ঠাকুরনগরের সভায় তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র
স্ত্রী রুজিরা নারুলাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস দেওয়ার পর টুইটারে লিখেছিলেন, ‘মাথা নত করব না’। এ বার প্রকাশ্য জনসভায় আরও কড়া ভাষায় বিজেপি এবং কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআই লেলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে অভিষেক বললেন, মেরুদণ্ড বিক্রি করব না। নাগরিকত্ব থেকে অনুপ্রবেশ, স্টেডিয়ামের নামকরণের মতো ইস্যুতেও নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহকে আক্রমণ করেছেন অভিষেক।
স্ত্রী রুজিরা এবং শ্যালিকা মেনকা গম্ভীরকে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের পর এই প্রথম প্রকাশ্য জনসভায় যোগ দিলেন অভিষেক। মতুয়াদের খাসতালুক উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরের সভায় এই ইস্যুতে পাল্টা অমিত শাহ-নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে অভিষেকের তোপ, ‘‘চমকানি ধমকানি তো ওদের আছেই। এই যে, সিবিআই কে লেলিয়ে দিয়েছে। ভাবছে, সিবিআইকে লেলিয়ে দিয়ে অভিষেককে চমকে দেব। আমি ৩ মাস আগে যা বলেছি, আজকেও তাই বলছি। আপনি সিবিআই, ইডি, আয়কর, এসএফআইও, যা পারবেন লাগিয়ে দিন। আপনার জেদের দ্বিগুণ জেদ আমার।’’
ঘটনাচক্রে কয়েক দিন আগে এই ঠাকুরনগরেই সভা করে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সভায় সিএএ নিয়ে শাহ বলেছিলেন, করোনার টিকাকরণ শেষ হলেই সিএএ চালু হবে। মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন শাহ। কিন্তু অভিষেকের দাবি, পুরোটাই ভাঁওতা। ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদের কথায়, ‘‘আপনাদের ভোটার কার্ড আছে। আর বলছে, মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেবে। আরে কে ভাই তুমি, নাগরিকত্ব দেবে? তোমার নিজের বাবার, ঠাকুরদাদার কাগজ নিয়ে পরের বার বাংলায় দেখাবে, তার পর মতুয়াদের কাছে নথি চাইবে।’’
সভামঞ্চ থেকেই অভিষেকের হুঙ্কার, ‘‘যত দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় জীবিত আছেন, আপনাদের কেশাগ্র কেউ স্পর্শ করতে পারবে না।’’ অসম এনআরসির প্রসঙ্গ টেনে তাঁর বক্তব্য, ‘‘অসমে দেখেছেন তো কী হয়েছে। ১৯ লক্ষের মধ্যে ১২ লক্ষ হিন্দু বাঙালি এনআরসি করে তাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী রামলীলা ময়দানে গিয়ে বলছেন, এনআরসি নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি। আর অমিত শাহ বাংলায় এসে বলছেন, সিএএ হবে। তা হলে দেখুন, কে ভাঁওতা দিচ্ছে?’’
পশ্চিমবঙ্গে এলেই অনুপ্রবেশকারীদের তাড়ানোর কথা বলেন শাহ। ঠাকুরনগরের সভাতেও বলেছিলেন। অভিষেকের পাল্টা অভিযোগ, অরুণাচল, লাদাখে সীমান্ত রক্ষায় ব্যর্থ, অনুপ্রবেশ আটকাতে পারেননি। বলেন, ‘‘অরুণাচলে কী হয়েছে? আমরা চাই, ভারতবর্ষের ভূখণ্ড যে দেশ দখল করার দুঃসাহস দেখাবে, তাকে কড়ায় গণ্ডায়, ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে জবাব দেওয়া হোক। অরুণাচলে গ্রামের পর গ্রাম দখল করেছে। গালওয়ানে এলাকা দখল করেছে। আর অমিত শাহ এখানে এসে বলছেন, অনুপ্রবেশকারীদের তাড়াবেন। তাড়াতেই যদি হয়, অরুণাচলে যান। লাদাখে যান।’’
স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন নিয়ে অভিষেকের কটাক্ষ, ‘‘বুধবার গুজরাতের মোতেরায় একটা স্টেডিয়াম উদ্বোধন করেছেন। কোনও দিন শুনেছেন, একটা লোক জীবীত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তাঁর নামে রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করাচ্ছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy