পঞ্জাব-হরিয়ানা সীমানায় কৃষকেরা। ছবি: পিটিআই।
২০২০ সালে দিল্লির বুকে কৃষক আন্দোলনের স্মৃতি কি ফিরতে চলেছে? সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন জারি রাখার নানা রকম প্রস্তুতি নিয়েই রাজধানীর দিকে অগ্রসর হচ্ছেন হাজার হাজার কৃষক।
ওই সূত্রের দাবি, শুধু পঞ্জাব থেকেই ১৫০০টি ট্র্যাক্টর, ৫০০ গাড়ি নিয়ে দিল্লি অভিযানে আসছেন কৃষকেরা। ওই গাড়িতেই প্রায় ছ’মাসের খাবার নিয়ে আসছেন তাঁরা। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে, তা হলে কি আরও একটি দীর্ঘ সময়ের কৃষক আন্দোলন দেখতে চলেছে দিল্লি-সহ গোটা দেশ? ২০২০ সালে দিল্লির সীমানায় যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন কৃষকেরা, সেই আন্দোলন ১৩ মাস ধরে চলেছিল।
এ বারও কৃষকেরা সেই পথেই হাঁটতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাই আগেভাগেই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে দিল্লির সীমানা। পঞ্জাবের গুরদাসপুরের কৃষক হরভজন সিংহ এনডিটিভিকে বলেন, “সুচ থেকে হাতুড়ি, সব কিছু ট্রলিতে করে নিয়ে যাচ্ছি আমরা। ব্যারিকেড ভাঙার যন্ত্রও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা ছ’মাসের জন্য খাবার নিয়ে রওনা দিয়েছি। আমাদের সঙ্গে প্রচুর জ্বালানিও রয়েছে।”
আরও এক কৃষক জানিয়েছেন, এর আগের আন্দোলন ১৩ মাস ধরে চলেছিল। কৃষকদের দাবি মেটানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রের তরফে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি তারা রাখেনি। তাঁর কথায়, “এ বার যত দিন না পর্যন্ত আমাদের দাবিদাওয়া মেনে না নেওয়া হবে, তত দিন আন্দোলন থেকে পিছু হটব না।”
কৃষকদের এই ‘দিল্লি চলো’ অভিযান রোখার জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রচেষ্টা চালিয়েছে কেন্দ্র। দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কৃষক নেতাদের সঙ্গে দেখা করে বৈঠক করেন। কিন্তু সূত্রের খবর, সেই বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। সোমবার রাত ১১টার পর বৈঠকে বসে ২০২০ সালের ইলেক্ট্রিসিটি আইন বাতিল করার বিষয়ে কৃষক নেতাদের আশ্বস্ত করেন দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরির ঘটনায় কৃষকদের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া মামলা প্রত্যাহার করা হবে বলেও জানানো হয়। কিন্তু কৃষকদের মূল তিনটি দাবি— ফসলের ন্যায্য সহায়ক মূল্য, কৃষিঋণ মকুব এবং স্বামীনাথন কমিশনের প্রস্তাবের রূপায়ণ নিয়ে দু’পক্ষ কোনও স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। বৈঠকের পর বৈঠকে যোগ দেওয়া কৃষকদের এক প্রতিনিধির অভিযোগ, দু’বছর আগে কৃষকদের অর্ধেক দাবি মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও কেন্দ্র কিছুই করেনি। কৃষকেরা শান্তিপূর্ণ ভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করলেও সরকার সময় নষ্ট করেছে বলে অভিযোগ তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy