সুনীল গুপ্ত এবং নসীম জৈদী। ছবি: শৌভিক দে।
মাত্র দু’দফা ভোট হয়েছে। এখনও পাঁচ দফা বাকি। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার কলকাতায় এসে রাজ্যের নির্বাচনী অফিসারের কাছে কৈফিয়ত চাইলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। নসীম জৈদীর প্রশ্ন, কেন সুনীল গুপ্তের বিরুদ্ধেই সব বিরোধী দল অভিযোগ তুলছে?
সূত্রের খবর, বৈঠকে একাধিক জেলার পুলিশ সুপার ও জেলাশাসককে ভোট পরিচালনা নিয়ে কিছুটা সতর্ক করেছেন। কিন্তু রাজ্যের নির্বাচনী অফিসার (সিইও) সুনীল গুপ্তই ছিলেন জৈদীর আক্রমণের মূল লক্ষ্য। তাঁর কাজে কমিশন যে মোটেই সন্তুষ্ট নয়, সিইওকে সে কথাই ঘুরে ফিরে বুঝিয়েছেন জৈদী।
শুধু রাজনৈতিক দলগুলিই নয়, এ দিন সিইও-র বিরুদ্ধে কমিশনের ফুল বেঞ্চের কাছে অসহযোগিতার অভিযোগ তোলেন সাংবাদিকেরাও। তাঁদের দাবি, ভোট পরিচালনা সংক্রান্ত কোনও তথ্য সিইও-র অফিস থেকে পাওয়া যায় না। তিনি নিজে সাংবাদিকদের ফোন ধরেন না। নির্বাচন কমিশন জনস্বার্থে যে সব খবর জানাতে চায়, তা-ও কলকাতার অফিস থেকে জানা যায় না। সাংবাদিকেরা জৈদীর কাছে জানতে চান, ভোট পরিচালনায় তাঁর ‘অদক্ষতা’র জন্য কি সিইওকে সরিয়ে দেওয়া হবে? মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘‘কমিশন এখনই তেমন কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না। তবে সংবাদমাধ্যম যাতে যথা সময়ে সমস্ত খবর পায়, তা নিশ্চিত করতে সিইওকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ জৈদীর মতে, সংবাদমাধ্যমই কমিশনের সবচেয়ে ভাল বন্ধু। তাই ভোটের সব খবর তাদের পাওয়া উচিত। এ দিন রাজ্য পুলিশের ডিজিকেও সতর্ক করেছে কমিশন। সূত্রের খবর, বৈঠকে ভোট-পরবর্তী হিংসা ও সংঘর্ষের প্রসঙ্গ উঠলে দেশের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ২১ নম্বর ধারার কথা উল্লেখ করে রাজ্য পুলিশের ডিজি জিএমপি রেড্ডির উদ্দেশে জৈদী বলেন, ‘‘মনে রাখবেন ভোট যত দিন না মিটছে, তত দিন আপনি কমিশনে ডেপুটেশনে কাজ করছেন।’’
জৈদী এ কথা শুধু রুদ্ধদ্বার বৈঠকেই বলেছেন তা নয়, সাংবাদিক বৈঠকেও ওই প্রসঙ্গ নিজে থেকেই টেনে এনেছেন। বলেছেন, ‘‘ডিজি যেহেতু এখন কমিশনের অধীনে কাজ করছেন, সে জন্য কমিশনের নির্দেশই তাঁকে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে পালন করতে হবে। এবং সেই কারণে ভোট- পরবর্তী প্রতিটি সংঘর্যের ঘটনার তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।’’ জৈদী জানিয়েছেন, ডিজি কী পদক্ষেপ করলেন তা নিয়ম করে জানাতে হবে কমিশনকে।
জৈদী জানান, এ দিন ভোটার ও বিরোধী দলগুলিকে ভয় দেখানো এবং সংঘর্ষের অভিযোগই সবচেয়ে বেশি পেয়েছে কমিশন। একই ভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর অনুপস্থিতি এবং পুলিশ ও সরকারি কর্মীদের পক্ষপাতেরও নালিশ জানিয়েছেন রাজনৈতিক নেতারা। ফরওয়ার্ড ব্লক, সিপিআই এবং সমাজবাদী পার্টি সরাসরি সিইও-র অপসারণ দাবি করেছে। কংগ্রেস, বিজেপি এবং সিপিএম অবশ্য তা করেনি। তবে সুনীলবাবুর কাজ নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছে। কবি শঙ্খ ঘোষের নেতৃত্বে ‘সেভ ডেমোক্রেসি’ ফোরামের সদস্যেরাও এ দিন সিইও-র অপসারণ চেয়েছেন।
সিইও সম্পর্কে তৃণমূল বাদে সব ক’টি রাজনৈতিক দলের মত জানার পরে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বলেছেন,‘‘সিইও তাঁর সাধ্যমতো কাজ করবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy