Advertisement
১৭ মে ২০২৪
National News

নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দিলেন শর্মিলা

গাড়ি নয়, ভোট প্রচার চালাবেন সাইকেলে। বিধানসভার ভোটে হারলেও ছাড়বেন না লড়াই। ফের লড়বেন লোকসভায়। লক্ষ্য একটাই। যে করে হোক আফস্পা হঠানো।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৬ ১১:২১
Share: Save:

গাড়ি নয়, ভোট প্রচার চালাবেন সাইকেলে। বিধানসভার ভোটে হারলেও ছাড়বেন না লড়াই। ফের লড়বেন লোকসভায়। লক্ষ্য একটাই। যে করে হোক আফস্পা হঠানো।

মণিপুর বিধানসভা নির্বাচনে নিজের দলের হয়ে প্রচার শুরু করে দিলেন ইরম শর্মিলা চানু। জানালেন, না খেয়ে লড়ে ফল মেলেনি। তাই এ বার অন্য ময়দানে অস্ত্র শান দিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।

১৬ বছরের অনশন ভেঙে অগস্ট মাসে স্বাভাবিক জীবনে ফেরেন চানু। অনশন ভাঙায় তাঁর বিরুদ্ধে জারি মামলাও খারিজ হয়। প্রথমে জামিনে মুক্ত পরে, পুরোপুরি মুক্ত হয়ে নতুন রাজনৈতিক দল গড়েন শর্মিলা। নাম দিয়েছেন, পিপল্স রিসার্জেন্স অ্যান্ড জাস্টিস অ্যালায়েন্স। শূন্য থেকে শুরু করে সরকার ভাঙার মন্ত্র শিখতে দেখা করেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে। ফিরিয়ে দিয়েছেন বিজেপির প্রস্তাব।

প্রথমেই নাগা অধ্যূষিত উখরুল সফরে গিয়েছিলেন চানু। সেখানে তখন আফস্পা বিরোধী আন্দোলন চলছিল। মেইতেই বনাম নাগা বিভেদ ঘোচানে চানুর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল।

অনশন ভাঙার পরে প্রথম দিনে, আদালত চত্বরেই শর্মিলা ঘোষণা করেছিলেন, তিনি খোদ মুখ্যমন্ত্রীর আসনে লড়ে, ওক্রাম ইবোবি সিংহকে হারিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হতে চান। সেই সিদ্ধান্তে এখনও অনড় চানু। সঙ্গে যোগ হয়েছে কংগ্রেস বিধায়ক এন বিজয় সিংহের কেন্দ্র খুরাই। নিজের প্রথম নির্বাচনী সভা খুরাইতেই করলেন শর্মিলা।

তেমন বড় জনসভা নয়, খুরাইয়ের লামলং এলাকায় একটি বাড়ির উঠোনে জনতার উদ্দেশে ভাষণ দেন মণিপুরের 'লৌহমানবী'। অনশন ভাঙায় তাঁর বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল মণিপুরে। এতদিনের সঙ্গী ইমা বা মা-য়েরা সঙ্গ ছেড়েছিলেন। ভেঙে গিয়েছিল শর্মিলা কানবা লুপ।

এ দিনের ভাষণে শর্মিলা জানান, ১৬ বছর ধরে এক রকমের আন্দোলন চালিয়েছেন তিনি। সেই অহিংস, অনশন আন্দোলন কাজে না আসায় বাধ্য হয়েই তিনি অন্য রাস্তা নিলেন। আর সেই রাজনৈতিক লড়াইয়ের রাস্তায় নামতে হলে অনশন ভেঙে মূল স্রোতে ফেরা ভিন্ন উপায় ছিল না। তিনি বলেন, "আফস্পা হঠানো আমার নৈতিক দায়িত্ব। তার জন্য আমার লড়াই চলবে। রাজ্য থেকে আফস্পা হঠাতে যে কোনও উপায়ে লড়ব আমি।"

শর্মিলা অনশন ভাঙার পরে জানিয়েছিলেন, বিধানসভা নির্বাচনে মানুষ তাঁকে গ্রহণ না করলে, পরাজয় মাথা পেতে নেবেন তিনি। তারপর প্রেমিক ডেসমন্ড কুটিনহোকে বিয়ে করে বিদেশে বা ভিন রাজ্যে সংসার করবেন। কিন্তু অনশন ভাঙার পর থেকে আর ডেসমণ্ডের দেখা মেলেনি। শর্মিলার পরিবার ও ঘনিষ্ঠরা বার বার দাবি করেছেন ডেসমণ্ডের প্রেম লোক দেখানে। তা শর্মিলাকে দুর্বল করে তাঁর অনশন ভাঙানোর সরকারি ষড়যন্ত্র। সেই আশঙ্কা সত্যি হওয়া মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন শর্মিলা। কিন্তু নিজের সঙ্গে লড়াই করে ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। জনসভায় তিনি ঘোষণা করেন, বিধানসভায় হেরে গেলেও পরোয়া নেই। পালাবেন না যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে। লোকসভা নির্বাচনে ফের লড়বেন তিনি।

শর্মলা জানান, তিনি ও তাঁর দল নির্বাচনী প্রচার চালাবে একেবারে সাধারণ ভাবে। সব দুর্নীতির ঊর্দ্ধে থেকে। তাই গাড়ি নয়, তাঁর বাহন হবে সাইকেল। শর্মিলার নির্বাচনী সভায় অন্য রাজ্য থেকেও সমর্থকরা এসেছিলেন। কলকাতা থেকে আসা এক চিত্র নির্মাতা শর্মিলার রাজনৈতিক যাত্রাকে ফ্রেমবন্দী করছেন। খুরাইয়ের পরে মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্র থৌবালে প্রচার চালাবেন শর্মিলা।

আরও পড়ুন

দলের দায়িত্ব নিয়ে সিদ্ধান্ত রাহুলকেই ছাড়লেন সনিয়া

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE