মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা পরিমার্জন করে নতুন নির্দেশিকা জারি করল স্বাস্থ্য ভবন।
জেলা হাসপাতালগুলিতে সব চিকিৎসা নিখরচায় করা যাবে বলে বুধবার এসএসকেএম হাসপাতালের একটি অনুষ্ঠানে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সর্বক্ষেত্রে কী ভাবে সেই নির্দেশ বাস্তবায়িত করা যাবে, তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই গুঞ্জন শুরু হয়েছিল স্বাস্থ্য ভবনে। জেলা হাসপাতালগুলিতে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে মিলে যে পরীক্ষানিরীক্ষার ব্যবস্থা (পিপিপি মডেল) চালু রয়েছে, তা কী ভাবে বিনা পয়সায় দেওয়া যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষেরা। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনা হয়।
তার পরেই তড়িঘড়ি স্বাস্থ্য ভবন থেকে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়, জেলায় জেলায় হাসপাতাল, মহকুমা বা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ‘প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপ’ (পিপিপি)-এ চলা ডায়াগনস্টিক পরিষেবা ‘ফ্রি’ হচ্ছে না। সেখানে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়েই পরিষেবা পেতে হবে।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, স্বাস্থ্য-কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী এই সিদ্ধান্ত নিলে এই বিভ্রান্তির সৃষ্টি হত না। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশেরও পরিমার্জন দরকার হত না।
জেলা হাসপাতালগুলিতে পিপিপি মডেল আরও বেশি করে কার্যকর করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। তাই তাঁর ঘোষণায় বুধবার বিব্রত হতে হয়েছে স্বাস্থ্য-কর্তাদের। কারণ, লাভ ছাড়া বেসরকারি অংশীদারেরা ডায়গনস্টিক পরিষেবায় আগ্রহ দেখাবে না। স্বাস্থ্যসচিব মলয় দে বলেন, “এমনিতেই পিপিপি মডেলের ডায়গনস্টিক সেন্টারে বেসরকারি জায়গার থেকে কম টাকা লাগে। তা ছাড়া, অনেক ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই উদ্যোগী হয়ে অতি দরিদ্র রোগীর শারীরিক পরীক্ষা ওই ক্লিনিকগুলিতে ‘ফ্রি’ করে দেন। তাই এখনই এই ক্লিনিকগুলিতে আলাদা করে নিখরচায় পরিষেবা দেওয়ার পরিকল্পনা স্বাস্থ্য দফতরের নেই।”
জেলাস্তরে হাসপাতালের সব শয্যা, বিশেষত আইসিসিইউ এবং কেবিন ‘ফ্রি’ হয়ে যাওয়ার স্বাস্থ্য দফতরের প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা সম্পর্কে বুধবার থেকেই আলোচনা শুরু হয়েছিল। স্বাস্থ্যসচিব অবশ্য বলছেন, “রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা থেকে জেলাস্তরের হাসপাতালগুলিতে বছরে প্রায় ২৫ কোটি টাকা লাভ হবে। আইসিসিইউ ও কেবিন ফ্রি হলে যত টাকা লোকসান হবে তা ওই টাকাতেই পুষিয়ে যাবে।” স্বাস্থ্যসচিব আরও জানান, জেলায় এমনিতেই পেয়িং বেডের চাহিদা কম ছিল। নিজেদের কাজ কমাতে অনেক হাসপাতালই পেয়িং বেডগুলি খালি রেখে দিত। তাতে রোগী ভর্তি করত না। এতে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়তেন। তাই সব বেড ফ্রি করা সঠিক সিদ্ধান্ত বলে স্বাস্থ্যসচিবের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy