মূক-বধির গীতাকে পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরিয়েছিলেন তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
দেড়যুগ পর মায়ের সঙ্গে দেখা হল মূক-বধির কন্যা গীতার। ভুল করে শৈশবে সীমান্ত পার করে পাকিস্তানে চলে গিয়েছিল ভারতীয় কন্যা। মাকে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা শুরু তখন থেকেই। শারীরিক অক্ষমতার কারণেই ১৮ বছর সময় লেগে গেল মা-মেয়ের সাক্ষাতে।
মূক-বধির গীতাকে পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরিয়েছিলেন তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। ২০১৫ সালে। এমনকি দেশে ফেরার পরও গীতা যাতে তাঁর পরিবার খুঁজে পান, সে ব্যাপারে তখন নিজে উদ্যোগী হয়েছিলেন অধুনা প্রয়াত সুষমা। যদিও বারবার ব্যর্থ হন। গীতা কিন্তু হাল ছাড়েননি। দেশে ফিরে মা-বাবাকে খোঁজার চেষ্টা করে গিয়েছেন। যখন যেখানে খবর পেয়েছেন, ছুটেছেন। কিছুদিন আগেই জানতে পারেন, মহারাষ্ট্রে রয়েছে তাঁর পরিবার। নয়গাঁও গ্রামে থাকেন তাঁরা। খবর পেয়েই চলে যান গীতা। মাকে চিনতেও পারেন। তবে নিশ্চিত হতে মা এবং মেয়ের ডিএনএ পরীক্ষা করানো হয়। তাতে উতরে গিয়েছেন দু’জনেই।
গীতার পরিবারকে খুঁজে পাওয়ার খবর দিয়েছেন পাকিস্তানের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার বিলকিস ইধি। পাকিস্তানের ইধি ট্রাস্টের কর্ণধার বিলকিস টানা ১২টা বছর মায়ের মতো আগলেছেন গীতাকে। তাঁর ট্রাস্টই দেখভাল করেছে গীতার। সেই ২০০৩ সাল থেকে। এমনকী ‘গীতা’ নামটিও তাঁরই দেওয়া। সেই বিলকিসকেই দিন ক’য়েক আগে সুখবরটি দেন গীতা। পাকিস্তানের সংবাদপত্র ডন-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিলকিস বলেন, ‘‘খুব খুশি। এই সপ্তাহান্তেই গীতার সঙ্গে কথা হয়েছিল আমার। তখনই নিজের মা’কে খুঁজে পাওয়ার কথা বলে গীতা। ওঁরা মহারাষ্ট্রের নয়গাঁও গ্রামে থাকেন।’’
করাচির রেলস্টেশনে ১২ বছরের গীতাকে খুঁজে পেয়েছিলেন বিলকিস। তারপর থেকে ১২ বছর তাঁর কাছে, তাঁর ট্রাস্টের অধীন ইধি সেন্টারেই থেকেছেন গীতা। ১২ বছরের কিশোরীর নাম প্রথমে ‘ফাতিমা’ রেখেছিলেন তিনি। পরে যখন জানতে পারেন, সে হিন্দু কন্যা, তখন নাম বদলে ‘গীতা’ রাখেন। সেই গীতা ১৮ বছর পর জানলেন, আসলে তাঁর নাম ‘রাধা’। রাধা ওয়াঘমারে।
নয়গাঁওয়ে এখন শুধুই মা থাকেন তাঁর। বাবা মারা গিয়েছেন বছর ক’য়েক আগে। মা বিয়ে করেছেন আবার। পরিবারের সঙ্গেই আপাতত থাকছেন গীতা ওরফে রাধা।
বিলকিস জানিয়ছেন, তাঁর কাছে মেয়ের মতোই গীতা। সে যে তার পরিবারকে খুঁজে পেয়েছে, তাতেই তিনি খুশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy