Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Lok Sabha Election 2024

‘দশম অবতার’ হচ্ছেন কি কমল নাথ? ১০ বছরে কংগ্রেস ছেড়েছেন ন’জন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী

গত দশ বছরে কংগ্রেস ছেড়েছেন ৯ জন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কমল নাথ যদি বিজেপিতে যোগদান করেন, তবে তিনিই হবেন দশম ব্যক্তি, যিনি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কংগ্রেস ছাড়বেন।

Nine former CMs left Congress in last ten years amid Kamal Nath Controversy

(বাঁ দিক থেকে) রাহুল গান্ধী, সনিয়া গান্ধী এবং কমল নাথ। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৪:৪২
Share: Save:

বিষ্ণুপুরাণে কৃষ্ণের দশ অবতারের কথা বলা হয়েছে। তবে কংগ্রেসের রাজনৈতিক পুরাণগাথায় অন্য একটি কারণে ‘দশম’ অবতার হওয়ার দিকে এগোচ্ছেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ। পরিসংখ্যান বলছে, গত দশ বছরে কংগ্রেস ছেড়েছেন ৯ জন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। যাবতীয় জল্পনাকল্পনাকে সত্যি করে কমল নাথ যদি বিজেপিতে যোগদান করেন, তবে তিনিই হবেন গত এক দশকের মধ্যে সেই দশম ব্যক্তি, যিনি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কংগ্রেস ছাড়বেন।

এক সপ্তাহও হয়নি কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক চহ্বাণ। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। খানিক আকস্মিক ভাবেই কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্যপদ ছাড়েন তিনি। পদত্যাগ করেন বিধায়কপদ থেকেও। ২০০৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন অশোক। তবে এই তালিকাটা বেশ দীর্ঘ। একদা জম্মু এবং কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ ২০২২ সালের অগস্ট মাসে কংগ্রেস ছাড়েন। অনুগামীদের নিয়ে তৈরি করেন নিজের দল ‘ডেমোক্র্যাটিক আজাদ পার্টি’। গুলাম নবির আগে দল ছাড়েন একদা সনিয়া গান্ধীর ‘আস্থাভাজন’, পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পঞ্জাব কংগ্রেসে অন্তঃকলহের জেরে অমরেন্দ্রকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়েছিল কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্ব। ওই বছরেরই নভেম্বর মাসে সনিয়াকে সাত পাতার চিঠি লিখে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৈরি করেন নিজের দল ‘পঞ্চাব লোক কংগ্রেস’। বিজেপির সঙ্গে আসন সমঝোতা করে ভোটে লড়লেও বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি অমরেন্দ্রের দল। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নিজের দলকে বিজেপিতে মিশিয়ে দেন তিনি।

২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা। মুকুলের সঙ্গে দল ছাড়েন ১১ জন কংগ্রেস বিধায়কও। মুকুল দলত্যাগ করায় উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে শক্তি খোয়ায় কংগ্রেস। তালিকা এখানেই শেষ নয়। গত দশ বছরে কংগ্রেস ছেড়েছেন আরও পাঁচ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁরা হলেন উত্তরাখণ্ডের বিজয় বহুগুণা, ছত্তীসগঢ়ের অজিত যোগী, কর্নাটকের এসএম কৃষ্ণ, মহারাষ্ট্রের নারায়ণ রাণে এব‌ং ওড়িশার গিরিধর গামাং। গামাং যদিও সম্প্রতি কংগ্রেসে প্রত্যাবর্তন করেছেন।

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, এই সব নেতা তাঁদের ঘনিষ্ঠদের নিয়ে দল ছেড়েছেন। ফলে রাজ্যগুলিতে সাংগঠনিক দিক থেকে আরও দুর্বল হয়েছে কংগ্রেস। নেতাদের কংগ্রেস থেকে প্রস্থানের নেপথ্যে যে কারণের কথা শোনা গিয়েছে, তা হল দলের অন্দরে মতান্তর এবং তা তার মীমাংসা করতে উচ্চ নেতৃত্বের ব্যর্থতা।

রাহুলের পিতামহী ইন্দিরা গান্ধীর আমলে ছিন্দওয়াড়ার সাংসদ হয়েছিলেন কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের প্রাক্তনী কমল। ১৯৮০ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় একটানা সাংসদ (মাঝে ১৯৯৬-’৯৮ পর্যন্ত সাংসদ ছিলেন না) কমল কেন্দ্রে মন্ত্রীও হয়েছেন একাধিক বার। একদা ‘সঞ্জয় গান্ধীর অনুগামী’ বলে পরিচিত হলেও পরবর্তী সময়ে গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে ঠাঁই পেয়েছেন। ২০১৮ সালে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসাবে দেড় দশক পরে ভোপালে ক্ষমতায় দলকে ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন কমল। হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডের নেতৃত্বে ২০২০-র মার্চে ২২ জন কংগ্রেস বিধায়কের বিদ্রোহের জেরে গদি হারান কমল। চতুর্থ বারের জন্য ভোপালের কুর্সি যায় বিজেপির শিবরাজ সিংহ চৌহান ওরফে ‘মামা’র হাতে। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে মধ্যপ্রদেশের ২৯টি আসনের মধ্যে মাত্র একটিতে জিতেছিল কংগ্রেস। কমলের খাসতালুক ছিন্দওয়াড়ায় তাঁর পুত্র নকুল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE