প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং শেফ বিকাশ খন্না।
এগারো দিন রেস্তোরাঁ থেকে বের হননি তিনি আর তাঁর দলবল। করে গিয়েছেন অক্লান্ত পরিশ্রম। তিনি বিখ্যাত শেফ বিকাশ খন্না। ফলও মিলেছে হাতে নাতে। তাঁর হাতের খাবার খেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এতটাই তৃপ্ত হয়েছেন যে প্রোটোকলের তোয়াক্কা না করে জড়িয়ে ধরেন শেফ বিকাশ খন্নাকে। “তুমি আমাকে গর্বিত করেছ”—নৈশভোজ শেষে অল্প কথায় বিকাশকে নিজের মনের কথা জানান মোদী।
বিদেশ সফররত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে রসনায় তৃপ্ত করার দায়িত্ব বর্তেছে বিকাশ খন্নার উপর। শুক্রবার নিউ ইয়র্কের ওয়ালডর্ফ অ্যাস্টোরিয়া হোটেলে বিশ্বের কর্পোরেট সেক্টরের হুজহু-দের সঙ্গে গোল-টেবল বৈঠকে বসেন মোদী। সেখানে অতিথিদের পেট পুজোর দায়িত্বভার গিয়ে পড়ে বিকাশ খন্নার আর তাঁর দলের উপর। নিরাশ করেননি বিকাশ। মান রেখেছেন নিজের আর ভারতীয় রন্ধনশৈলীর।
কী কী ছিল মেনুতে?
এদিনের অনুষ্ঠানে মোদী এবং ৫০০টি কোম্পানির ৫০ জন কর্তা এবং আমলাদের জন্য কোনও বিদেশি খাবার নয় বরং ছিল খাঁটি দেশি খাবার। ভারতের নানা প্রান্তের ২৬টি খাঁটি দেশি খাবারকে বেছে নেন বিকাশ। শুধু বদলে দেন পদগুলির চিরাচরিত রূপ। আর তাতেই ফিদা মোদী থেকে সকলে। খাবারের তালিকায় ছিল—গুজরাতি কর্ন ধোকলা থেকে শুরু করে খাণ্ডভি, নারকেলের চাটনির মুস। ছিল পোহা, বিসিবেল, মিজোরামের কালো চালের খিচুড়ি, বিটরুট পোরিয়াল, জগন্নাথ পিঠে। মধুরেন সমাপয়েত-র মতো অতিথিদের মুগ্ধ করতে শেষ পাতে হাজির ছিল নারকেলের রুটি, সেভিয়ান রোল, কাশ্মীরি কাহাওয়া, কম্বান কুজ বা বাজরার পায়েসের মতো বিভিন্ন মিষ্টি পদ।
জিভে জল আনা খাবার খেয়ে এতটাই মুগ্ধ হন সকলে, যে এক শিল্পকর্তা তো বলেই ফেলেন, এর আগে এরকম পাশবিক নৈশভোজ অংশ নেননি তিনি। সকলে যখন অবাক, আর ত্রস্ত বিকাশ। তখন রহস্য ভাঙেন সেই সুরসিক কর্পোরেট কর্তা নিজেই। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি খাবারই যেন কোনও চিত্রকল্প। এত সুন্দর..... যে কষ্ট হচ্ছিল ছুরি দিয়ে কেটে কেটে খেতে।’
তবে সব কিছুর শেষে একটাই খিঁচ রয়ে গিয়েছে বিকাশের মনে। সে আফশোস, মাকে মোদীর সঙ্গে কথা না বলাতে পারার আফশোস।
মোদীর আন্তরিক ব্যবহারে এতটাই আপ্লুত হন বিকাশ যে তখনই অমৃতসরে থাকা মাকে করেন ফোন। তবে মর্নিং ওয়াকে বের হওয়ায় বিকাশের মা-র মোদীর সঙ্গে কথা আর বলা হয়ে ওঠেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy