গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
উত্তরপ্রদেশের স্কুলে নিগ্রহের শিকার সংখ্যালঘু পড়ুয়ার পরিচয় প্রকাশের অভিযোগে সাংবাদিক মহম্মদ জুবেরের বিরুদ্ধে মামলা করল পুলিশ। খবরের সত্যতা যাচাই করার সংবাদমাধ্যম অল্ট নিউজের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জুবেরের বিরুদ্ধে মুজফ্ফরনগরের একটি থানায় শিশু ন্যায়বিচার আইনের ৭৪ ধারায় সোমবার মামলা দায়ের করা হয়।
উত্তরপ্রদেশের স্কুলে সহপাঠীদের দিয়ে আট বছরের সংখ্যালঘু পড়ুয়াকে মারার নিদান দিচ্ছেন শিক্ষিকা! ইতিমধ্যেই ভাইরাল হওয়া ভিডিয়ো (যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) ঘিরে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। কিন্তু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যোগী আদিত্যনাথের সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে নূপুর শর্মা বিতর্ক প্রকাশ্যে আনা জুবেরের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই মামলা করা হল কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে।
গত ২৫ অগস্ট উত্তরপ্রদেশের মুজফ্ফরনগরের খুববাপুরের একটি স্কুলে হোমওয়ার্ক না-করে আসার অপরাধে তৃপ্তি ত্যাগী নামের এক শিক্ষিকা ওই সংখ্যালঘু পড়ুয়াকে তার সহপাঠীদের দিয়ে চড় মারানোর ব্যবস্থা করেন বলে অভিযোগ। ঘটনার জেরে সমাজমাধ্যমে বিতর্কের ঝড় ওঠে। তার পরে অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে পুলিশ। কিন্তু কেন জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন বা মুজফ্ফরনগর পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করে ব্যবস্থা নেয়নি, সে প্রশ্নও উঠছে ইতিমধ্যেই।
পাশাপাশি অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রটি নির্দিষ্ট একটি ধর্মের বলেই, তার উপরে এই ‘পীড়ন’ চালানো হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন অভিযুক্ত শিক্ষিকা। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক জলঘোলাও শুরু হয়েছে। বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের একটি স্কুলের ওই ভিডিয়ো ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা এবং সিপিএম নেতৃত্ব। তাঁদের প্রশ্ন, এত ঘৃণার চাষ কেন? রাহুল লেখেন, ‘‘ছোট শিশুদের মনে ঘৃণার বিষ ঢোকানো, স্কুলের মতো পবিত্র জায়গাকে ঘৃণার বাজারে পরিণত করা— এক শিক্ষক দেশের জন্য এর চেয়ে খারাপ কিছু করতে পারেন না।”
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৭ জুন জুবেরকে গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশ। ২০১৮ সালে একটি টুইটে জনপ্রিয় হিন্দি সিনেমার ‘স্ক্রিনশট’ পোস্ট করেছিলেন তিনি। অভিযোগ, সেই কাজে ধর্মীয় ভাবাবেগে আহত হয়েছিল। তাঁকে উত্তরপ্রদেশের সীতাপুরের একটি মামলাতেও পরে গ্রেফতার করা হয়। দু’টি মামলাতে জামিন পেলেও পরে উত্তরপ্রদেশে তাঁর বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি এফআইআর করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে মোট ছ’টি এফআইআরের জন্য জেলবন্দি ছিলেন ওই সাংবাদিক। সে সব প্রত্যাহারের জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করলে সাময়িক স্বস্তি মেলে। ২৩ দিন জেলবন্দি থাকার পরে মুক্তি পান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy