প্রতীকী ছবি।
নিয়মবিধি ভেঙে নিজের নির্বাচন কেন্দ্রের বাইরে মহিলাদের ভোটের কাজ দেওয়ায় আপত্তি-অভিযোগের পালা চলছিল। এ বার ভোট-তরজায় জায়গা করে নিল নির্বাচনের
কাজে স্ত্রী-পুরুষের ‘যৌথ ডিউটি বণ্টন’! যা ভোটকর্মীদের কারও কারও কাছে ‘অস্বস্তিকর’। বিষয়টিকে ‘নিতান্তই অবাঞ্ছিত’ বলে অভিহিত করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। একই ভোটকেন্দ্রে পুরুষদের সঙ্গে কাজের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে মহিলাদের তরফে ডিউটি বদলের আবেদনও জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনে।
নানা স্তরের নির্বাচনের কাজে পুরুষের পাশাপাশি মহিলাদের বিভিন্ন কেন্দ্রে ডিউটি দেওয়ার রেওয়াজ নতুন নয়। দেশের বিভিন্ন কোনায় সম্পূর্ণ মহিলা পরিচালিত বুথের নজিরও রয়েছে। নির্বাচনে এ-যাবৎ এটাই ছিল চেনা রীতি। কিন্তু এ বার প্রশ্ন উঠছে বিধানসভা নির্বাচনে একই বুথে মহিলা ও পুরুষদের একসঙ্গে ভোটের ডিউটি পড়ায়। সে-ক্ষেত্রে মহিলাদের রাত্রিবাস এবং স্নান ও শৌচাগারের আলাদা ব্যবস্থা না-থাকলে ব্যাপারটা খুবই অস্বস্তিকর হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন ভোটকর্মীদের অনেকে।
সাধারণ ভাবে নির্বাচনের আগের দিনেই ভোটকর্মী ও আধিকারিকেরা ভোটকেন্দ্রে পৌঁছে যান। ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার থেকে ভোটের বিবিধ সরঞ্জাম নিয়ে তাঁরা ২৪ ঘণ্টা আগে নির্দিষ্ট বুথে পৌঁছে পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখে নেন। রাত্রিবাস করতে হয় বুথে কিংবা তার আশপাশের কোনও সরকারি আস্তানায়। বেশ কয়েকটি নির্বাচনে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন এক ভোটকর্মীর কথায়, ‘‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেই রাত্রিবাস যে খুব সুখকর হয়, এমন নয়। স্নান ও শৌচকর্মের ব্যবস্থাও খুব স্বস্তিদায়ক হয় না। এই ধরনের পরিস্থিতিতে একসঙ্গে
পুরুষ ও মহিলা কর্মীদের থাকা সত্যিই অসুবিধাজনক।’’ অন্য এক মহিলা কর্মী বলেন, ‘‘ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে এই ধরনের নানান অসুবিধা থাকায় মহিলাদের সঙ্গে একই বুথে এত দিন পুরুষদের ডিউটি দেওয়া হত না। এ বার দেওয়া হচ্ছে। কী ভাবে তা সামাল দেওয়া হবে, বুঝতে পারছি না।’’
পুরুষদের সঙ্গে একই বুথে কাজ করার ক্ষেত্রে নিজেদের অস্বস্তির কথা জানিয়ে বেশ কয়েক জন মহিলা ভোটকর্মী ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের কাছে ডিউটি বদলের আবেদন জানিয়েছেন। কয়েকটি শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকেও এই বিষয়ে আপত্তি জানানো হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ জানাচ্ছে, এ ব্যাপারে বেশ কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছে তারা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার দু’টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে মহিলা প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গে রয়েছেন তিন পুরুষ আধিকারিক। আবার একটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে এক জন পুরুষ প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গে যে-তিন আধিকারিক রয়েছেন, তাঁরা মহিলা এবং সকলেই পেশায় শিক্ষিকা। ওই শিক্ষক সংগঠনের নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পুরুষ ও মহিলারা আলাদা ভাবে কাজ করবেন, এমন দাবি আমরা করছি না। কিন্তু ভোটের আগের রাতে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে থাকতে হয়। মহিলারা তাই অস্বস্তি বোধ করছেন। জেলা নির্বাচন আধিকারিককে চিঠি লিখে আমাদের আপত্তির কথা জানিয়েছি।’’
কেন এমন হল? মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের (সিইও) দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এমনটা হওয়ার কথা নয়। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy