Advertisement
২৯ এপ্রিল ২০২৪
Kota

আবার সেই কোটা, ঘর থেকে উদ্ধার নিট পড়ুয়ার দেহ, চলতি বছরে সপ্তম মৃত্যু

দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ছাত্র-ছাত্রীরা কোটায় গিয়ে সেখানে থেকে পড়াশোনা করেন। কিন্তু কখনও কখনও দেখা যায় কোটায় পড়াশোনার ‘অমানুষিক’ চাপ নিতে না পেরে আত্মঘাতী হচ্ছেন পড়ুয়ারা।

NEET Aspirant from UP Dies in Kota, Seven Case in this year

আবার কোটায় পড়ুয়া মৃত্যু। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৪ ১৬:৪৪
Share: Save:

প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে উত্তরপ্রদেশ থেকে রাজস্থানের কোটায় গিয়েছিলেন তিনি। চোখে ছিল ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন। কিন্তু সেই স্বপ্নপূরণের আগেই নিজের জীবন শেষ করে দিলেন বছর ২০-এর উরুজ। ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা বা নিটের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে কোটায় আত্মহত্যা করলেন তিনি। কেন উরুজ এমন চরম পদক্ষেপ করলেন, তা নিয়ে ধন্দে পরিবার। এই নিয়ে চলতি বছরে সাত জন পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনা ঘটল ‘কোচিং হাব’ কোটায়।

পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশের কনৌজ জেলার বাসিন্দা ছিলেন উরুজ। বছর দুই আগে নিটের প্রস্তুতি নিতে কোটায় গিয়েছিলেন তিনি। সেখানকার এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেই ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসার জন্য পড়াশোনা করছিলেন। জওহর নগর এলাকার এক বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তিনি। মঙ্গলবার সেই ভাড়া বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয় উরুজের ঝুলন্ত দেহ।

জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে উরুজকে একাধিক বার ফোন করেন তাঁর বাবা-মা। কিন্তু কোনও বারই তিনি ফোন তোলেননি। তাতেই সন্দেহ হয় পরিবারের। তাঁরা যোগাযোগ করেন কোটায় উরুজের বন্ধুদের সঙ্গে। এর পর তাঁরা ছুটে যান উরুজের ভাড়া বাড়িতে। দেখেন তাঁর ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। অনেক বার ডাকাডাকি করেও কোনও লাভ হয়নি। তাঁরাই খবর দেন বাড়ির মালিককে। তিনি এসে উরুজের ঘরের দরজায় ধাক্কা দেন। না খোলায় খবর দেন পুলিশকে।

পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। সেখান থেকেই উরুজের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে তারা। পুলিশ সূ্ত্রে খবর, গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই পড়ুয়া। কেন উরুজ আত্মহত্যা করলেন, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। খবর দেওয়া হয়েছে তাঁর পরিবারকে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পরই দেহ তুলে দেওয়া হবে পরিবারের হাতে।

উল্লেখ্য, রাজস্থানের কোটা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশিক্ষণের কেন্দ্র হিসাবে বিখ্যাত। আইআইটিতে ভর্তি হওয়ার পরীক্ষা থেকে শুরু করে চিকিৎসক হওয়ার প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষারও কোচিং হাব বলা হয় কোটাকে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ছাত্র-ছাত্রীরা কোটায় গিয়ে সেখানে থেকে পড়াশোনা করেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ সেই চাপ সহ্য করতে পারেন না। কেউ কেউ কোটায় পড়াশোনার ‘অমানুষিক’ চাপ নিতে না পেরে আত্মঘাতী হন। চলতি বছরে কোটায় এই নিয়ে এটি সপ্তম আত্মহত্যার ঘটনা। গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালেও ২৯ জন ছাত্র আত্মহত্যা করেছিলেন কোটায়। ২০২২ সালে সেই সংখ্যাটা ছিল ১৫।

রাজস্থান সরকারের তরফে পড়ুয়াদের উপর মানসিক চাপ কমানোর জন্য কোচিং সেন্টারগুলিকে বিভিন্ন পদক্ষেপ করার কথা বলা হলেও তাতে যে বিশেষ লাভ হয়েছে, তেমনটা নয়। তবে হস্টেলে হস্টেলে ‘অ্যান্টি হ্যাঙ্গিং ডিভাইস’ লাগানোর মতো পদক্ষেপ করা হয়েছে। এ ছাড়াও বারান্দায় জাল লাগানো হয়েছে। যাতে কেউ ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা না করতে পারেন। কিন্তু তাও আটকানো যাচ্ছে না পড়ুয়াদের আত্মহত্যার ঘটনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kota NEET Suicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE