দিল্লি শাসনের প্রশাসনিক অধিকার কার? লাখ টাকার এই প্রশ্নের উত্তর পেতে এখন আদালতের দ্বারস্থ কেন্দ্র এবং রাজ্য— যুযুধান দু’পক্ষই। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে এক পক্ষ সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার দিনই অন্য পক্ষ ফের কড়া নাড়ল হাইকোর্টের। শুক্রবার দু’টি মামলারই শুনানি হবে বলে জানিয়েছে আদালত।
ঘটনার সূত্রপাত দিন কয়েক আগে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের অনিচ্ছা সত্ত্বেও কার্যনির্বাহী মুখ্যসচিব হিসেবে শকুন্তলা গামলিনকে নিয়োগ করেন দিল্লির উপ-রাজ্যপাল নজীব জঙ্গ। তাঁর মত না নিয়ে এই নিয়োগ করায় ক্ষুব্ধ কেজরীবাল বরখাস্ত করেন দিল্লি সরকারের কর্মিবর্গ দফতরের সচিব অনিন্দ্য মজুমদারকে। শুরু হয় আমলা নিয়োগ নিয়ে দিল্লি সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রের সংঘাত। অনিন্দ্য মজুমদারকে সরিয়ে রাজেন্দ্র কুমারকে আনার ব্যাপারে আপ সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেন উপ-রাজ্যপাল। বরখাস্ত এবং নিয়োগ— দুই প্রক্রিয়াকেই অবৈধ বলে দাবি করেন নজীব। দিল্লিতে আমলা নিয়োগে তিনিই যে শেষ কথা তা-ও মনে করিয়ে দেন তিনি। উপ-রাজ্যপাল যখন মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে সচিব নিয়োগ বাতিল করতে বলছেন, তখন উপ-রাজ্যপালের এক্তিয়ার নিয়েই প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেন কেজরীবাল।
নিয়োগ বিতর্কে অবশ্য প্রথম থেকেই নজীব জঙ্গের পাশে দাঁড়িয়েছে কেন্দ্র। উপ-রাজ্যপালের ক্ষমতা ‘মনে করিয়ে’ দিয়ে একটি নির্দেশিকাও জারি করা হয় কেন্দ্রের তরফে। বৃহস্পতিবার এই নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করেই হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছে দিল্লি সরকার।
তবে নির্দেশিকা জারি করেও বাগে আনা যায়নি কেজরীবালকে। কেন্দ্র তথা নজীবের বিরুদ্ধে লাগাতার আক্রমণের পথ থেকে কখনওই সরে আসেননি তিনি। এরই মধ্যে বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ হয় দিল্লির দুর্নীতি দমন শাখার হাতে এক পুলিশকর্মীর গ্রেফতার হওয়ায়। ওই পুলিশকর্মীর তরফে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়, দিল্লি পুলিশ সরাসরি কেন্দ্রের অধীন হওয়ায় দিল্লি সরকারের অধীনস্ত দুর্নীতি দমন শাখার অধিকার নেই তাঁকে গ্রেফতার করার। হাইকোর্ট কিন্তু সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি। উল্টে উপ-রাজ্যপালের ক্ষমতাকেই কিছুটা বেঁধে দেয় আদালত। এ দিন হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের অবসরকালীন বেঞ্চে মামলা করে কেন্দ্র। কেন্দ্রের তরফ থেকে অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেলের এই আপিল শুক্রবার শোনা হবে বলে জানিয়েছে বিচারপতি এ কে সিক্রি এবং ইউ ইউ ললিতের ডিভিশন বেঞ্চ।
দুই আদালতে দুই মামলার উপরেই আপাতত নির্ভর করছে দিল্লিতে আমলা নিয়োগ নিয়ে চলতি কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের ভবিষ্যত্।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy