প্রতীকী ছবি।
জার্মানিতে কাজ পাবেন, এমন প্রলোভন দেখিয়ে দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছিল মুকেশ নামে হরিয়ানার এক যুবককে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি দেখেন, তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে রাশিয়ায়। যখন মুকেশ বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারিত হয়েছেন, তখন আর তাঁর ভারতে ফেরার পথ ছিল না। রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছিল, এমনও অভিযোগ তুললেন মুকেশ! গত কয়েক মাস তাঁর জীবন ‘নরকযন্ত্রণা’র মধ্যে কেটেছে। তার পর কোনও ভাবে পালাতে সক্ষম হন তিনি। সেই অভিজ্ঞতার কথাই ভাগ করে নেন মুকেশ।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মুকেশ জানান, ভারতের বাইরে কাজ করতে যাবেন, তেমনই স্বপ্ন ছিল তাঁর। সেই স্বপ্ন পূরণ করতে এক এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করেন মুকেশ। কথাবার্তার পর ঠিক হয়, জার্মানিতে পাঠানো হবে তাঁকে। তার জন্য প্রয়োজনীয় পারমিটের ব্যবস্থাও করে দেবেন ওই এজেন্ট। পারমিটের জন্য প্রয়োজনীয় টাকাও মিটিয়ে দেওয়া হয়।
মুকেশের কথায়, ‘‘টাকা দেওয়ার পরই আমাকে বলা হয়, জার্মানি পাঠানো হবে। যখন বিমানে উঠি, তখনও জানতাম না, আমাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রথমে আমাকে ব্যাঙ্ককে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরই আমার কাছ থেকে পাসপোর্ট এবং যাবতীয় নথি কেড়ে নেওয়া হয়। বলা হয়, আমাকে রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হবে। আপত্তি করলেও কেউ কথা শোনেনি। তার পর ‘ডাঙ্কি’ পথে রাশিয়ায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’’
লুকিয়ে রাশিয়া সীমান্ত পার করলেও শেষরক্ষা হয়নি। ধরা পড়ে যান মুকেশ। তাঁর কথায়, ‘‘রাশিয়ান সেনাবাহিনী আমাকে এবং আমার মতো কয়েক জনকে ধরে একটা জঙ্গলে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে ১৬ দিন কাটাতে হয়। রোজ আমাদের উপর অত্যাচার করা হত। মারধর চলত। এমনকি, সিগারেটের ছেঁকা দিত তারা। আমাদের বলা হয়েছিল, বাঁচতে হলে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে হবে। যদি রাজি না হই, তবে ১০ বছরের জেল হবে। আমরা রাজি হইনি। আমাদের জেলে পাঠানো হয়। মামলা চলতে থাকে। শেষে আমাদের জামিন দিয়ে রাশিয়া থেকে নির্বাসিত করা হয়।’’
দিন কয়েক আগেই চাকরি প্রতারণার এক চক্রের হদিস মিলেছিল। অভিযোগ উঠেছিল, মোটা বেতনের চাকরির টোপ দিয়ে রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে যুবকদের সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য করা হত। এমনকি, ইউক্রেন যুদ্ধেও তাঁদের পাঠানো হয়েছিল। দুই ভারতীয়ের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। কেন্দ্র সরকারও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। পাশাপাশি, এমন প্রতারণা চক্রে ফেঁসে যাওয়া ভারতীয়দের রাশিয়া থেকে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয় ভারত সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy