ছবি:রয়টার্স।
নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) চূড়ান্ত খসড়ায় নাম না থাকলেই কাউকে ‘ডিটেনশন’ শিবিরে ধরে নিয়ে যাওয়া হবে না বলে অসমবাসীকে আশ্বস্ত করল রাজ্য মন্ত্রিসভা। আজ মন্ত্রিসভা বৈঠকে বিশদ আলোচনার পরে সরকারি মুখপাত্র চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি এই আশ্বাসের কথা জানান। আগামী ৩০ জুলাই মধ্যরাতের মধ্যেই চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এক সপ্তাহ পরের কথা ভেবে আতঙ্কে অসমের বিরাট সংখ্যক মানুষ। পাটোয়ারি জানান, সকলে নিজেকে ভারতীয় প্রমাণ করার পর্যাপ্ত সময়-সুযোগ পাবেন। নিজের বাড়িতে থেকেই লড়তে পারবেন তাঁরা।
গত কালই অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল এবং মুখ্যসচিব, ডিজিপি-র সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। বৈঠকের পরেও একই আশ্বাস দিয়েছেন রাজনাথ। সেখানে তিনিও জানান, নাম বাদ পড়লেই চিন্তার কিছু নেই। ফের আবেদন করার জন্য সকলকে সমান ও পর্যাপ্ত সুযোগ ও সময় দেওয়া হবে। মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতেই আবেদন বিবেচনা করা হবে। তিনি বলেন, ‘‘প্রকৃত ভারতীয়দের কোনও চিন্তা নেই। তালিকা প্রকাশের পরেই ডিটেনশন শিবিরে ধরে নিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটবে না।’’ কার্যত রাজনাথের সেই বক্তব্যেরই পুনরাবৃত্তি করল অসম মন্ত্রিসভা।
সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, নাগরিক পঞ্জির চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশের এক সপ্তাহ পর অর্থাৎ ৭ অগস্ট থেকে এনআরসি সেবাকেন্দ্রগুলিতে তিন ধরনের ফর্ম পাওয়া যাবে। প্রথম ফর্মের মাধ্যমে নাম বাদ পড়া পরিবারগুলি নতুন করে আবেদন জানাতে পারবেন। কারও কোনও সংশোধনী থাকলে দ্বিতীয় ফর্মে আবেদন করতে পারবেন। অন্য কোনও রকম আপত্তির জন্য থাকছে তিন নম্বর ফর্মটি। অনলাইনেও ফর্ম পাওয়া যাবে। তা পূরণ করে সব প্রমাণপত্র-সহ এনআরসি কেন্দ্রেই জমা দিতে হবে।
এ দিকে, চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পরে চিহ্নিত বিদেশিদের কী হবে—তা নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা চলছে। বিষয়টি নিয়ে পাশ কাটাচ্ছে রাজ্য ও কেন্দ্র। বর্তমানে রাজ্যের ছ’টি কারাগারে থাকা ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’-এ হাজারখানেক সন্দেহজনক বা ঘোষিত ‘বিদেশি’ বন্দি আছেন। ডি-ভোটারের সংখ্যা সরকারের হিসেবে ১,২৫,৩৩৩। ২০,৫৭৮ জনের নাম আদালত বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বাংলাদেশ যে এত জনকে নিজেদের নাগরিক মেনে নিয়ে ফেরাবে না, তা-ও নিশ্চিত। গোয়ালপাড়ায় নতুন ডিটেনশন শিবির তৈরির জন্য কেন্দ্রের কাছ থেকে ৪৬ কোটি টাকা মিলেছে বলে স্বরাষ্ট্র কমিশনার এল এস চাংসান জানান। কিন্তু তা তৈরি হতে অন্তত এক বছর লাগবে। সেখানেও সর্বাধিক সাড়ে তিন হাজার মানুষের ঠাঁই হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy