রুচি ফেরান সন্তানের।
কখনও ঠান্ডা, আবার হঠাৎ গরম। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনে বাচ্চাদের জ্বর, সর্দি-কাশি লেগেই আছে। একেই অধিকাংশ বাচ্চা খেতে চায় না, তার উপরে অসুস্থতার কারণে খাবারে অরুচি জন্মায়। কিন্তু খেতে না পারলে পুষ্টিহীন শরীর রোগের সঙ্গে লড়াই করার শক্তিও পায় না। তাই সন্তানের খাবারে নজর দিতে হবে।
বাচ্চার মুখের রুচি ফেরানোটা জরুরি। পুষ্টিবিদ সুবর্ণা রায়চৌধুরী বললেন, ‘দুই থেকে তিন বছরের বাচ্চার রোজ ১০৫০ ক্যালরি লাগে। আবার চার থেকে ছয় বছরের বাচ্চার রোজ ১২৫০ ক্যালরি প্রয়োজন। এই বয়সের বাচ্চার স্বাভাবিক ওজন ১৬ থেকে ২০ কেজি। আর তিন বছরের নীচে হলে বাচ্চার স্বাভাবিক ওজন ১২-১৪ কেজি। বাচ্চার ওজন এর চেয়ে কম হলে, পুষ্টিগুণের সঙ্গে এমন খাবার দিতে হবে, যা ওজনও বাড়াতে সাহায্য করবে। অর্ধেক ডিম, ২৫ গ্রাম মাছ ও ২০০ মিলিলিটার দুধ খেলেই দেড় থেকে তিন বছরের বাচ্চা প্রোটিন পেতে পারে। কিন্তু অসুখের পর-পরই মুখের রুচি ফেরাতে খাবারের তালিকায় পরিবর্তন আনতে হবে।”
কী পরিবর্তন আনতে হবে?
ডিম সিদ্ধ না দিয়ে এগ রোল বানিয়ে খাওয়াতে পারেন বাচ্চাকে (তিন বছরের বেশি বয়স হলে)।
রোগে ভুগলে মাছের প্রতি অনীহা জন্মায়, তাই তৈরি করে দিন মাছের টিকিয়া বা চপ।
চিকেন স্যান্ডুইচ দিতে পারেন। আর চিকেন স্টু বানালে তাতে আনাজ ও মাখন যোগ করুন।
আলুর মধ্যে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। তাই বাচ্চার ওজন কম হলে রোজকার ডায়েটে আলু রাখতে পারেন। স্বাদ আনতে আলুকাবলি, আলুর পরোটা দিতে পারেন।
ভাত, রুটি খেতে না চাইলে নানা রকম আনাজ দিয়ে ফ্রায়েড রাইস বানিয়ে দিন। ডিম দিয়ে সিদ্ধ মুগডালের খিচুড়িও রুচি ফেরায়।
একমাত্র লঙ্কা ও গোলমরিচ ছাড়া যে কোনও মশলা বাচ্চার রান্নায় মেশাতে পারেন। এতে খাবারে স্বাদ আসবে।
নানা ধরনের আনাজ সিদ্ধ একটু মশলা দিয়ে পরিবেশন করতে পারেন। চিঁড়ে সিদ্ধর বদলে চিঁড়ের পোলাও দিন।
দু’ বছরের বেশি বয়সি বাচ্চাদের লুচিও দিতে পারেন।
বিভিন্ন ফল দিয়ে ফ্রুট স্যালাড বানিয়ে দিন। টুটি ফ্রুটিও চলতে পারে দু’ বছরের বড় বাচ্চাদের। সুবর্ণা বলছেন, ‘‘বাচ্চা কিছুই খেতে না চাইলে আইসক্রিম দিয়ে মিল্ক শেক বানিয়ে দিন। আইসক্রিমের মধ্যে দুধ ও মরসুমি ফল দিয়ে শেক বানান। এই সময়ে বাচ্চারা একটু তরল খাবারের প্রতি আগ্রহ দেখায়। মিল্কশেক কাজে দেবে। ক্যালরিও পাবে।” অসুখের সময় বাচ্চাদের প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়ানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। সেই প্রয়োজনও মিটবে।
বাচ্চার ফরমুলা ফুডে কলা, আপেল মেশাতে পারেন।
দুধ পছন্দ না হলে, কাস্টার্ড বা রায়তা দিতে পারেন।
বাচ্চাকে সুস্বাদু খাবার খাওয়াতে গিয়ে দোকানের কেনা নয়, বাড়িতে বানানো খাবার খাওয়াবেন। সঙ্গে বাচ্চাদের খেলাধুলোর মধ্যে রাখুন। এতে খিদে পাবে, হজমও হবে ভাল।
ঈপ্সিতা বসু
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy