ফের সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে আলাপ, বন্ধুত্ব এবং আর্থিক প্রতারণা। আলাপ জমানোর পর বিশ্বাস করে সাহায্য করতে গিয়ে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা খোয়ালেন এক গৃহবধূ। পরে আনন্দপুর থানায় অভিযোগ জানানোর পর দিল্লি থেকে ধরা পড়ল দুই প্রতারক।
লালবাজার সূত্রের খবর, মাস দু’য়েক আগে ফেসবুকের মাধ্যমে এক যুবকের সাথে আলাপ হয় আনন্দপুরের বাসিন্দা ওই মহিলার। নিজেকে লন্ডনের বাসিন্দা বলে পরিচয় দিয়েছিল ওই যুবক। বেশ কিছুদিন আলাপের পর ভারতে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করে ওই যুবক। ওই মহিলাকে সে জানায়, সে লন্ডন থেকে দুবাই হয়ে আসবে ভারতে। সেই কারণে কাস্টমস্ ক্লিয়ারেন্স ও অন্যান্য কারণে তার কিছু টাকা প্রয়োজন। যুবকের কথা মতো কাস্টমস্ থেকে অন্য এক মহিলার ফোনও আসে ওই মহিলার কাছে। ওই যুবক এও জানায়, ভারতে এসেই সে অনলাইনের মাধ্যমে সে ওই মহিলার টাকা ফেরত দিয়ে দেবে। একই সঙ্গে কিছু উপহারও দেবে ওই মহিলাকে। এরপর ওই যুবকের কথায় বিন্দুমাত্র সন্দেহ হয়নি ওই মহিলার। তিনি ওই যুবকের কথা মতো তিন দফায় প্রায় ৭ লক্ষ টাকা তাঁর বলে দেওয়া নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে দেন। কিন্তু কিছুদিন পর ফের নতুন কারণ দেখিয়ে সাড়ে চার লক্ষ টাকা দাবি করে ওই যুবক।
বারবার এ ভাবে টাকা চাওয়ায় সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে মহিলার মনে। তিনি দিল্লিতে তাঁর ভাইকে ফোনে পুরো ঘটনাটি জানান। মহিলার ভাই দিল্লি পুলিশে বিষয়টি জানান। একই সঙ্গে ১১ এপ্রিল আনন্দপুর থানাতেও অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। পরে লালবাজারের সাইবার ক্রাইম শাখা বিষয়টি তদন্তভার হাতে তুলে নেয়।
দিল্লি পুলিশের মাধ্যমে ঘটনায় যুক্ত অভিযুক্তদের খোঁজ পেয়ে দিল্লি যায় কলকাতা পুলিশের একটি দল। এর পর ১৯ এপ্রিল কলকাতা ও দিল্লি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে দিল্লির মেহেরুলি থেকে লিউস উইলিয়ামস ওরফে ডেভি়ড চিমুন্না নামে এক নাইজেরীয়কে গ্রেফতার করে। তার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় একটি ল্যাপটপ, ৯টি এটিএম কার্ড, ৩টি পেন-ড্রাইড, ২টি ইউএসবি ডেটা-কার্ড, ১৩টি মোবাইল, তিনটি পাসপোর্ট-সহ দু’টি জাল ভিসা। একই দিনে দিল্লির খানপুর থেকে ডেভিডের বান্ধবী নিকিতা ওরফে সেয়ানি কিকন নামে এক মহিলাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, এই নিকিতা ওরফে সেয়ানিই ভুয়ো কাস্টমস্ অফিসার সেজে ফোন করেছিল ওই মহিলাকে।
এরপর কলকাতা পুলিশ ওই দুই প্রতারককে ট্রানজিট রিমান্ডের মাধ্যমে কলকাতা নিয়ে আসে। আলিপুর কোর্টে হাজির করানোর পর ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া জিনিসপত্র পরীক্ষা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে অভিযুক্তদের জেরা করে আরও কেউ এই চক্রের সঙ্গে জড়িত কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy