Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Farrukhabad

ঘুষ নেওয়ার শাস্তি, জেল ঘুরিয়ে সরকারি কর্মীদের বোঝালেন যোগীর আমলা

ফারুখাবাদ কেন্দ্রীয় কারাগারে এই সরকারি কর্মীদের ‘ঘুরিয়ে আনতে’ চেয়েছিলেন রবীন্দ্র। চেয়েছিলেন, গারদের ও-পারটা কেমন তা চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করে আসুন তাঁর সহকর্মীরা। দেখা করে আসুন তাঁদের আরও ৮৮ জন সহকর্মীর সঙ্গে। জেনে আসুন কারান্তরালে থাকা ওই ৮৮ জনের অভিজ্ঞতা।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৭ ১৮:৩০
Share: Save:

লোকসভার সাংসদ হিসেবে তাঁর বিদায়ী ভাষণে যোগী আদিত্যনাথ দাবি করেছিলেন, শীঘ্রই উত্তরপ্রদেশকে দুর্নীতিমুক্ত রাজ্য হিসেবে দেখতে পাওয়া যাবে। গত ২১ মার্চ লোকসভায় সেই ভাষণে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আরও দাবি করেছিলেন, তাঁর রাজ্যকে গুন্ডাগিরি থেকেও মুক্ত করবেন। রাজ্য প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে দুর্নীতি নিয়েও তাঁর অসন্তোষ গোপন করেননি যোগী।

আর মুখ্যমন্ত্রীর সেই অভিলাষ পূর্ণ করতেই বুঝি এগিয়ে এসেছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের ‘বাবুতন্ত্র’, অর্থাৎ আমলাতন্ত্রের একাংশ। উত্তরপ্রদেশের ফারুখাবাদের জেলাশাসক রবীন্দ্র কুমার সোমবার ৫৭৬ জন সরকারি অফিসারকে জেলে পাঠিয়েছেন।

আক্ষরিক অর্থে হলেও এই যাত্রা ব্যবহারিক অর্থে নয়। ফারুখাবাদ কেন্দ্রীয় কারাগারে এই সরকারি কর্মীদের ‘ঘুরিয়ে আনতে’ চেয়েছিলেন রবীন্দ্র। চেয়েছিলেন, গারদের ও-পারটা কেমন তা চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করে আসুন তাঁর সহকর্মীরা। দেখা করে আসুন তাঁদের আরও ৮৮ জন সহকর্মীর সঙ্গে। জেনে আসুন কারান্তরালে থাকা ওই ৮৮ জনের অভিজ্ঞতা। দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাকড়াও ওই ৮৮ জনকে এখন রাখা হয়েছে ফারুখাবাদের এই কারাগারেই!

নিছক প্রমোদভ্রমণের জন্যই ৫৭৬ জন সরকারি কর্মীকে জেল ঘোরানো হয়েছে এটা অবশ্যই মনে করার কারণ নেই। বরং, রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষস্তর মনে করছে, জেলখানার জুজু দেখালে হয়তো দুর্নীতি থেকে দূরে থাকবেন সরকারি কর্মীদের একাংশ। প্রশাসনের নীতি হচ্ছে, ভয় দেখিয়ে দুর্নীতি রোধ— বেছে নাও পথ, সৎ থাক অথবা জেলে যাও।

আরও পড়ুন: আজকের ডিনারেই মোদীকে কথা দেবেন মুলায়ম, মায়াবতী, অখিলেশ?

যে সরকারি কর্মীদের জেল ঘোরানো হল, তাঁদের মধ্যে, তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে রয়েছেন ‘লেখপাল’ বা রাজস্ব আধিকারিক, খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ বিষয়ক আধিকারিক এবং পঞ্চায়েত আধিকারিক, বিশেষ করে যাঁরা গ্রামস্তরে বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণের ভারপ্রাপ্ত।

জেলাশাসক রবীন্দ্র কুমার জানিয়েছেন, জেলে যাঁরা ঘুরে এলেন তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকটি দফতরের কর্তাও আছেন। জেলজীবনের খানিকটা স্বাদ তাঁরা যাতে অনুভব করেন, সেটা বোঝানোও জেলা প্রশাসনের উদ্দেশ্য ছিল।

বস্তুত, সরকারি কর্মীদের একাংশের মধ্যে ঘুষ নেওয়ার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ অনেক দিন থেকেই অসন্তুষ্ট।

হিন্দু পুরাণ মতে, পাপ করে নরকে গেলে কীটদষ্ট হতে হয়। জানা নেই, সেই বিশ্বাস থেকেই উত্তরপ্রদেশের আমলাতন্ত্র জীবদ্দশাতেই সরকারি কর্মীদের সাক্ষাৎ নরকবাসের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করালেন কি না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE