ভোটে লড়তে জনসাধারণের কাছে হাত পেতেছেন বেগুসরাইয়ের সিপিআই প্রার্থী কানহাইয়া কুমার। ৭০ লাখ টাকা তোলার লক্ষ্যে একটি ওয়েবসাইটে আবেদন জানিয়েছিলেন। নির্দিষ্ট দিনের অনেক আগেই বৃহস্পতিবার উঠে গিয়েছে ৭০ লক্ষ ৯০৩ টাকা।
নির্বাচনের খরচ তুলতে অনলাইনে এই রকম ‘ক্রাউডফান্ডিং’-এর ভাবনা দেখিয়েছিল আম আদমি পার্টি (আপ)। এখন সেই পথ বেছে নিচ্ছেন অনেকেই। যে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ভোটে লড়ার টাকা তুলেছেন কানহাইয়া, সেই সাইটেই দেখা যাচ্ছে রায়গঞ্জের সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের জন্যও টাকা তোলা হচ্ছে। নির্বাচন লড়তে চাঁদা দেওয়ার আবেদন করেছেন দেশ জুড়ে বেশ কয়েক জন জন প্রার্থী। রয়েছেন আত্মঘাতী দলিত পড়ুয়া রোহিত ভেমুলার বন্ধু বিজয় কুমার। অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে বিধানসভা নির্বাচনে লড়ছেন তিনি। প্রাচুর কেন্দ্রের বহুজন সমাজ পার্টির প্রার্থী বিজয় নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ শূন্য। আপাতত ক্রাউডফান্ডিং-এর দিকেই তাকিয়ে বিজয়। মুম্বই উত্তর-মধ্য কেন্দ্রের নির্দল প্রার্থী স্নেহা কালে ক্রাউডফান্ডিং-এর জন্য এই ওয়েবসাইটেই আবেদন করেছেন। রূপান্তরকামী স্নেহার নিয়মিত উপার্জন নেই। তাঁর আর্থিক সঙ্গতিতে যে নির্বাচন লড়া যায় না, তা বুঝেই স্নেহার ক্রাউডফান্ডিং-এর আবেদন। রাজনৈতিক ভাষ্যকারদের মতে, ক্রাউডফান্ডিং এ দেশে আগে হলেও কানহাইয়ার বিষয়টি আলোচনায় বেশি উঠে আসছে। কারণ, একদা জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-নেতা হিসেবে কানহাইয়াকে নিয়ে যে বিতর্কের শুরু হয়েছিল, তার থেকে দূরে থাকতে কানহাইয়াকে বিরোধীরা দিচ্ছেন না। তাঁকে নিয়ে যে কোনও তথ্যতেই সাধারণের আগ্রহ রয়েছে। সে তাঁর বিরোধী হোক, অথবা সমর্থক।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ইমনকল্যাণ লাহিড়ীর বক্তব্য, অনেক আগে থেকেই বামপন্থীরা ভোটের খরচ জোগাড় করতেন চাঁদা তুলে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে অথবা বাজার-হাটে গিয়ে চাঁদা তাঁরা তুলতেন। এখন ইন্টারনেট থাকায় বিভিন্ন সাইটের মাধ্যমে প্রার্থীরা টাকা তুলতে পারছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ইন্টারেস্ট গ্রুপের কাছ থেকে অনেক প্রার্থী টাকা পেয়ে যায়। অনেকের আবার নিজেদেরই আর্থিক অবস্থা খুব ভাল। কিন্তু অনেকেই রয়েছেন, যাঁদের নির্বাচন লড়ার জোর নেই। তাঁদের এ ভাবে চাঁদা তুলে লড়তে হয়।’’
রাস্তায় নেমে টাকা জোগাড়ের চেষ্টাও থেমে নেই। দলীয় প্রার্থী হরিপদ বিশ্বাসের জন্য শনিবারই বারাসতে গিয়ে ফরওয়ার্ড ব্লকের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস যেমন নগদে এক লক্ষ ৯৬ হাজার এবং চেকে এক লক্ষ টাকা তুলতে পেরেছেন। আরএসপি প্রার্থীদের জন্যও অনলাইন ক্রাউডফান্ডিং-এর চেষ্টা হয়েছিল। তবে পদ্ধতিগত জটিলতায় তাঁরা ফিরেছেন সনাতন চাঁদা তোলায়। উত্তর দিনাজপুর, মালদহ হোক বা পুরুলিয়া— রাস্তায় নেমে নির্বাচনের তহবিল সংগ্রহে দেখা যাচ্ছে বিমান বসুকে। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বলছেন, ‘‘মানুষের জন্য ভোটে লড়তে মানুষের কাছেই যাচ্ছি। এতে লজ্জা নেই। সকলের কাছে সাহায্য চাইছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy