Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

দুর্নীতির দায়ে সুইজারল্যান্ডে ধৃত সাত ফিফা আধিকারিক

দুর্নীতির দায়ে ফিফা-র সাত উচ্চপদস্থ আধিকারিককে গ্রেফতার করল সুইজারল্যান্ডের পুলিশ। বুধবার জুরিখের এক হোটেল থেকে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। এই সাত জন-সহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ এনেছে মার্কিন বিচার দফতর। সুইস আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, সুইজারল্যান্ডেও এঁদের বিরুদ্ধে পৃথক তদন্ত শুরু হবে।

এক সাংবাদিক সম্মেলনে ফিফার সভাপতি শেপ ব্লাটার। ছবি: রয়টার্স।

এক সাংবাদিক সম্মেলনে ফিফার সভাপতি শেপ ব্লাটার। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৫ ২০:১৭
Share: Save:

দুর্নীতির দায়ে ফিফা-র সাত উচ্চপদস্থ আধিকারিককে গ্রেফতার করল সুইজারল্যান্ডের পুলিশ। বুধবার জুরিখের এক হোটেল থেকে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। এই সাত জন-সহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ এনেছে মার্কিন বিচার দফতর। সুইস আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, সুইজারল্যান্ডেও এঁদের বিরুদ্ধে পৃথক তদন্ত শুরু হবে। সেই তদন্তে ২০১৮-এ রাশিয়া এবং ২০২২-এ কাতার-এর বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পাওয়ার পদ্ধতিও খতিয়ে দেখা হবে। তবে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ফিফা-র সভাপতি শেপ ব্লাটার নেই। ফিফা-র তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে তারা তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করবে। পাশাপাশি, আগামী শুক্রবার ফিফা-র নির্বাচন নিয়ম অনুযায়ী হবে।

বেশ কিছু দিন ধরেই ফিফা-র বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ আসছিল। ২০১৮ এবং ২০২২-এর বিশ্বকাপ আয়োজনের দেশ বাছাইয়ের সময়েও দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। এ নিয়ে ফিফা অভ্যন্তরীণ তদন্ত চালায়। সম্প্রতি সেই তদন্তে দেশ বাছাইয়ের সময়ে কোনও দুর্নীতির প্রমাণ মেলেনি বলে ফিফা জানিয়েছিল। কিন্তু তদন্তের এই ফলাফল নিয়েও অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। বেশ কিছু দিন ধরেই ফিফা-র উচ্চপদস্থ বেশ কিছু আধিকারিকে নিয়ে এফবিআই তদন্ত চালাচ্ছিল। মার্কিন বিচার দফতর জানিয়েছে, ১৯৯০ থেকে এই আধিকারিকরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। গণমাধ্যমে সম্প্রচারে সত্ত্ব, বিপণন-সহ নানা বিষয়ে এই দুর্নীতি হয়েছে। প্রায় ২৪ বছরব্যাপী এই দুর্নীতি থেকে এই আধিকারিকেরা প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থ কামিয়েছেন। এবং এই দুর্নীতির ছক মার্কিন মুলুকেই কষা হয়েছিল এবং নানা মার্কিন ব্যাঙ্ক মারফত অর্থের আদানপ্রদান হয়েছিল বলে মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল-এর দফতর জানিয়েছে। তাই অভিযোগগুলি মার্কিন বিচার বিভাগই এনেছে।

ফিফার সহ-সভাপতি জেফ্রি ওয়েব (উত্তর ও মধ্য আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত), প্রাক্তন সহ-সভাপতি জ্যাক ওয়ার্নার, কোস্টারিকার ফুটবল সংস্থার প্রধান এডোয়ার্ডো লি, দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের গভার্নিং কাউন্সিলের প্রধান উউজেনিও ফিগুয়ের্দো, ফিফা-র ক্লাব কমিটি-র প্রধান ব্রাজিলের জোস মারিয়া মারিন-সহ মোট সাত জন এ দিন গ্রেফতার হয়েছেন। তবে মার্কিন বিচার দফতর মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে।

মার্কিন অভিযোগের ভিত্তিতে সুইজারল্যান্ডের পুলিশ এ দিন অভিযান চালায়। তবে সুইজারল্যান্ডের অ্যাটর্নি জেনারেলের দফতর সূত্রে খবর, তারাও পৃথক ভাবে এ বিষয়ে তদন্ত করবে। সেখানে ২০১৮ ও ২০২২-এর দেশ বাছাইয়ের পদ্ধতিও খতিয়ে দেখা হবে। এই আধিকারিকদের গ্রেফতারের পাশাপাশি বেশ কিছু ফাইলও বাজেয়াপ্ত করেছে সুইস পুলিশ। সেই ফাইলগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই সাত জন ছাড়াও এ বিষয়ে আরও দশ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।

ফিফা-র মুখপাত্র দে গ্রেগরিও জানিয়েছেন, জনমানসে ফিফা-র খ্যাতি এবং ছবি, দুইই ধাক্কা খেয়েছে। চার বছরে ধরে দুর্নীতি দূর করার যে চেষ্টা চলছে তা-ও বড় ধাক্কা খেল। পাশাপাশি সভাপতি শেপ ব্লাটারের দিকেও আরও আঙুল উঠবে বলে আশঙ্কা। এ বারের নির্বাচনে ফিফা-র বর্তমান সভাপতি শেপ ব্লাটার আবারও সভাপতি পদে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। এ বার নির্বাচিত হলে এ নিয়ে পর পর পাঁচ বার সভাপতি হবেন ব্লাটার। নিয়ম মেনে সামনের শুক্রবার ফিফা-র নির্বাচন হবে বলেই গ্রেগরি জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE