কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। —ফাইল চিত্র ।
পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হলে মতুয়াদের ঠাকুরবাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হবে! ঠাকুরবাড়ির সব সদস্যকেও মেরে ফেলা হবে। অভিযোগ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে এই মর্মেই হুমকি চিঠি পাঠিয়েছে জঙ্গি সংগঠন ‘লস্কর-ই-তইবা’! অন্তত তেমনটাই লেখা সেই চিঠিতে। সোমবার দুপুর ২টো নাগাদ ওই চিঠি ডাকমাধ্যমে তাঁকে পাঠানো হয়েছে বলে শান্তনু দাবি করেছেন। এই নিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে আক্রমণও করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। যদিও তৃণমূলের পাল্টা দাবি, লোকসভার আগে ‘সিমপ্যাথি ভোট’ পেতে মিথ্যা বলছেন শান্তনু।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে সক্রিয় থাকা জঙ্গি সংগঠনের নাম করে যে চিঠিটি শান্তনুকে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ, সেটি লেখা হয়েছে পরিষ্কার বাংলা ভাষায়। ছাপা বাংলা হরফে সেই চিঠিতে লেখা, ‘‘শান্তনুবাবু আশা করি ভাল আছেন। আপনাকে জানাচ্ছি যে, পশ্চিমবঙ্গে যদি এনআরসি হয় এবং এনআরসি-র কারণে মুসলমানদের উপর কোনও অত্যাচার হয় তা হলে পশ্চিমবঙ্গ তথা সারা ভারত জ্বলবে। আপনাদের ঠাকুরবাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হবে। ঠাকুরবাড়ির কাউকে বাঁচতে দেওয়া হবে না। লস্কর-ই-তইবার নাম শুনেছেন তো। আমরা লস্কর-ই-তইবার সদস্য।’’
জঙ্গি সংগঠনের নাম করে তাঁকে পাঠানো সেই হুমকি চিঠিটি ইতিমধ্যে প্রকাশ্যে এনেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিজেই। সেই চিঠি অনুযায়ী, উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার হাদিপুর গ্রাম থেকে হুমকি চিঠিটি পাঠানো হয়েছে। পাঠিয়েছেন নজরুল ইসলাম সাহেব আলি এবং ফজের আলি নামের দুই ব্যক্তি।
জঙ্গি সংগঠনের তরফে হুমকি চিঠি পাঠানো প্রসঙ্গে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের দিকে তোপ দেগেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা লোকসভার বিদায়ী সাংসদ। শান্তনু বলেন, ‘‘আমি এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং সরকারকে জানাতে চাই যে, সোমবার দুপুর ২টো ১০ মিনিটে আমাকে হুমকি চিঠি পাঠিয়েছে জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবা। সেখানে লেখা হয়েছে, সিএএ-এনআরসি নিয়ে আমি বাড়বাড়ি কিছু করলে ঠাকুরবাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হবে। আমার পরিবারকেও শেষ করে দেওয়া হবে। ওই চিঠিতে লেখা যে সেটি দেগঙ্গার হাদিপুর গ্রাম থেকে পাঠানো হয়েছে। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে চাই, একটি জঙ্গি সংগঠন রাজ্যের এক জন বিদায়ী সাংসদ এবং মন্ত্রীকে এ ভাবে হুমকি দিতে পারে না। বাংলায় অগণতান্ত্রিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ রকম জঙ্গি গোষ্ঠী তৃণমূলের মদতে পুষ্ট হচ্ছে এবং আমাদের হুমকি দিচ্ছে। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানাব। আমি এর বিচার চাই। এই ঘটনা বাংলার জন্য অত্যন্ত লজ্জার।’’ হুমকি চিঠি নিয়ে তিনি মামলা করবেন বলেও শান্তনু জানিয়েছেন।
অন্য দিকে, শান্তনুর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘আমার মনে হয় শান্তনু নিজে তাঁর লোক দিয়ে এই চিঠি পাঠিয়েছেন। সিএএ প্রায় এক মাস হল চালু হয়েছে। এত দিন কিছু হয়নি। এখন লোকসভার আগে মানুষের সহানুভূতি ভোট পাওয়ার জন্য এই চিঠি নিজের লোক দিয়েই পাঠিয়েছেন তিনি। আমি মনে করি এই চিঠি নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। এই ধরনের হুমকি ঠাকুরবাড়িতে কোনও দিন আসেনি। দেগঙ্গা থেকে যদি কেউ এ চিঠি পাঠিয়ে থাকেন, তা হলে তার সঙ্গে শান্তনুর যোগ রয়েছে। এর আগেও শান্তনু এই ধরনের মিথ্যা কথা বলেছেন। এটা সম্পূর্ণ নাটক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy