Advertisement
০২ মে ২০২৪
Bihar

১৮ মাসে ৮ সন্তানের মা হয়েছেন, অথচ নিজেই জানলেন না ৬৫ বছরের বৃদ্ধা!

এর পিছনে বড় ধরনের দুর্নীতি চক্র কাজ করছে বলে মনে করা হচ্ছে। 

লীলাদেবী। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

লীলাদেবী। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
পটনা শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২০ ১৭:৩১
Share: Save:

একটা নয়, দু’টো নয়, আট-আটটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। তা-ও আবার মাত্র ১৮ মাসের মধ্যে। অথচ নিজেই সে কথা জানতেন না ৬৫ বছরের লীলাদেবী। বরং সরকারি নথি দেখে তা আবিষ্কার করলেন তিনি। আর তাতেই হইচই শুরু হয়েছে বিহার জুড়ে।

একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে বিষয়টি সামনে এসেছে। দরিদ্র পরিবারের গর্ভবতী মহিলাদের জন্য দেশে ন্যাশনাল মেটারনিটি বেনিফিট প্রকল্প চালু রয়েছে। তার আওতায় সন্তান প্রসবের আগে ও পরে কয়েক মাস মায়েদের ১৪০০ টাকা করে দেওয়া হয়। আশা কর্মীরা পান ৬০০ টাকা করে।

গত দু’বছরে বিহারে এই প্রকল্পের আওতায় যাঁরা টাকা পেয়েছেন, সম্প্রতি তাঁদের একটি তালিকা সামনে আসে। তাতে দেখা মুজফফরপুর জেলার মুসাহরি ব্লকের ছোটি কোঠিয়া গ্রামের বাসিন্দা লীলাদেবীর নামও শামিল রয়েছে। হিসেব করে দেখা যায়, ১৮ মাসে তিনি ৮ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন বলে উল্লেখ রয়েছে তাতে। সেই বাবদ টাকাও তিনি তুলেছেন বলে জানা যায়।

আরও পড়ুন: প্রণবের রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন স্থিতিশীল, এখনও ভেন্টিলেশনেই​

ওই তালিকাটি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে লীলাদেবী় জানান, ২১ বছর আগে শেষ বার এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। স্বামী পেশায় কৃষক। কোনও রকমে টেনেটুনে সংসার চলে তাঁদের। সম্প্রতি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লেনদেনের হিসেব বার করতে গিয়ে দেখেন, এক সপ্তাহ আগে তাঁর অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়ে। কিন্তু তাঁর নাম করে সেই টাকা আবার তুলেও নেওয়া হয়।

মুসাহরির যে স্টেট ব্যাঙ্কের শাখায় অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাদের কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট (সিএসপি) সেন্টারে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করেন লীলাদেবী। কিন্তু সেখান থেকে তাঁকে বলা হয়, খামোখা জলঘোলা না করতে। তাঁর নামে যত টাকা তোলা হয়েছে, তা ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলেও আশ্বস্ত করা হয় তাঁকে।

এ নিয়ে মুসাহরির ওই ব্যাঙ্কের ম্যানেজার চন্দ্রশেখর সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, এ ব্যাপারে কিছু জানা নেই বলে দাবি করেন তিনি। যুক্তি দেন, ফিঙ্গার প্রিন্ট প্রযুক্তি এবং আধার আইডেন্টিটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্ত লেনদেন হয়। তার পরেও ওই সিএসপি অপারেটর কী করে এই কাণ্ড ঘটালেন জানি না।’’

আরও পড়ুন: লকডাউনে আটকে পাকিস্তানে, ভারতীয় নাগরিকত্বপ্রার্থী হিন্দুরা সঙ্কটে​

বিষয়টি সামনে আসার পর থেকেই সুশীল কুমার নামের ওই সিএসপি অপারেটর গা ঢাকা দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে মুজফফরপুরের জেলাশাসকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও, ফোন ধরেননি তিনি। জবাব দেননি মেসেজেরও।

তবে গোটা ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুজফফরপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শৈলেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। উনিও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছেন আমাকে।’’ঋতুবন্ধের পর কোনও মহিলার পক্ষে সন্তানের জন্ম দেওয়া সম্ভব নয় বলে একমত চিকিৎসকরাও।

তবে লীলাদেবী একা নন, ৬৬ বছর বয়সী শান্তিদেবী, ৫৯ বছরের সাবিনা খাতুন-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক মহিলাই একই অভিযোগ করেছেন। এর পিছনে বড় ধরনের দুর্নীতি চক্র কাজ করছে বলে মনে করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE