—ফাইল চিত্র
সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ তথা জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার। গত ৫ অগস্ট কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর কাশ্মীরের প্রতিক্রিয়া কী হয় তা নিয়ে দেশ জুড়েই সংশয় ছিল। কিন্তু, বার বার প্রশ্নের মুখে পড়েও জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন এবং কেন্দ্র— দু’তরফেই জানানো হয়েছিল, কাশ্মীরের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ রয়েছে। কিন্তু, সেই দাবি আর বাস্তব পরিস্থিতির মধ্যে যে কতটা ফারাক ছিল তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে কেন্দ্র সরকারের অভ্যন্তরীণ নোটেই। তাতে জানা গিয়েছে, গত দু’মাসে ৩০৬টি পাথর ছোড়ার মতো ঘটনা ঘটেছে উপত্যকায়। অর্থাৎ, প্রশাসনের দাবি আর বাস্তবতার মধ্যে আসমান-জমিন ফারাক।
কেন্দ্র সরকারের একটি অভ্যন্তরীণ নোট বলছে, সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পর উপত্যকায় ৮৯ জন আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ান-সহ প্রায় ১০০ নিরাপত্তারক্ষী পাথরের আঘাতে জখম হয়েছেন। কিন্তু, স্থানীয় প্রশাসন বরাবর দাবি করে এসেছিল, ২০১৬ সালে বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর উপত্যকা যে ভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছিল, তার ছিঁটেফোঁটাও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের মতো ঘটনার পরেও দেখা যায়নি। বরং, বিক্ষিপ্ত কিছু পাথর ছোড়ার মতো ঘটনা ঘটেছিল। স্থানীয় প্রশাসন আরও দাবি করেছিল, ২০১৯ সালের প্রথম ছ’মাসে কাশ্মীরে মাত্র ৪০টি পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটে।
গত ৬ অগস্ট, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার এবং তাকে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেয় সংসদ। ওই সিদ্ধান্ত ঘিরে বদলে যেতে পারে উপত্যকার ভারসাম্য— সেই আশঙ্কায় আগাম ব্যবস্থা হিসাবে কাশ্মীরে নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যা অনেক গুণ বাড়িয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কাশ্মীর জুড়ে জারি করা হয়েছিল একাধিক বিধিনিষেধ। সাধারণ মানুষের যাতায়াত ও ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারে জারি হয়েছিল নিষেধাজ্ঞা। বহু রাজনৈতিক নেতা-সহ ৪ হাজার জনকে আটক করা হয়েছিল। কিন্তু, নিরাপত্তার বজ্র আঁটুনি সত্ত্বেও, উপত্যকায় বিক্ষোভ, সীমান্তের ওপার থেকে অনুপ্রবেশ এবং জঙ্গি হামলা ঠেকানো যায়নি। সরকারি নথিতে হিংসার সেই পরিসংখ্যানও উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন: ভাড়া লক্ষাধিক, যাত্রী মাত্র ৪ জন! বিলাসবহুল করবা চৌথ স্পেশাল ট্রেন বাতিল করল রেল
আরও পড়ুন: পঞ্জাবে পাক ড্রোন হানায় পাকিস্তানের হাত ছিল, জানাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
সরকারি রেকর্ড বলছে, গত দু’মাসেই ৫টি এনকাউন্টারের ঘটনা ঘটেছে কাশ্মীরে। তাতে ১০ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। নিহত হয়েছেন এক পুলিশ অফিসারও। এ ছাড়া দু’টি গ্রেনেড বিস্ফোরণ ও দু’বার নিরাপত্তারক্ষীদের থেকে অস্ত্র কেড়ে চেষ্টা করা হয়েছে উপত্যকায়। সিআরপিএফ ক্যাম্পে হামলা হয়েছে। যদিও, তাতে কেউ হতাহত হননি। সেই সঙ্গে, অস্বাভাবিক মৃত্যুও ঘটেছে কাশ্মীরে। শ্রীনগরের শৌরা এলাকায় একাদশ শ্রেণির এক ছাত্র ছররা বন্দুকের গুলিতে মারা গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও, সেই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে সেনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy