বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে কিছু দিন আগেই ইমার্জেন্সি আলো জ্বালিয়ে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে একটি সরকারি হাসপাতালে। বিদ্যুৎ না থাকায় সাধারণ রোগীদের ওয়ার্ডে বা ইমার্জেন্সি বিভাগে মোমবাতি জ্বালিয়ে চিকিৎসার ঘটনাও বিরল নয়। হাসপাতালগুলির এই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময়েই সেখানকার অভ্যন্তরীণ দুর্বল বিদ্যুৎ পরিকাঠামোকে (যা রাজ্যের পূর্ত দফতরের দায়িত্বে) দায়ী করে থাকেন বিদ্যুৎকর্তারা। তবে সিইএসসি-র দিক থেকে প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে যাতে কোনও খামতি না থাকে, তাই এ বার তারা বিকল্প কেব্ল লাইনের ব্যবস্থা করতে চলেছে। যা এর আগে করা হয়েছে মহাকরণ এবং নবান্নে।
এত দিন কোনও কারণে কেব্ল লাইন খারাপ হয়ে গেলে সিইএসসি-র ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীদের হাসপাতালে যেতে হত। কোথায় লাইন খারাপ হয়েছে তা বুঝে ঠিক করতেই অনেকটা সময় চলে যেত। এ বার হাসপাতালগুলির মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহের সুইচ বক্সটি চালু বা বন্ধ করার ব্যবস্থাটি স্বয়ংক্রিয় করেছে সিইএসসি। কন্ট্রোল রুমে বসেই একটি নির্দিষ্ট কোডের মাধ্যমে ওই সুইচ অন-অফ করা যাবে। নতুন এই বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় কোনও কারণে একটি কেব্ল লাইন খারাপ হলে কন্ট্রোল-রুম থেকেই স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির মাধ্যমে দ্বিতীয় লাইন দিয়ে সেকেন্ডের মধ্যে হাসপাতালে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবেন সিইএসসি-র ইঞ্জিনিয়ারেরা। সিইএসসি কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, আর জি কর, এসএসকেএম, বাঙুর হাসপাতাল-সহ কলকাতায় যে ক’টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল রয়েছে, সবগুলিতেই এই নতুন ব্যবস্থা কার্যকর করতে কাজ শুরু হয়েছে।
শুধু তাই নয়, এত দিন সরকারি হাসপাতালগুলিতে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট হলে সংস্থার উপর মহলের কর্তারা অনেক সময় জানতে পারতেন না। হাসপাতাল থেকে ফোন করলে সিইএসসি-র ইঞ্জিনিয়ার ও নিচুতলার কর্মীরাই জায়গায় গিয়ে সব কিছু খতিয়ে দেখে লাইন সারানোর ব্যবস্থা করতেন। এখন থেকে কোনও হাসপতালে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট হলে সেকেন্ডের মধ্যে খবর চলে যাবে সংস্থার উপর মহলের কর্তাদের কাছেও। প্রতিটি হাসপাতালের মিটারে একটি করে ‘মোডেম’ লাগানো হচ্ছে। যে প্রযুক্তিতে একটি মোবাইল থেকে অন্য মোবাইলে মেসেজ যায়, এ ক্ষেত্রেও সেই ব্যবস্থাকেই কাজে লাগিয়ে মিটার থেকে বার্তা পাঠানো হবে। খবর যাবে সিইএসসি-র কন্ট্রোল রুমেও। ফলে কোনও ফোনের প্রয়োজন হবে না। বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে ঘরে বসেই সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার থেকে ডিরেক্টর সকলেই জানতে পারবেন কোন হাসপাতালে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়েছে।
সিইএসসি-র অন্যতম ডিরেক্টর অভিজিৎ বসু জানান, সরকারি হাসপাতালগুলির পাশাপাশি শহরের বড় পাম্পিং স্টেশনগুলিতেও একই ব্যবস্থা চালু করা হবে। যাতে বর্ষায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে বৃষ্টির জল পাম্প করে ফেলতে কোনও সমস্যা না হয়। ভবিষ্যতে শ্মশানঘাটগুলিতেও বিকল্প লাইন দিয়ে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা হবে বলে জানান তিনি। সিইএসসি কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, এন্টালি, মোমিনপুর, ধাপার মতো বড়-বড় পাম্পিং স্টেশনগুলিতে নতুন হাইটেনশন কেব্ল লাইন বসবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy