লক্ষ্যভেদে তুলনাহীন অর্জুন। সেই কালেই শুধু নয়, এ কালেও। এ অর্জুনের পুরো নাম অর্জুন সন্তোষ। বাড়ি কেরলের আলাপুজহা জেলার পেরুমবালম গ্রামে। বাড়ির পাশে নদী। আর সেই নদীতে তিন কিলোমিটার সাঁতরে রোজ স্কুলে যায় অর্জুন। কেন? একটা সেতুর দাবিতে। অর্জুনের জেদে শেষ পর্যন্ত প্রাথমিক লক্ষ্যভেদটা অন্তত হল। প্রতিবাদের তির সে ঢুকিয়ে দিতে পেরেছে প্রশাসনের তুলো দিয়ে থাকা কানে।
বছরের পর বছর ধরে গ্রামের মানুষ দাবি করে আসছিলেন একটা সেতুর। নদী পারাপারে ভরসা শুধু ছোট ছোট গুটি কয়েক নৌকা। কিন্তু সেগুলো এতই ছোট যে বেশি লোক নেওয়ার ক্ষমতা নেই। তাছাড়া নৌকা করে ওপারে পৌঁছাতে সময় লেগে যায় ঘণ্টা দেড়েক। স্কুলে দেরি করে পৌঁছানোর জন্য রোজই মাস্টার মশাইদের কাছ থেকে তিরস্কার জুটত অর্জুনের কপালে।
শেষ পর্যন্ত জলে নেমে পড়ল ক্লাস নাইনের ছেলে অর্জুন। রোজ তিন কিলোমিটার সাঁতরে চলল স্কুলে যাওয়া। এ খবর জানাজানি হতেই নড়েচড়ে বসেন স্কুলের শিক্ষকরা। বর্ষা নেমে গেছে। এ অবস্থায় সাঁতারে নেমে বিপদে পড়ার সম্ভাবনা। কিন্তু অর্জুনকে থামায় কে! শেষ পর্যন্ত প্রশাসন কথা দিয়েছে, সেতু বানিয়ে দেওয়া হবে।
অর্জুনের গ্রাম পেরুমবালমে ১০ হাজার মানুষের বাস। গত ২৫ বছর ধরে এখানকার মানুষ নদীর ওপর একটি সেতুর দাবি জানাচ্ছিল প্রশাসনের কাছে। কারণ প্রতি বছর নূন্যতম ৫০ জনের মৃত্যু হত ঠিক সময়ে হাসপাতালে না পৌঁছাতে পারায়।
কিন্তু এতদিন ধরে যা করতে পারেনি তাঁর গ্রামের মানুষ, তাই করে দেখাল চোদ্দ বছরের অর্জুন। তার নিজের জীবনের লড়াই দিয়ে গ্রামের মানুষকে এনে দিতে চলেছে সাতশো মিটার লম্বা একটি সেতু। যে সেতুর অপেক্ষায় গত ২৫টা বছর লড়াই করেছিলেন পেরুমবালম গ্রামের মানুষ।
আরও পড়ুন:
জঙ্গি প্রভাবিত গ্রামে শিশুদের স্বপ্ন দেখালেন পুলিশ সাহেব
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy