Advertisement
১৮ মে ২০২৪

নানুরে ফের পা সিপিএমের, মিছিলের পরেই খুলল অফিস

দু’দিন আগে এক সময়ের খাসতালুক, নানুরে লম্বা মিছিল করে শাসক দলের কপালে ভাঁজ ফেলে দিয়েছিল সিপিএম। সেই নিয়ে জেলায় চর্চা চলছে এখনও। এরই মধ্যেই ‘চাঙ্গা’ সিপিএম সেই নানুরেই খুলে ফেলল আরও একটি দলীয় কার্যালয়।

নানুরের জলুন্দিতে দলীয় কার্যালয়ের সামে পতাকা উত্তোলন সিপিএমের। (ডান দিকে) বালিগুনি গ্রামে নানুরের সিপিএম প্রার্থী শ্যামলী প্রধানের সমর্থনে সভায়। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র।

নানুরের জলুন্দিতে দলীয় কার্যালয়ের সামে পতাকা উত্তোলন সিপিএমের। (ডান দিকে) বালিগুনি গ্রামে নানুরের সিপিএম প্রার্থী শ্যামলী প্রধানের সমর্থনে সভায়। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নানুর শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৬ ০১:৫১
Share: Save:

দু’দিন আগে এক সময়ের খাসতালুক, নানুরে লম্বা মিছিল করে শাসক দলের কপালে ভাঁজ ফেলে দিয়েছিল সিপিএম। সেই নিয়ে জেলায় চর্চা চলছে এখনও। এরই মধ্যেই ‘চাঙ্গা’ সিপিএম সেই নানুরেই খুলে ফেলল আরও একটি দলীয় কার্যালয়।

গত বিধানসভা নির্বাচনের পরেপরেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল নানুরের জলুন্দি অঞ্চল কমিটির কার্যালয়টি। শুক্রবার সিপিএম প্রার্থী-সহ নেতৃত্বের উপস্থিতিতে তা খোলা হয়। দিন কয়েক আগেই এই মহল্লার খুজুটিপাড়ার দলীয় কার্যালয় খুলেছিল সিপিএম। ভোটের আগে এ ভাবেই একের পর এক ‘সফল’ কর্মসূচি দেখে রাজনীতিবিদদের অনেকেই বলছেন, ‘‘ফল যাই হোক না কেন, ক্রমশ লড়াইয়ে ফিরছে সিপিএম।’’

প্রার্থীপদ ঘোষণার পরে নওয়ানগর-কড্ডা পঞ্চায়েতের খুজুটিপাড়া লোকাল কমিটির কার্যালয়ের ভগ্নস্তুপ থেকে প্রচার শুরু করেছিলেন সিপিএম প্রার্থী শ্যামলী প্রধান। ১৯৭০ সালে নির্মিত ওই কার্যালয়টি ২০১১ সালের ডিসেম্বরে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের তির ছিল তৃণমূলের দিকে। বর্তমানে ওই কার্যালয়টি পুনর্নিমাণের কাজ চলছে। ভোটের আগে সেটি চালু হবে বলে সিপিএম নেতৃত্বের দাবি। এ দিনের কর্মসূচিতে ছিলেন শ্যামলী প্রধান ছাড়াও ছিলেন দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আনন্দ ভট্টাচার্য।

নানুরের বর্তমান রাজনৈতিক আবহে সিপিএমের মিছিলে ভিড় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একের পর এক সিপিএমের কার্যালয় খোলা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। কারণ, গত পঞ্চায়েত এবং লোকসভা নির্বাচনের মুখে ওই সব কার্যালয় খোলার সাহস পায়নি সিপিএম। আবার কোথাও কার্যালয় খোলা হলেও সেখানে যাওয়ার সাহস হয়নি কর্মী-সমর্থকদের। তা ছাড়া ওই সব নির্বাচনের আগে মিছিলে লাল পতাকা বইবার লোকেরও যথেষ্ট সংখ্যায় দেখা মেলেনি।

তা হলে কি এমন ঘটল এ বারের নির্বাচনে?

এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আনন্দ ভট্টাচার্যের মন্তব্য, ‘‘এত দিন আমরা তৃণমূলের সন্ত্রাসের কারণে কার্যালয় খুলতে পারিনি। খুললেও অনেকে ওই সব কার্যালয়ে মিটিং-মিছিলে আসতে সাহস পাননি। এখন সেই ভয় ভাঙতে শুরু করেছে।’’

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন অন্য কথা। তাঁদের মতে, গত পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএম দূরের কথা, এলাকার দাপুটে নেতা কাজল শেখ এবং বিদায়ী বিধায়ক গদাধর হাজরার দাপটে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের অনুগামীদেরই কোনঠাসা হয়ে থাকতে হয়েছিল। লোকসভা নির্বাচনের আগে গদাধরের সঙ্গে কাজলের রাজনৈতিক কর্তৃত্ব কায়েমকে কেন্দ্র করে সংঘাত হলেও এলাকার রাশ সিপিএমের হাতে চলে যাক তা চাননি কেউ। কিন্তু কাজলের আপত্তি সত্ত্বেও এ বারও গদাধরকে ফের প্রার্থী করেছে দল। আর কাজল এবং তার অনুগামীদের ব্রাত্য করে ভোট করছেন গদাধর। তাই কাজলও তার গুরুত্ব বোঝাতে হাত আলগা করে দিয়েছেন। তৃণমূলেরই এক নেতার কথায়, ‘‘সেই হাত গলে জল গড়াচ্ছে সিপিএমের অনুকূল্যে!’’

এ প্রসঙ্গে কাজলের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে তাঁর এক অনুগামী বলেন, ‘‘দাদা কোন কিছুতেই নেই। চোখের সামনে সিপিএমের বাড়-বাড়ন্ত দেখতে পারবেন না বলেই বাইরে চলে গিয়েছেন। তা ছাড়া দল তো তাঁকে ভোটের কোনও দায়িত্ব দেয়নি।’’ গদাধরের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দলে একা কেউ সব নয়। মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে। তার প্রমাণ মিলবে ফল ঘোষণার পরে।’’ বিদায়ী বিধায়কের মন্তব্যের সঙ্গে একমত নন অনেকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016 CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE