Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Colon Cancer

Colon Cancer: কোলন ক্যানসারের কোন উপসর্গ বেশির ভাগ মানুষ কোষ্ঠকাঠিন্য বলে ভুল করেন

অনেকেই এ সব সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে চান না। নিজেরাই নানা ল্যাক্সেটিভ বা পারগেটিভ ব্যবহারে করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে চান।

প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে অত্যাধুনিক চিকিৎসার সাহায্যে মলদ্বার ও অন্ত্রের ক্যানসারকে জব্দ করা যায় সহজেই।

প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে অত্যাধুনিক চিকিৎসার সাহায্যে মলদ্বার ও অন্ত্রের ক্যানসারকে জব্দ করা যায় সহজেই। ছবি: সংগৃহীত

সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২২ ১৪:১৫
Share: Save:

প্রায় রোজই বাথরুমে অনেক বেশি সময় লাগে। এই নিয়ে রোজই হাসি-ঠাট্টা, কখনও বা অভিযোগ শুনতে হয়। এই অভিজ্ঞতা কম বেশি প্রায় সব বাড়িতেই আছে। এরই মধ্যে মাঝেমাঝে কমোডে বা প্যানে তাজা রক্ত দেখে আতঙ্ক হয়। কিন্তু অনেকেই এ সব সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে চান না। নিজেরাই নানা ল্যাক্সেটিভ বা পারগেটিভ ব্যবহারে করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে চান। অথচ মলের সঙ্গে রক্তপাত এবং মলত্যাগের অভ্যাসের পরিবর্তন কোলন ক্যানসারের উপসর্গ হতে পারে বলে সাবধান করলেন চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটের অধিকর্তা অঙ্কোসার্জন জয়ন্ত চক্রবর্তী।

আমাদের দেশের প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে গড়ে প্রায় ২২ % কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন। এই ব্যাপারে কলকাতা একেবারে সামনের সারিতে। কলকাতার প্রায় ২৮ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্কর কোষ্ঠকাঠিন্য আছে, দ্বিতীয় স্থানে চেন্নাই একশ জনে ২৬ জন। অ্যাবটের গাট হেলথ সার্ভে আটটি শহরের উপর সমীক্ষা চালিয়ে এই পরিসংখ্যান জানিয়েছে। কোষ্ঠকাঠিন্যের ফলে মলদ্বার চিরে গিয়ে রক্ত বেরোনো, পাইলস, ফিসচ্যুলা ও ফিশারের মতো অসুখের ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। একই রকম উপসর্গ দেখা যায় কোলোরেক্টাল ক্যানসারের ক্ষেত্রেও, বললেন জয়ন্ত চক্রবর্তী। ওয়ার্ল্ড ক্যানসার রিসার্চ ফান্ড ইন্টারন্যাশনালের সমীক্ষা অনুযায়ী ২০২০ সালে বিশ্বের ১.৯ মিলিয়ন মানুষ (প্রায় ২০ লক্ষ) কোলোরেক্টাল ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন। মূলত ষাটোর্ধ্বদের মধ্যে এই অসুখের ঝুঁকি বেশি দেখা গেলেও ইদানীং খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, বাড়তি ওজন, টাটকা খাবারের পরিবর্তে ক্যানড বা প্রক্রিয়াজাত খাবারদাবার খাওয়া ও অতিরিক্ত মানসিক চাপ অল্প বয়সে কোলোরেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। তবে প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে অত্যাধুনিক চিকিৎসার সাহায্যে মলদ্বার ও অন্ত্রের ক্যানসারকে জব্দ করা যায় সহজেই। প্রাথমিক উপসর্গ দেখা গেলেই ঘরোয়া টোটকার উপর ভরসা না করে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বললেন জয়ন্ত চক্রবর্তী।

বেশির ভাগ সময়েই সাধারণ পলিপ আকারে এই ক্যানসারের সূত্রপাত। ক্যানসার স্ক্রিনিং করলে চট করে অসুখটা ধরা পড়ে। যদি মাঝবয়সে মলত্যাগের অভ্যাস বদলে যায়, পর্যায়ক্রমে ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য শুরু হয়, তখন অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এই ক্যানসারের উপসর্গ হিসেবে অনেক সময় মলের সঙ্গে তাজা রক্ত বেরোতে পারে, বেশির ভাগ মানুষই যা পাইলস বলে ভুল করেন।

এ ছাড়া পেটে অস্বস্তি (ক্রনিক গ্যাস , খামচে ধরার মতো পেটে ব্যথা), হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, খিদের বোধ কমে যাওয়া, শারীরিক দুর্বলতা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যেতে পারে। দ্রুত সার্জারি, কেমোথেরাপি এবং রেডিয়েশন থেরাপির সাহায্যে অসুখের বিস্তার আটকে দেওয়া যায়। লিভার বা ফুসফুসে এই ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেশি। তাই কোলন ও মলদ্বারের ক্যানসারকে দ্রুত আটকে দেওয়া উচিত। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতির সাহায্যে সার্জারি করে ক্যানসারের বিস্তার থামিয়ে দেওয়া যায় বলে জানালেন জয়ন্ত।

লিভার বা ফুসফুসে এই ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেশি। তাই কোলন ও মলদ্বারের ক্যানসারকে দ্রুত আটকে দেওয়া উচিত।

লিভার বা ফুসফুসে এই ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেশি। তাই কোলন ও মলদ্বারের ক্যানসারকে দ্রুত আটকে দেওয়া উচিত।

রোজকার খাবারে পর্যাপ্ত টাটকা ফলমূল, শাকসব্জি, ভূষিসহ আটার রুটি, ওটস, মিলেট থাকা দরকার। প্রসেসড খাবার, ঝলসানো মাংস, রেডমিট কম খেলেই ভাল। কারণ এ সব খাবার ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। একই সঙ্গে নিয়মিত এক্সারসাইজ করে ওজন ঠিক রাখলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। জার্নাল অফ অ্যামেরিকান ক্যানসার অ্যাসোশিয়েশনের এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, শস্য দানা ও পর্যাপ্ত ফাইবার যুক্ত খাবার খেলে অসুখ আটকে দেওয়ার পাশাপাশি কোলোরেক্টাল ক্যানসারের রোগীদের বাঁচার মেয়াদ অনেক বেড়ে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Colon Cancer Constipation cancer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE