আশঙ্কা ছিল। সত্যি হল। এই মরসুমের এভারেস্ট শৃঙ্গজয় শুরু হওয়ার পরেই অভিযাত্রীদের তরফে খবর এল, ভেঙে গিয়েছে এভারেস্ট শৃঙ্গের অন্যতম বৈশিষ্ট্য, ‘হিলারি স্টেপ’।
২০১৫ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর থেকেই পর্বতারোহী মহল আশঙ্কা করছিল, বিশ্বের সর্বোচ্চ এই শৃঙ্গে ওঠার রাস্তাটি আর আগের মতো থাকবে না, বদল আসতে পারে অনেক। ঠিক যেমন বেস ক্যাম্প থেকে ক্যাম্প ওয়ানে যাওয়ার পথে যে খুম্বু আইসফল পড়ে, সেখানে অনেক বেড়ে গিয়েছে ক্রিভাস অর্থাৎ ফাটলের সংখ্যা। এভারেস্ট শৃঙ্গ থেকে খানিকটা নীচে, শৃঙ্গের দক্ষিণ-পূর্ব গা ঘেঁষে অবস্থিত ১২ মিটারের একটি বড় পাথুরে অংশ পাহাড়ের গা থেকে বেরিয়ে ছিল। ওই অংশটি পেরোনো বেশ কঠিন ছিল পর্বতারোহীদের পক্ষে। ১৯৫৩ সালে স্যর এডমন্ড হিলারি প্রথম ওই অংশটি সফল ভাবে পেরোন এবং এভারেস্ট শৃঙ্গে পা রাখেন। তার পর থেকেই ওই অংশটির নাম হয়েছে ‘হিলারি স্টেপ’। তামাম পর্বতারোহী মহলের স্বপ্নের পদক্ষেপ, যা পার করতে পারলেই ছোঁয়া যায় এভারেস্ট!
আরও পড়ুন:সফল ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা, খুশি কিম
এ বছর ১৬ মে প্রথম সামিট শুরু হয় এভারেস্টে। সেই অভিযাত্রী দলের দলনেতা টিম মোসডেল নিশ্চিত করেছেন, হিলারি স্টেপ আর নেই। সেই সঙ্গে এ-ও জানিয়েছেন, ভেঙে যাওয়া ওই পথ এ বার আরও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে অভিযাত্রীদের জন্য। তাঁর কথায়, ‘‘আগে বেরিয়ে থাকা অংশের পাশ দিয়ে রুট তৈরি করে দিতেন শেরপারা। এখন যা ভাঙাচোরা অবস্থা, তাতে অভিযাত্রীদের এগোনোর পথ তৈরি করতে শেরপাদের রীতিমতো বেগ পেতে হচ্ছে।’’ অভিযাত্রী মহলের আশা, কিছু দিনের চেষ্টায় দক্ষ শেরপারা হয়তো এর সমাধান করে ফেলবেন। ভাঙাচোরা অংশের মধ্যে দিয়েই এমন কোনও পথ তৈরি হবে, যা হিলারি স্টেপের চেয়ে সহজ। সর্বোপরি, প্রতি বছর হিলারি স্টেপ পেরোনোর দীর্ঘ অপেক্ষায় যে ‘ট্রাফিক জ্যাম’ হয়, তা হয়তো এড়ানো যাবে। প্রতি বছরই এতে কয়েক ঘণ্টা নষ্ট হওয়ায় আটকে যায় অনেক সামিট। ঠান্ডায় ফ্রস্ট বাইটের শিকার হতে হয় অনেককে, ফুরিয়ে যায় অক্সিজেন।
অভিযাত্রীদের সূত্রে খবর, ২০১৫ সালের ভূমিকম্পেই এই হিলারি স্টেপের যা ক্ষতি হওয়ার হয়েছিল। গত বছর, অর্থাৎ ২০১৬ সালে ওই অংশে এতই বরফ জমে ছিল, ভাল করে বোঝা যায়নি হিলারি স্টেপের অস্তিত্ব। এ বছর পরিষ্কার হয়ে গেল, হিলারি স্টেপ আর নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy