বিজেপি সাংসদ তথা জাতীয় কুস্তি ফেডারেশনের প্রধান ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ। — ফাইল ছবি।
ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের অধ্যক্ষ তথা উত্তরপ্রদেশের গোন্ডার বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ সিংহের সঙ্গে কুস্তিগিরদের বিবাদে নয়া মোড়। ব্রিজভূষণের সমর্থনে রবিবার তাঁরই নির্বাচনী কেন্দ্র গোন্ডায় হতে চলেছে ‘মহার্যালি’। অন্য দিকে, ভারত সরকারের তরফ থেকে আন্দোলনরত কুস্তিগিরদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে যে, আগামী ১৫ জুনের মধ্যে ব্রিজভূষণ সম্পর্কিত মামলায় তদন্ত শেষ করে চার্জশিট জমা দেওয়া হবে। তার মধ্যেই সকলের নজর থাকবে গোন্ডার মহাসভার দিকে।
অকুতোভয় ব্রিজভূষণ। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কুস্তিগিরদের একটি অংশ তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন। দিল্লি পুলিশে অভিযোগ জমা পড়লেও গ্রেফতার তো দূরঅস্ত, এফআইআর পর্যন্ত দায়ের করা হয়নি। শেষ পর্যন্ত কুস্তিগিরেরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে দিল্লি পুলিশ বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে। তার পর যমুনা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। যন্তর মন্তরে আন্দোলনরত বিনেশ ফোগত, সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়াদের টেনেহিঁচড়ে তুলে দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। সরকারি নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে নিজেদের পদক বিসর্জন দিতে গিয়েছিলেন কুস্তিগিরেরা। এত কিছুর পরও ব্রিজভূষণকে ছুঁতে পর্যন্ত পারেনি রাষ্ট্রযন্ত্র। সেই ব্রিজভূষণের সমর্থনেই রবিবার সুবিশাল জনসভার ডাক দিয়েছেন তাঁর হিতাকাঙ্ক্ষীরা। রবিবার উত্তরপ্রদেশের গোন্ডায় হবে এই জনসভা। সেখানে বক্তারা কী বলেন, সে দিকে নজর থাকবে। পাশাপাশি আগ্রহ থাকবে ব্রিজভূষণ কী বলেন, তার দিকেও।
এখন প্রশ্ন হল, অনতিঅতীতে কেউ কখনও বিনেশ, সাক্ষী, বজরংদের মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ক্রীড়াবিদদের এ ভাবে রাস্তায় পড়ে থেকে শাসকদলের সাংসদ তথা কুস্তি ফেডারেশনের প্রধানের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার আন্দোলন করতে দেখেছেন কি? এই সংক্রান্ত অভিযোগ উঠলে যেখানে গ্রেফতার করাটাই হালফিলের দস্তুর, সেখানে বিজেপি সাংসদকে এখনও পর্যন্ত ছুঁতে কেন পারল না দিল্লি পুলিশ? তা হলে কি ব্রিজভূষণ এতটাই প্রভাবশালী যে, যৌন হেনস্থার অভিযোগও তাঁকে টলাতে পারে না?
গত সপ্তাহে দেশের ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর দেখা করেছিলেন সাক্ষী, বিনেশ, বজরংদের সঙ্গে। সেখানে তিনি কুস্তিগিরদের আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, ব্রিজভূষণের মামলা ১৫ জুনের মধ্যে শেষ করা হবে। আদালতে জমা পড়বে চার্জশিট। কিন্তু ব্রিজভূষণকে গ্রেফতার করা নিয়ে মন্ত্রীর মুখে টুঁ শব্দটিও ছিল না। ফলে শেষমেশ আদৌ কিছু হবে কি না, তা নিয়েই এখন ধন্দে পড়ে গিয়েছেন কুস্তিগিরেরা। যদিও গোটা ঘটনায় যে ভারতেরই মুখ পুড়েছে তা নিয়ে সন্দেহ নেই কারও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy