Advertisement
০৫ মে ২০২৪

শুধু একটি কাট, ছাড় মিলল হাইকোর্টে

৮৯টি কাট কেন্দ্রীয় সেন্সর বোর্ড প্রধানের ইচ্ছেয় কালই কমে হয়েছিল ১৩। আর আজ বম্বে হাইকোর্টের নির্দেশে তা কমে দাঁড়াল মাত্র একটিতে। সেন্সর বোর্ডের দাবি উড়িয়ে ‘উড়তা পঞ্জাব’ ছবিতে বম্বে হাইকোর্ট কেবল একটি কাট-এ সায় দিয়েছে।

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৬ ০৯:১৮
Share: Save:

৮৯টি কাট কেন্দ্রীয় সেন্সর বোর্ড প্রধানের ইচ্ছেয় কালই কমে হয়েছিল ১৩। আর আজ বম্বে হাইকোর্টের নির্দেশে তা কমে দাঁড়াল মাত্র একটিতে।

সেন্সর বোর্ডের দাবি উড়িয়ে ‘উড়তা পঞ্জাব’ ছবিতে বম্বে হাইকোর্ট কেবল একটি কাট-এ সায় দিয়েছে। আর এই নির্দেশের পরে ছবি মুক্তির পথে বাধা অনেকটাই দূর হল বলা চলে। গত কাল সেন্সর বোর্ডের প্রধান পহলাজ নিহালনি ছবিটিকে ১৩টি কাট-সহ ‘এ’ তকমা সমেত ছাড় দিয়ে বলেছিলেন, বাকিটা প্রযোজক যেন আদালতে বুঝে নেন। এ বার বম্বে হাইকোর্ট জানিয়ে দিল, ছবিতে মূত্রত্যাগের একটি দৃশ্য বাদ দিয়ে কিছু বিজ্ঞপ্তি-সহ সেটি মুক্তিতে কোনও অসুবিধে নেই।

শুধু এই নির্দেশ দেওয়া নয়, এ দিনও সেন্সর বোর্ডের যথেচ্ছ সমালোচনা করেছে হাইকোর্ট। বলেছে, ‘ঠাকুরমার’ মতো আচরণ করবেন না। সময়ের সঙ্গে নিজেদের পাল্টান। বিচারপতি এস সি ধর্মাধিকারী এবং বিচারপতি শালিনী ফাঁসালকরের ডিভিশন বেঞ্চ সেন্সর বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ‘উড়তা পঞ্জাব’কে শংসাপত্র দিতে যাতে নির্মাতাদের ১৭ জুন ছবি মুক্তির ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধে না হয়।

তবে বম্বে হাইকোর্ট ছাড় দিলেও পঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্টে আজ ‘উড়তা পঞ্জাব’-এর বিরুদ্ধে দু’টি আবেদন জমা পড়েছে। কাল বিকেলে সেন্সর বোর্ডের থিয়েটারে আদালত-বান্ধব আইনজীবী সঞ্জয় কাঁটাওয়ালা এবং আবেদনকারীদের প্রতিনিধি ওই ছবি দেখবেন। ১৬ জুন তাঁরা রিপোর্ট জমা দেবেন। যা দেখে ১৭ জুন ছবি মুক্তি পাবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেবে দুই হাইকোর্ট।

কেন্দ্রীয় সেন্সর বোর্ডের আইনজীবী অদ্বৈত সেথনা চেয়েছিলেন, তারা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার আগে পর্যন্ত বম্বে হাইকোর্টের এই নির্দেশ স্থগিত রাখা হোক। কিন্তু হাইকোর্ট তা মানেনি। উল্টে বোর্ডকে এ দিনও এক হাত নিয়ে বলেছে, ‘‘ঠাকুরমার মতো আচরণ না করে নিজেদের পাল্টান। শিল্পকলার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত স্পর্শকাতর হবেন না। সৃষ্টিশীল মানুষকে হঠাৎ করে থামিয়ে দেওয়া যায় না। তাতে তাঁরা নিরুৎসাহ হয়ে পড়বেন। সৃষ্টিই তাতে মার খাবে। এখনকার ছবি নির্মাতারা স্পষ্ট ভাষায় নৃশংস বাস্তবের কথা বলেন। তার জন্য তাঁদের কড়া চোখে দেখার কোনও প্রয়োজন নেই।’’

বিচারপতি ধর্মাধিকারী বলেছেন, ‘‘বোর্ডের যদি ছবিতে কাটছাঁট বা কিছু বাদ দেওয়ার ক্ষমতা থেকেও থাকে, তা সুপ্রিম কোর্ট বা দেশের সংবিধানের আওতার বাইরে নয়।’’ একই সঙ্গে কোর্ট জানাচ্ছে: বোর্ড যদি মনে করে, কোনও ছবি দেশের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, নিরাপত্তা বা বিদেশের সঙ্গে সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে, তা হলে তাকে শংসাপত্র দিতে গিয়ে কাটছাঁট, পরিবর্তন বা কিছু জিনিস বাদ দিতে পারে। বিচারপতিরা ‘উড়তা পঞ্জাব’-এর পুরো চিত্রনাট্য পড়ে দেখেছেন। তাতে তাঁদের মনে হয়নি, এই ছবি দেশের কোনও ক্ষতি করবে। আর এতে পঞ্জাবকে নেতিবাচক ভাবে দেখানো হয়েছে বলেও তাঁরা মনে করছেন না। বিচারপতিরা বলেছেন, ‘‘এই ছবি পরিণতমনস্কদের জন্য। যদি নির্মাতা মনে করেন, এ ভাবেই ছবিটা দেখাবেন, তা হলে কারও কিছু বলার নেই।’’ তাঁদের বক্তব্য, ছবিটাকে বিচ্ছিন্ন ভাবে দেখবেন না। একটি চরিত্র, দৃশ্য বা গান দুম করে বাদ দেওয়া যায় না।

‘উড়তা পঞ্জাব’ থেকে পাকিস্তানের উল্লেখও বাদ দিতে হবে বলে এ দিন জানিয়েছে হাইকোর্ট। আর সঙ্গে থাকবে বিজ্ঞপ্তি: ‘ছবির সঙ্গে জড়িত কোনও চরিত্র বা নির্মাতাদের কেউ অশালীন শব্দ ব্যবহার বা মাদক সেবন সমর্থন করেন না বা তাতে উৎসাহ দেন না। শুধু বাস্তব চিত্র তুলে ধরতেই এর ব্যবহার করা হয়েছে।’ তা ছাড়া, কোর্টের সাফ কথা, ইলেকশন, এমপি, এমএলএ, পার্লামেন্ট পার্টি ওয়ার্কার এবং পঞ্জাব— এগুলো সাধারণ শব্দ। যা সেন্সর বোর্ডের কোপে পড়েছিল! কোনও বিশেষ ব্যক্তি বা দলকে ভেবে ব্যবহার করা হয়নি। বেশ কিছু রাজ্যে সামনেই ভোট। পঞ্জাবেও সামনের বছর ভোট। তবে সে কথা মাথায় রেখে বা রাজনৈতিক প্রচারের জন্য এ ছবি বানানো হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE