূপ হত্যায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় গোটা রাজ্যেই। পরিস্থিতি সামলাতে ৪ ফেব্রুয়ারি সালকিয়ায় অরূপের বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অরূপের ভাইকে হাওড়া পুরসভায় চাকরি দেওয়া হয়। তদন্তে নেমে হাওড়া সিটি পুলিশ উত্তরপ্রদেশের বারাণসী থেকে রাজু তিওয়ারি নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। হাওড়া সিটি পুলিশের সঙ্গে তদন্তের ভার নেয় সিআইডি-ও। এর পর গত মাসের ১১, ১৭ ও ১৮-তে হাওড়া আদালতে আত্মসমর্পণ করে ঘটনায় আরও তিন অভিযুক্ত যথাক্রমে শুভম দুবে, সন্দীপ তিওয়ারি এ বরুণ শর্মা। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এই ঘটনায় বড়সড় সাফল্য মেলে। হাওড়া সিটি পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযানে নেমে হাওড়া-দিঘা বাসস্যান্ডের কাছ থেকে ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত আনন্দ প্রসাদকে গ্রেফতার করে সিআইডি। এ দিন লালের গ্রেফতারির ফলে অরূপ-হত্যায় অভিযুক্ত মোট ছ’জনই ধরা পড়ল।
সিআইডি সূত্রের খবর, ঘটনার পরেই এলাকা থেকে গা-ঢাকা দেয় লাল। উত্তরপ্রদেশে নিজের বাড়িতে পালিয়ে যায় সে। কিন্তু সেখানেও পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে বিহারে নিজের বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল। এ দিন দক্ষিণেশ্বরে এক বন্ধুর বাড়িতে আসে সে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেখানে হানা দিয়ে লালকে গ্রেফতার করে সিআইডি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy