গঙ্গা স্নান করে পুণ্য অর্জন করতে যাচ্ছিলেন একই গ্রামের বেশ কয়েকটি পরিবার। মাঝ পথেই দুর্ঘটনা। তিনটি বাসের রেষারেষিতে নয়ানজুলিতে বাস উল্টে মৃত্যু হল দুই শিশু-সহ ১৩জন যাত্রীর। আহতের সংখ্যা ৩৯। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকালে বর্ধমানের নাদনঘাট রুটের মির্জাপুরের কাছে ঘোষপাড়ায়। পুলিশ সূত্রের খবর, দুর্ঘটনায় গুরুতর আহতদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।
মৃতদের নাম কমল দাস (৪৫), সনত্ দাস (২২), আকাশ দাস (১০), উদয় কারক (৫৫) ও হৃদয় কারক (৪৫), রিন্টু দাস (৩২), কেষ্ট চক্রবর্তী (৫০), মদন পরামানিক (৪৭), শুক্লা চক্রবর্তী (১২), সনত্ চক্রবর্তী (৭৪), উত্তম মালিক (৪৫), তন্ময় দাস (২২), লক্ষ্মীনারায়ণ মালিক (৫৫)।
পুলিশ জানিয়েছে, খণ্ডঘোষের খুদকুড়ি গ্রাম থেকে গঙ্গাস্নানে যাচ্ছিল তিনটি বাস। প্রতি বছরই গাজনের আগে ওই গ্রামের মানুষদের গঙ্গা স্নান করার রীতি রয়েছে। সেই মতো বাসে করে এ দিন সকালে তাঁরা গ্রাম থেকে রওনা দেন। রাস্তায় ওই তিনটি বাসের মধ্যে রেষারেষি চলতে থাকে। রেষারেষির জেরে শেষের বাসটি পিছিয়ে পড়ে। প্রথম দুটি বাসকে ধরতে সেই বাসের চালক গতি বাড়িয়ে দেন। প্রচণ্ড গতিতে ঘোষপাড়ার কাছে ওই বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ঘটনাস্থলে রাস্তায় একটি বাঁক ছিল। সে কারণেই এই দুর্ঘটনা বলে জানা গিয়েছে। বাসের ছাদে ও ভেতরে থাকা মানুষজন চাপা পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় কয়েক জনের। বাকিদের মৃত্যু হয় হাসপাতালে।
দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক বাসযাত্রী পরিমল সেন বলেন, “বাসটা এত তীব্র গতিতে যাচ্ছিল যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। অবস্থা দেখে আমাদের মনে হয়েছে চালক মাদকাসক্ত হয়ে বাস চালাচ্ছিল। ”
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দল। বাসের ভিতর থেকে আহত যাত্রীদের একে একে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলেই ১১জন যাত্রীর মৃত্যু হয়। বাকিদের উদ্ধারের পর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুমড়ে-মুচড়ে উল্টে যাওয়া বাসটিকে ক্রেন দিয়ে সোজা করা হয়। তবে বাসের চালক পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে।
জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “আহতদের জরুরি ভত্তিতে চিকিত্সা শুরু হয়েছে। যাঁরা গুরুতর আহত তাঁদের কলকাতার এসএসকেএমে পাঠানো হয়েছে। সমস্ত চিকিত্সার খরচ জেলা প্রশাসন বহন করবে।” ঘটনাস্থলে যান রাজ্যের ক্ষুদ্রশিল্প ও প্রাণী সম্পদ বিকাশ মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ও বিধানসভায় পরিষদীয় সচিব উজ্জ্বল প্রামাণিক। ছুটে আসেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য অমল হালদার ও খণ্ডঘোষের সিপিএম নেতা মহফুজ রহমান। হাসপাতালে দাঁড়িয়ে স্বপনবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মৃতদের পরিবার পিছু দু’লক্ষ টাকার অনুদান ঘোষণা করেছেন। আহতদের চিকিত্সা যাতে বিনামূল্যে করা হয় তারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy