Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Zigana Pistol

জিগানা পিস্তল দিয়ে খুন করা হয়েছিল আতিক-আশরফকে, কেন গ্যাংস্টারদের পছন্দের অস্ত্র এটি?

পুলিশ সূত্রে খবর, ‘জিগানা’ পিস্তল সহজলভ্য নয়। এর এক একটির দাম ৪-৭ লক্ষ টাকা। তবে চাহিদার কারণে দামের হেরফেরও হয়। চাহিদা বেশি থাকলে ১০-১২ লক্ষ টাকাতেও বিক্রি হয় এই পিস্তল।

Atiq Ahmed

আতিক-আশরফকে গুলি করে খুন করা হয় ১৫ এপ্রিল। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৩ ১৩:০৬
Share: Save:

উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন সাংসদ এবং বিধায়ক তথা ‘গ্যাংস্টার’ আতিক আহমেদ এবং তাঁর ভাই আশরফকে গত ১৫ এপ্রিল পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে মাথায় গুলি করে খুন করা হয়। ২২ সেকেন্ডে ১৪ রাউন্ড গুলি করা হয়েছিল। যে স্বয়ংক্রিয় পিস্তল থেকে গুলি করা হয়, সেটি উদ্ধারও হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, খুনে ব্যবহৃত হওয়া এই পিস্তলটি হল ‘জিগানা’। তুরস্কে তৈরি হয়। বর্তমানে গ্যাংস্টারদের কাছে এই পিস্তলের চাহিদা বেড়েছে। বিভিন্ন ‘অপারেশনে’ও ব্যবহার করা হচ্ছে এই পিস্তল। লরেন্স বিষ্ণোইয়ের মতো কুখ্যাত গ্যাংস্টারদের প্রথম পছন্দের অস্ত্র হল এই ‘জিগানা’।

পুলিশ সূত্রে খবর, ‘জিগানা’ পিস্তল সহজলভ্য নয়। এর এক একটির দাম ৪-৭ লক্ষ টাকা। তবে চাহিদার কারণে দামের হেরফেরও হয়। চাহিদা বেশি থাকলে ১০-১২ লক্ষ টাকাতেও বিক্রি হয় এই পিস্তল। তুরস্ক এই পিস্তলের জন্মস্থান হলেও গোপনে এই পিস্তল তৈরি হয় পাকিস্তান এবং মালয়েশিয়ায়। আর সেখান থেকে ভারতে পাচার হয় এই পিস্তল। তবে বৈধ ভাবে এই পিস্তল ব্যবহার করে আমেরিকার উপকূলরক্ষী বাহিনী, এ ছাড়াও মালয়েশিয়া, আজারবাইজান সেনা এবং ফিলিপিন্সের ন্যাশনাল পুলিশ।

জিগানা পিস্তলের অনেক ধরন বা ‘ভ্যারিয়ান্ট’ আছে। তবে আতিক-আশরফকে খুন করতে যে ভ্যারিয়ান্ট ব্যবহার করা হয়েছিল সেটি হল ‘জিগানা এফ সেমি অটোমেটিক’ মডেল। এমনই দাবি পুলিশের। জিগানা ‘সেমি অটোমেটিক’ পিস্তল। ২০০১ সাল থেকে এই পিস্তল তৈরি করছে তুরস্কের অস্ত্র প্রস্তুতকারক সংস্থা টিআইএসএএস। গোটা বিশ্বে জিগানার ১১ ধরনের মডেল আছে। আকার, ওজন, গুলির মাপ ইত্যাদির কারণে প্রকারভেদ করা হয় এই পিস্তলের। তার মধ্যে ১০ ধরনের মডেলে ১৫ রাউন্ডের ম্যাগাজিন থাকে। যার মধ্যে চার ধরনের গুলি ব্যবহার হয়। ৯x৯ এমএম পেরাবেলম, ৯x১২ এমএম আইএমআই, এ ছাড়াও পয়েন্ট ৪০এস অ্যান্ড ডব্লিউ এবং পয়েন্ট ৪৫ এসিপি। চার ধরনের গুলির আলাদা আলাদা মারণক্ষমতা রয়েছে।

কেন এত চাহিদা এই পিস্তলের?

পুলিশ সূত্রে খবর, এই পিস্তল থেকে গুলি চালানোর সময় বেশি আওয়াজ হয় না। তা ছাড়া এই পিস্তল জ্যাম বা লকড হয়ে যায় না। একসঙ্গে ১৫-১৭ রাউন্ড গুলি চালানো যায়। এর মধ্যে অত্যাধুনিক ‘ব্রাউনিং-টাইপ’ লকিং রয়েছে। এই পিস্তল খুবই হালকা। ৭২০ থেকে ৯২০ গ্রাম ওজন হয়। সাধারণত ভারতে প্রস্তুত কোনও পিস্তল থেকে ২-৩ রাউন্ড গুলি চালানোর পর গরম হয়ে যায়। ৫ রাউন্ডের পর জ্যাম হয়ে যায়। কিন্তু জিগানার ক্ষেত্রে এ সবের কোনও ঝঞ্ঝাট নেই। একসঙ্গে ১৭ রাউন্ড গুলি চালানোর পরেও গরম বা জ্যাম হয়ে যায় না। তাই এই পিস্তলের চাহিদা অনেক বেশি। আর এ কারণেই গ্যাংস্টারদের কাছে এই পিস্তল একটা ‘স্টেটাস সিম্বল’ হয়ে উঠেছে।

এত সুবিধা থাকা সত্ত্বেও বিশ্বের সেরা ১০ পিস্তলের তালিকায় নাম নেই জিগানার। তবে মারণক্ষমতার দিক থেকে এই পিস্তলের পরিচিতি এবং জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। বিশ্বের সেরা ১০ পিস্তলের মধ্যে রয়েছে— গ্লক ১৭, সিগ-সওর পি৩২০, বরেটা ৯২, সিগ-সওর পি২২৬, সীজেড ৭৫, স্মিথ অ্যান্ড বেসন মিলিটারি অ্যান্ড পুলিশ, এফএন ফাইভ সেভেন, এইচকে ইউএসপি, বরেটা পিx৪ স্মার্ট এবং ওয়ালথার পি ৯৯।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Atiq Ahmed pistol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE