Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪
National News

জীবন-মৃত্যুর ব্যবধান ১০ মিনিট! জ্বালানি শেষের মুখে জরুরি অবতরণ বিমানের, রক্ষা ১৫৩ জন যাত্রীর

প্রয়াগরাজের দিকে যাওয়ার পথে লখনউ এটিসি থেকে ফের জানানো হয়, লখনউয়ের আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। অবতরণে সমস্যা হবে না। তখন পাইলট লখনউয়ের দিকে ফিরে এসে অবতরণের অনুমতি চান এবং ‘জ্বালানি জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেন।

জ্বালানি শেষের মুখে জরুরি অবতরণ ভিস্তারার বিমানের। —ফাইল চিত্র

জ্বালানি শেষের মুখে জরুরি অবতরণ ভিস্তারার বিমানের। —ফাইল চিত্র

সংবাদ সংস্থা
লখনউ শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৯ ১৩:০২
Share: Save:

১৫৩ জন যাত্রীর জীবন-মৃত্যুর ব্যবধান ছিল মাত্র ১০ মিনিট। তবে শেষ পর্যন্ত বিপদ ঘটেনি। লখনউ বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করেছে ভিস্তারার একটি বিমান। খারাপ আবহাওয়ার জেরে একাধিক বিমানবন্দরে নামার চেষ্টা করায় আকাশে ঘুরে জ্বালানি প্রায় শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত লখনউয়ের আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হতেই জরুরি অবতরণ করে মুম্বই থেকে দিল্লিগামী বিমানটি। সোমবারের ঘটনা হলেও সামনে এসেছে আজ বুধবার। ‘ডিজিসিএ’ সূত্রে খবর, ওই বিমানের এক পাইলটকে বসিয়ে দিয়ে শুরু হয়েছে তদন্ত।

ভিস্তারার এক মুখপাত্র বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ১৫৩ জন যাত্রী নিয়ে সোমবার মুম্বই থেকে দিল্লির উদ্দেশে উড়ে যায় ভিস্তারা এয়ারলাইনসের এ-৩২০ নিও বিমান। কিন্তু আবহাওয়া খারাপথাকার দরুণ জেরে দিল্লি বিমানবন্দরে দৃশ্যমানতা অত্যন্ত কম ছিল। তাই দিল্লি এটিসি থেকে ওই বিমানটিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় লখনউয়ে। কিন্তু সেখানেও দৃশ্যমানতা কম থাকায় নামতে পারেনি। তখন কানপুর অথবা প্রয়াগরাজের (ইলাহাবাদ) দিকে যেতে বলা হয় ভিস্তারার ওই বিমানটিকে।

কিন্তু প্রয়াগরাজের দিকে যাওয়ার পথে লখনউ এটিসি থেকে ফের জানানো হয়, লখনউয়ের আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। অবতরণে সমস্যা হবে না। তখন পাইলট লখনউয়ের দিকে ফিরে এসে অবতরণের অনুমতি চান এবং ‘জ্বালানি জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেন। শেষ পর্যন্ত এটিসির অনুমতি নেওয়ার পর নিরাপদেই অবতরণ করে বিমানটি।

কিন্তু প্রয়াগরাজ থেকে ফেরার পথেই ‘ফুয়েল মে-ডে’ ঘোষণা করেন পাইলট। বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রে এই শব্দবন্ধের অর্থ জ্বালানি সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা। বিমানের জ্বালানি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের কম হলেই এটিসিতে এই বিপদ সঙ্কেত পাঠান পাইলট। সাহায্যের আবেদন জানান। ভিস্তারার বিমানের পাইলট এই ‘ফুয়েল মে-ডে’ ঘোষণার পরই জরুরি অবতরণের অনুমতি দিয়ে দেয় লখনউ বিমানবন্দরের এটিসি।

আরও পডু়ন: ইস্তফা নিয়ে স্পিকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত, কর্নাটকে আস্থাভোটে যেতে বাধ্য নন বিধায়করা: সুপ্রিম কোর্ট

কিন্তু কেন এমন জ্বালানি-শূন্য পরিস্থিতি তৈরি হল? সাধারণত, মুম্বই-দিল্লি বিমানযাত্রায় সময় লাগে ৫০ মিনিটের মতো। তার পরেও আরও এক ঘণ্টা ওড়ার মতো জ্বালানি নিয়ে আকাশে ওড়ে বিমানগুলি। কিন্তু এক্ষেত্রে দিল্লি থেকে প্রথমে লখনউ, সেখান থেকে প্রয়াগরাজের দিকে যাওয়া এবং আবার লখনউয়ে ফিরে আসার জেরে প্রায় এক ঘণ্টা অতিরিক্ত সময় আকাশে উড়তে হয়েছিল বিমানটিকে। সেই কারণেই অতিরিক্ত জ্বালানিও প্রায় শেষ হয়ে যায়।

ডিজিসিএ সূত্রে খবর, লখনউয়ে নামার পর মাত্র ৩০০ লিটারের মতো জ্বালানি বেঁচে ছিল। যার অর্থ প্রায় ১০ মিনিট বা তারও কম সময় আকাশে উড়তে পারত বিমানটি। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বোয়িং ৭৪৭-এর মতো বড় বিমানে প্রতি সেকেন্ডে এক গ্যালন বা প্রায় চার লিটারের মতো জ্বালানি পোড়ে। অর্থাৎ প্রতি মিনিটে ২৪০ লিটারের মতো। তবে ভিস্তারার মতো মাঝারি গোত্রের বিমানের ক্ষেত্রে সেই জ্বালানি পোড়ার পরিমাণ বেশ কিছুটা কম। সেই হিসেবে যদি ২ সেকেন্ডে এক লিটার জ্বালানি পোড়ে, তা হলেও ৩০০ লিটারের হিসেবে আকাশে ওড়ার মতো মাত্র ১০ মিনিট সময় ছিল।

আরও পডু়ন: কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ড বহাল না খারিজ? আন্তর্জাতিক আদালতের রায় আজ

ডিজিসিএ-র একটি সূত্রে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ওই বিমানের এক পাইলটকে আপাতত বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাত্রা থেকে গন্তব্য ছাড়াও অতিরিক্ত এক ঘণ্টা আকাশে ওড়ার মতো জ্বালানি নিয়ে বিমানটি উড়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাইলটরা আগে থেকে জ্বালানি কমে যাওয়ার কথা বলেছিলেন কি না, এটিসির রেকর্ড থেকে সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE