জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ়ে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
একদিকে চিনের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন, অন্য দিকে ইউক্রেন যুদ্ধের আবহ— এই পরিস্থিতির মধ্যেই ভারত সফররত জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ়ের সঙ্গে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, শোলৎজ়ের সঙ্গে মোদীর বৈঠকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ছাড়াও উঠেছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, বাণিজ্য এবং নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিষয়। জোর দেওয়া হয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার উপরে।
দু’দিনের ভারত সফরে শনিবারই দিল্লি এসে পৌঁছেছেন জার্মান রাষ্ট্রপ্রধান। তাঁকে রাষ্ট্রপতি ভবনে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী। মোদীর সঙ্গে শোলৎজ়ের বৈঠকে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, শক্তি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলি স্থান পেয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী জানিয়েছেন, ভারত-জার্মানি কৌশগত অংশীদারিত্ব এই সফরের ফলে আরও সমৃদ্ধ হবে। এ দিন বেলা ১১টা ৫০ থেকে হায়দরাবাদ হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন মোদী এবং শোলৎজ়।
শোলৎজ়ের এই সফর এমন একটা সময়ে, যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কা লেগেছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে আমেরিকা-ব্রিটেন-ফ্রান্স-সহ পশ্চিমের বড় অর্থনীতিগুলি একের পর এক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর পাশাপাশি অন্য দেশগুলির উপরেও রাশিয়াকে এড়িয়ে চলার জন্য চাপ দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতেও ভারত নিজের দেশের অর্থনীতির অঙ্কেই পশ্চিমের নিষেধাজ্ঞা বা চাপকে অস্বীকার করে ‘পুরনো বন্ধু’ রাশিয়ার থেকে সস্তায় জ্বালানি তেল আমদানির পরিমাণ বাড়িয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই শোলৎজ়ের সফরে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, রাশিয়া থেকে কম দামে অপরিশোধিত তেল কেনা নিয়ে ভারতের বাধ্যবাধকতার বিষয়টি শোলৎজ়কে ব্যাখ্যা করেন মোদী। জার্মানি যে পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিষয়টি নিয়ে ‘মাথা ঘামাবে না’, সে ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন ভারতে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ফিলিপ অ্যাকারম্যান। এ দিন দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে সেই বার্তাই স্পষ্ট হয়েছে, যা ভারতকে বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বস্তি দিয়েছে। জার্মানির মতো শক্তিধর অর্থনীতির দেশ এবং পশ্চিমের জোটের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারকে এই প্রশ্নে এক রকম ‘পাশে পাওয়ায়’ খুশি বিদেশ মন্ত্রক।
এ দিনের বৈঠকে উঠেছে চিনের বিষয়টিও। দীর্ঘ দিন ধরেই চিনের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে ভারতের টানাপড়েন বেড়েছে। এই অবস্থায় ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনকে চাপে ফেলতে ভারতের সঙ্গে অক্ষ তৈরি করতে আগ্রহী জার্মানি। যা নিঃসন্দেহে স্বস্তি দিয়েছে ভারতকে। উঠেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গও। ভারত যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই যুদ্ধ বন্ধ করতে আগ্রহী, সে কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মোদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy