এনসেফ্যালাইটিসের পরে ফরেস্ট ম্যালেরিয়া।
বর্ষা বাড়ায় উত্তরবঙ্গে এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপ কিছুটা কমেছে। তবে এ বার হানা দিয়েছে ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়া (ম্যালেরিয়ার গবেষকেরা ডুয়ার্সের এই ধরনের ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়াকে ফরেস্ট ম্যালেরিয়া বলে চিহ্নিত করেছেন)।
ওই ম্যালেরিয়ায় খুব তাড়াতাড়ি মস্তিষ্ক আক্রান্ত হয়। ফলে তাড়াতাড়ি রোগ নির্ণয় করতে না পারলে বিপদ। রক্ত পরীক্ষায় ম্যালেরিয়ার জীবাণু পাওয়া গেলে নির্দিষ্ট ওষুধ রয়েছে। তাতে রোগটি সেরেও যায়।
ইতিমধ্যে আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রামে এই ধরনের ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে এক বালক। কুমারগ্রামের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু ঠাকুর জানান, ১০ দিনে মোট ১৫ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তেরা সকলেই কুমারগ্রাম ব্লকের মারাখাতা, উত্তর নারারথলি, কুমারগ্রাম ও রায়ডাকের বাসিন্দা।
উত্তরবঙ্গের ওই এলাকা ফরেস্ট ম্যালেরিয়ার আঁতুড়ঘর বলেই পরিচিত। এখানকার জলপাইগুড়ি ও নবগঠিত আলিপুরদুয়ার জেলার কুমারগ্রাম, মালবাজার, আলিপুরদুয়ার শহর এলাকায় ম্যালেরিয়ায় গত বছরও ৪-৫ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে এ বার সেই সংখ্যাটা একলাফে বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য দফতরের উদ্বেগ বেড়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে কামাখ্যাগুড়ি ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শনে যান রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী। তিনি বলেন, “কুমারগ্রাম ব্লকে ম্যালেরিয়া মোকাবিলার কাজ শুরু হয়েছে। কেন এত জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হলেন, দেখা হচ্ছে।” তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি আলিপুরদুয়ার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধার।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবারই ১০ জনের রক্তে এই ম্যালেরিয়ার জীবাণুু পাওয়া যায়। এর মধ্যে পাঁচ জনকে কামাখ্যাগুড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ছ’মাসের একটি শিশুও রয়েছে। জেলার অন্যান্য হাসপাতালে ম্যালেরিয়ার রোগী রয়েছে কি না তা নিয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। তবে এখনও তাদের কাছে তেমন কোনও তথ্য আসেনি বলে দাবি করেছেন।
তবে স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ তুলেছেন একাংশ বাসিন্দা। তাঁদের দাবি, গত রবিবার রাতে ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়ায় মারখাতারার বাসিন্দা ন’বছরের রাজু ওঁরাওয়ের মৃত্যু হলেও তা জানানো হয়নি। মঙ্গলবার কুমারগ্রাম ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু ঠাকুর মৃত্যুর খবর স্বীকার করেছেন। এমনিতেই গত বছর আভাস পাওয়ার পরেও রোগ প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা কেন নেওয়া হয়নি সেই প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা। জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা অবশ্য তা নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে চাইছেন না।
এনসেফ্যালাইটিস কিউলেক্স বিশনোই মশার কামড়ে হয়। আর ফরেস্ট ম্যালেরিয়ার রোগ সংক্রমণ ছড়ায় অ্যানোফিলিস স্টিফেনসাই মশা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকা হওয়া সত্ত্বেও ওই সমস্ত এলাকায় মশা মারতে স্বাস্থ্য দফতর যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি বলেই এ বার ফের রোগ হানা দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy