আশ্রয়ের খোঁজে। শনিবার বাংলাদেশের কক্সবাজারে। ছবি: এএফপি।
দেশের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিতে ঘূর্ণিঝ়ড় ‘রোয়ানু’ আছড়ে পড়তে পারে সেই আশঙ্কায় বৃহস্পতিবারই সতর্কতা জারি করেছিল বাংলাদেশের হাওয়া অফিস। সেই মর্মে তৈরিও ছিল সরকারের উদ্ধারবাহিনী। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের উদ্দাম দাপটের মুখে শেষ রক্ষা হল না। শুক্রবার মাঝরাতে দেশের উপকূল অঞ্চলে ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার বেগে ‘রোয়ানু’ আছড়ে পড়ায় দেশ জুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২১। আহত শতাধিক।
শুক্রবার চট্টগ্রাম, ভোলা, নোয়াখালি, কক্সবাজার, পটুয়াখালি ও লক্ষ্মীপুর— এই ছয়টি জেলায় ঘূর্ণিঝড়ের দাপট ছিল সব চেয়ে বেশি। শনিবার দিনভর সারা দেশেই প্রবল ও মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ব্যাপক বৃষ্টিতে পাহাড়ি বাংলাদেশে কোথাও কোথাও ধস নেমেছে বলে খবর। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে চট্টগ্রামের উপকূল অঞ্চলে এ দিন ব্যাপক জলোচ্ছ্বাস দেখা দেয়। ঝড়ের ধাক্কায় বাংলাদেশে শিপিং কর্পোরেশনের একটি জাহাজের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে সেটি আছড়ে পড়ে পতেঙ্গা সৈকতে। ঝড়ের দাপটে ঘরের চাল উড়ে, দেওয়াল ধসে বহু মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন খোলা আকাশের নীচে। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে দেশ জুড়ে অন্তত ২-৩ লক্ষ মানুষকে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
তবে হাওয়া অফিসের মতে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের ফলে ‘শাপে বর’ হয়েছে। কী ভাবে? সম্প্রতি অন্ধ্রপ্রদেশের মছলিপত্তমের কাছে দানা বেঁধেছিল এই ঘূর্ণিঝড়। তার পর ওড়িশা উপকূলের কাছে বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করে বিপুল শক্তিতে তা আছড়ে পড়ে বাংলাদেশে। তবে দু’দিনের অঝোর বৃষ্টিতে অনেকটাই দুর্বল হয়েছে ‘রোয়ানু’। এখন সে গতিপথ বদলে মায়ানমারমুখী হওয়ায় অচিরেই সূর্যের মুখ দেখা যাবে বলে আশা রাখছে হাওয়া অফিস। শনিবার বিকেলের দিকে ঢাকা ও সিলেট-সহ কয়েকটি জেলায় আবহাওয়ার খানিকটা উন্নতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বাংলাদেশের প্রশাসন সূত্রে খবর, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য চাল ও ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে সরকার। উদ্ধারকাজে গতি আনতে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবক। প্রশাসনের দাবি, দুর্যোগ মোকাবিলায় বাড়তি সতর্কতার ফলে প্রাণ ও সম্পদহানি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy