Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

লিঙ্গায়ত তাসই বুমেরাং কংগ্রেসের

ফলাফলে স্পষ্ট, সেই তাস কাজে তো লাগেইনি, বরং বুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছে রাহুল গাঁধীর দলের কাছে।

রাহুল গাঁধী।

রাহুল গাঁধী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৮ ০৪:৫৯
Share: Save:

কর্নাটক ভোটের আগে লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়কে সংখ্যালঘু তকমা দিয়ে কাছে টানার চেষ্টা করেছিল কংগ্রেস। কিন্তু ফলাফলে স্পষ্ট, সেই তাস কাজে তো লাগেইনি, বরং বুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছে রাহুল গাঁধীর দলের কাছে।

রাজ্যের মোট ২২৪টি আসনের মধ্যে অন্তত ১১০টি আসনে লিঙ্গায়ত প্রভাব প্রশ্নাতীত। দ্বাদশ শতকে সমাজ সংস্কারক বাসভন্না-র তৈরি এই সম্প্রদায় কর্নাটকের মোট জনসংখ্যার ১৭ শতাংশ। ভোটের কথা মাথায় রেখে লিঙ্গায়ত মন জয়ের জন্য কংগ্রেস সরকার কিছু দিন আগে তাদের সংখ্যালঘু তকমা দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। উদ্দেশ্য, বিজেপির লিঙ্গায়ত ভোট ব্যাঙ্কে বিভাজন ঘটিয়ে নিজেদের দিকে টেনে আনা।

কিন্তু রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপে কার্যত হিতে বিপরীত হল। সংখ্যালঘু তকমা নিয়ে লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়ের ভিতরেই আগুন জ্বলল, যার আগাম হিসেব ছিল না কংগ্রেসের কাছে। বীরাপ্পা মইলির মতো নেতাও এ দিন কথাটা খোলাখুলি স্বীকার করেন। স্পষ্টই বলেন, ‘‘ভোটের আগে লিঙ্গায়েত প্রশ্নটা উস্কে দেওয়া কৌশলগত ভাবেই ভুল হয়েছে।’’ এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে রাস্তায় নামে লিঙ্গায়তের মধ্যেই বীরশৈব নামের একটি উপগোষ্ঠী, যারা আর্থসামাজিক দিক থেকে অনেকটা এগিয়ে। এই বীরশৈবরা শিবের উপাসক, হিন্দুত্বের সঙ্গে তাদের যোগ ঘনিষ্ঠ। স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপি-ঘনিষ্ঠতাও বেশি। লিঙ্গায়তের বাকি অংশের ক্ষেত্রে বিষয়টি তেমন নয়। তারা নিরাকার ঈশ্বরের পূজারি। ফলে জলঘোলা হতে থাকে।

আরও পড়ুন:
ভাবাচ্ছেন মোদীর ঘনিষ্ঠ ভাজুভাই
বন্ধ হল বাজনা, উধাও লাড্ডুও

সিদ্দারামাইয়া সরকারের ওই ঘোষণার পরই প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন বীরশৈবরা। একমাস ধরে তারা কংগ্রেস বিরোধী প্রচার করে গিয়েছে মূলত উত্তর কন্নড়ের আসনগুলিতে (যেখানে বীরশৈব জনসংখ্যা বেশি)। শেষ পর্যন্ত ভোটের বাক্সে তারই প্রতিফলন দেখা গেল।

অথচ লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের স্বতন্ত্র পরিচয়ের জন্য বেশ কয়েকটি মন্ত্রিসভার বৈঠক এবং লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের উচ্চপদস্থ কর্মীদের মধ্যে বৈঠক করানো হয়েছিল৷ এর পরই লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়কে পৃথক মর্যাদার দাবি নিয়ে বিচারক নাগামোহন দাসের কমিটি একটি সুপারিশ পেশ করে৷ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সেই সুপারিশ গ্রহণ করা হয়৷ এর পর সেই দাবি নিয়েই কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয় সিদ্দারামাইয়া সরকার৷ এই প্রসঙ্গে লিঙ্গায়ত নেতা এবং জলসম্পদ মন্ত্রী এম বি পাতিল তখন এ কথাও বলেছিলেন, ‘‘লিঙ্গায়তরা হিন্দু নন৷ তাই আমরা আলাদা পরিচয়ের দাবি জানিয়েছি৷ আশা করি কেন্দ্র আমাদের দাবি গ্রহণ করবে৷’’ এত কাণ্ড করেও যে ভোট বাক্সই আখেরে মুখ ফেরাবে, বুঝতে পারেননি কংগ্রেস নেতৃত্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE