জঙ্গিপুর হাসপাতাল চত্বরে অবাধ বিচরণ। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়
জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের দাপটে উত্তরবঙ্গ জুড়ে মৃত্যু-মিছিল চলছেই। ডুয়ার্সের ছোঁয়া যাতে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর এলাকাতে না লাগে তাই স্থানীয় পুরসভাগুলিকে আগাম সতর্ক করল স্থানীয় স্বাস্থ্য দফতর।
উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের মাঝে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা-জঙ্গিপুর এলাকাটি সেতুর মতো যোগসসূত্র তৈরি করেছে। ফলে উত্তরের রোগ বালাই পাছে ওই পথেই মুর্শিদাবাদ ছুঁয়ে অনুপ্রবেশ করে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে তাই আগাম ওই সতর্কতা বলে প্রাথমিক ভাবে স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন। বুধবার পুর কর্তৃপক্ষকে দু’দিনের মধ্যেই শহরের অনাচ কানাচ থেকে শুয়োরের উপদ্রব সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য দফতরের নোটিসে স্পষ্টই সতর্কবার্তাশহরে যাতে কোনও মতেই মশা ‘চাষের’ সুযোগ না থাকে। কিউলেক্স মশা আক্রান্ত শুয়োরের রক্ত মশা বাহিত হয়েই মানুষের মধ্যে এনসেফ্যালাইটিসের সংক্রমণ ঘটায়। এই অবস্থায় শুয়োর সংস্রব থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর।
জঙ্গিপুরে শুয়োরের চাষ চলছে বহু দিন থেকেই। বিশেষ করে ১৫, ১৬, ১২, ১০, ১৯, ১৪ ওয়ার্ডগুলিতে এমনকী জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতাল আবাসনেও চলছে ব্যাপ শুয়োরের চাষ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভাকে বার বার বলেও কোনও ফল হয়নি। জঙ্গিপুরের পূর্বতন মহকুমাশাসক ছোটেন ডি লামা এ নিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার পথে এগোন। কিন্তু তিনি বদলি হয়ে যাওয়ায় আবার যথাপূর্বম। স্থানীয় বাসিন্দা, “সকালে ঘুম ভাঙতেই দেখি বারান্দা জুড়ে শুয়োরের পাল শুয়ে রয়েছে। উত্তরবঙ্গে এনসেফ্যালাইটিসের যা ভয়াবহ পরিস্থিতি তাতে এখন রীতিমতো আতঙ্কে আছি। বাড়িতে ব্লিচিং, ফিনাইল, মশা মারার কীটনাশক ছড়াতে হচ্ছে প্রতিদিন।” পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলার বিকাশ নন্দের ওয়ার্ডে শুয়োরের দাপট কম নয়। তিনি বলেন, “বহু চেষ্টা করেও এই উপদ্রব বন্ধ করা যায়নি। কলকাতা হাইকোর্টে কয়েকবছর আগে একটি জনস্বার্থ মামলায় জঙ্গিপুর পুরসভাকে তলব করেছিল আদালত। সেখানে পুরসভার তরফে যে হলফনামা দাখিল করা হয়েছিল তাতে বলা হয়েছিল ভবিষ্যতে দুই শহরের লোকালয়ের বাইরে শুয়োরের খোঁয়াড়ের মধ্যে যাতে শুয়োরের ব্যবসা সীমিত থাকে তার দায়িত্ব নেবে পুরসভা। কিন্তু আদালতে সে হলফনামা দিলেও তা কার্যকরী করতে এ পর্যন্ত কোনও উদ্যোগ নেয়নি পুর কর্তৃপক্ষ।”
জঙ্গিপুরের পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলাম শহর জুড়ে শুয়োরের দাপটের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “এ নিয়ে স্বাস্থ্য দফতর থেকে বুধবার দুপুরে একটি চিঠি পেয়েছি। বুধবার সন্ধ্যের মধ্যেই শুয়োর পোষার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক করে দেবে পুরসভা। মাইক প্রচারও হবে শহরে। দ’ুদিন দেখব। তারপরেও শহরে শুয়োর দেখলে আইনগত ভাবে যা ব্যবস্থা নেওয়ার তা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy