Advertisement
১১ মে ২০২৪

কর্মীরা ভোটে, বন্ধ হাসপাতালের পরিষেবা

কেউ টেকনিশিয়ানের দায়িত্ব সামলান, কেউ ড্রেসিং করেন। কারও দায়িত্ব ছিল কম্পিউটার চালানোর। এঁদের ভোটের ডিউটি পড়ায় কোচবিহারের দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে বন্ধ হল একাধিক পরিষেবা। হাসপাতাল সূত্রের খবর, কর্মীর অভাবে রক্ত পরীক্ষা বন্ধ। বন্ধ রাখা হয়েছে ড্রেসিং, ফিজিওথেরাপিও। অফিস ঘর কার্যত অচল। আউটডোরের কর্মীদের ডিউটিতে পাঠিয়ে দেওয়ায় সমস্যা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৪ ০২:০৯
Share: Save:

কেউ টেকনিশিয়ানের দায়িত্ব সামলান, কেউ ড্রেসিং করেন। কারও দায়িত্ব ছিল কম্পিউটার চালানোর। এঁদের ভোটের ডিউটি পড়ায় কোচবিহারের দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে বন্ধ হল একাধিক পরিষেবা। হাসপাতাল সূত্রের খবর, কর্মীর অভাবে রক্ত পরীক্ষা বন্ধ। বন্ধ রাখা হয়েছে ড্রেসিং, ফিজিওথেরাপিও। অফিস ঘর কার্যত অচল। আউটডোরের কর্মীদের ডিউটিতে পাঠিয়ে দেওয়ায় সমস্যা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। সমস্যার কথা সময়মত না জানানোর জন্যই কয়েকটি পরিষেবা বন্ধ রাখতে হয়েছে বলে অভিযোগ।

কোচবিহারের জেলশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “আমাদের সময় মতো সমস্যার কথা জানানো হয়নি। যে সব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন, তাঁদের সমাধান করে দেওয়া হয়েছে। দিনহাটা হাসপাতালের তরফে এমন সমস্যা হতে পারে বলা হয়নি।” যদিও দিনহাটা হাসপাতালের সুপার রঞ্জিত মণ্ডলের দাবি, “আমরা চিঠি দিয়ে সমস্যার কথা জানিয়েছিলাম। শুধু ওয়ার্ড মাস্টার ছাড় দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি।”

হাসপাতাল সূত্রে খবর, দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে কর্মী সংখ্যা ১৮০ জনের মত। এদের মধ্যে ৩৩ জন কর্মীকে ভোটের ডিউটি দেওয়া হয়েছে। প্যাথোলজিক্যাল টেকনিশিয়ান হিসাবে দু’জন কাজ করেন। দু’জনেরই ভোটের ডিউটি পড়েছে। ফলে রক্ত পরীক্ষা বন্ধ হয়েছে। ড্রেসিংয়ে দুই কর্মীর ডিউটি পড়ায় ওই বিভাগও বন্ধ। এক জন ফিজিওথেরাপিস্ট, ফার্মাসিস্টের ২ জনের মধ্যে এক জন, ২ জন অ্যাম্বুলেন্স চালকের ও এক এক্সরে টেকনিশিয়ানের ভোটের ডিউটি পড়েছে। হাসপাতালে আউটডোরে রোগীদের টিকিট দেওয়া সংক্রান্ত কাজের জন্য তিন জন কর্মী আছেন। তাঁদের প্রত্যেকেরই ভোটের ডিউটি পড়েছে। এ অবস্থায় অভিযোগ উঠেছে যে, আউটডোরে অনভিজ্ঞ কর্মীদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। এর ফলে চরম অসুবিধের মধ্যে পড়তে হচ্ছে রোগী ও সঙ্গে আসা আত্মীয়দের। এক জনকে টিকিট দিতেই অনেক সময় লাগছে। সকাল থেকে আউটডোরের সামনে লম্বা লাইন পড়ে যাচ্ছে। অফিস স্টাফ চার জনের প্রত্যেকের ভোটের ডিউটি পড়েছে। ফলে হাসপাতালের অফিস কার্যত বন্ধ হয়েছে। এ ছাড়া ১৮ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মীও ভোটের জন্য চলে গিয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, যথেষ্ট সংখ্যক কর্মী না থাকাতে রোগীদের সব পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না।

রোগীর আত্মীয়রা জানান, দিনহাটা মহকুমা হাসপাতাল অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি হাসপাতাল। জেলা হাসপাতাল থেকে সেটি কমপক্ষে ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই হাসপাতালের উপর বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা চৌধুরীহাট, কুশশারহাট, গীতালদহ, নাজিরহাট, শালমাড়া, গোসানিমারি আর সিতাই এলাকার কয়েক লক্ষ মানুষ পুরোপুরি নির্ভরশীল। এদের অধিকাংশই গরিব মানুষ। রক্তপরীক্ষা থেকে যে কোনও চিকিৎসার জন্য তাঁরা ওই হাসপাতালে যান। দিনহাটা নাগরিক মঞ্চের তরফে জয়গোপাল ভৌমিক এই দিন বলেন, “গরিব মানুষেরা হাসপাতালের উপরই সম্পূর্ণ নির্ভর করে। বিষয়টিকে আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখলেই আমাদের এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হত না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

hospital service
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE