কী ভাবে উপত্যকায় ঢুকছে হেরোইন! বাড়ছে নজরদারি। প্রতীকী চিত্র।
প্রতি ঘণ্টায় এক জন করে মাদকাসক্ত ভর্তি হন নেশামুক্তি কেন্দ্রে। যার মধ্যে অধিকাংশই স্কুল এবং কলেজপড়ুয়া। এই আসক্তদের মধ্যে আবার এক তৃতীয়াংশই মহিলা। এমনই তথ্য উঠে এল সংবাদমাধ্যম ‘নিউজ ১৮’-এর একটি প্রতিবেদনে। প্রশাসনের দাবি, উপত্যকায় এই মাদকাসক্তির পিছনেও রয়েছে পাকিস্তানের পরিকল্পিত ছক!
ওই প্রতিবেদনে দাবি, ২০১৬ সালে শ্রীনগরে সরকারি মেডিক্যাল কলেজের ওএসটি সেন্টারে ৪৮৯ জন মাদকাসক্ত ভর্তি হয়েছিলেন। ২০১৭ সালে সেই সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়ায় তিন হাজারে। ২০১৯ সালে সেটা হয় ১০ হাজার। সব মিলিয়ে গত পাঁচ বছরে জম্মু এবং কাশ্মীরে নেশাসক্তের সংখ্যা বেড়েছে ২,০০০ শতাংশ।
স্বাভাবিক ভাবে এই পরিসংখ্যানে উদ্বিগ্ন জম্মু এবং কাশ্মীর প্রশাসন। তাদের আরও যেটা ভাবাচ্ছে তা হল নেশাসক্তদের বয়স। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১০ থেকে ১২ বছর বয়সি স্কুলপড়ুয়ারাও হেরোইন নেশায় বুঁদ হচ্ছে। নেশামুক্তি কেন্দ্রে থাকা এই রোগীদের প্রত্যেকের আর্থিক পরিস্থিতিও যে ভাল তেমনটা নয়। কেউ উচ্চবিত্ত পরিবারের তো কেউ সাধারণ মধ্যবিত্ত। তা ছাড়া কোনও নির্দিষ্ট অংশে নয়, উপত্যকা জুড়েই এই হেরোইন আসক্তদের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে।
এর পিছনে পাকিস্তানের পরিকল্পিত ছক দেখছে প্রশাসন। তাদের দাবি, সীমান্ত দিয়ে চলছে আফিম এবং হেরোইনের চোরাচালান বেড়েই চলেছে। এক নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)-র এক আধিকারিকের কথায়, বিশ্বের ৯০ শতাংশ আফিম উৎপাদন হয় আফগানিস্তানে। সেগুলো পাঠানো হয় পাকিস্তান। পাক ব্যবসায়ীদের একাংশ সে সব মাদক চালান করেন জম্মু-কাশ্মীরে। তাই এখন আরও জোরালো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রশাসন আমদানি দ্রব্যে নজরদারি শুরু করেছে। পুলিশ প্রশাসনের দাবি, পাক মাটিতে ঘাঁটি গাড়া কিছু জঙ্গি সংগঠন রয়েছে এই হেরোইন-চক্রের পিছনে। উপত্যকায় পাকড়াও হওয়া বহু জঙ্গির কাছ থেকে অস্ত্র ছাড়াও পাওয়া গিয়েছে হেরোইনের প্যাকেট।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, উপত্যকায় মাদকাসক্তদের মধ্যে ৯৫ শতাংশই হেরোইন ব্যবহার করেন। এবং উদ্বেগের ব্যাপার এই সংখ্যাটা ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। খুব সহজেই নেশার দ্রব্য পাওয়া যায় কাশ্মীরে। যত দিন না মাদক আমদানি রোখা যাবে, তত দিন এই সমস্যার সমাধান হওয়া মুশকিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy