৩০ বছর পর কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বিমান পৌঁছচ্ছে সুইডেনে। এই প্রথম ভারত-নর্ডিক রাষ্ট্রগুলির সম্মেলনে যোগ দিতে আজ স্টকহলমে রওনা হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নর্ডিকগোষ্ঠীভুক্ত আরও চারটি দেশের (ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, নরওয়ে) প্রধানেরাও পৌঁছচ্ছেন সেখানে। আগামিকাল শীর্ষ বৈঠক সেরে কমনওয়েলথ সম্মেলনে যোগ দিতে ব্রিটেন যাবেন মোদী। প্রসঙ্গত, সুইডেনের অস্ত্র নির্মাতা সংস্থা বফর্স-এর কামান কেনা নিয়ে রাজীব গাঁধীর আমলে ঘুষ-কেলেঙ্কারির প্রেক্ষিতে সে দেশে সফর বাড়তি তাৎপর্যপূর্ণ।
উত্তর ইউরোপের এই বৃহৎ গোষ্ঠীর সঙ্গে নয়াদিল্লি কখনও কেন কার্যকরী দৌত্য করেনি সাম্প্রতিক অতীতে, তা নিয়ে বারবার সমালোচনা হয়েছে কূটনৈতিক শিবিরে। মোদী সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর মনে করা হয়েছিল, অন্তত ডেনমার্কের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে সক্রিয় হবে তারা। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন মোদীর ভাবমূর্তি গড়ার প্রশ্নে ডেনমার্ক সরকার অনেকটাই সহায়তা করেছিল বলেই মনে করা হয়। কিন্তু সেভাবে ডেনমার্কের সঙ্গেও বন্ধুত্ব করতে দেখা যায়নি মোদীকে। বরং নর্ডিক রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে ছোটখাটো মনোমালিন্য (কিম ডেভি থেকে শুরু করে ভারতীয় দম্পতির কারাবাসের মতো ঘটনা) নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক সহজ হতে দেয়নি। বিদেশমন্ত্রকের মতে, আসন্ন সম্মেলনের মাধ্যমে বরফ গলাতে চাইছেন মোদী।
প্রসঙ্গত, এই পাঁচটি দেশের জিডিপি রাশিয়ার তুলনায় বেশি (১.৫ লক্ষ কোটি ডলার)। গণতন্ত্র, সুশাসন এবং সামাজিক সূচকের প্রশ্নে এই রাষ্ট্রগুলির অবস্থান ইউরোপের অনেক দেশের উপরে। বিশ্বব্যাঙ্কের সর্বশেষ সমীক্ষা অনুসারে, সরকারি কার্যকারিতার বিচারে ডেনমার্ক, নরওয়ে এবং ফিনল্যান্ড বিশ্বের প্রথম ৮টি রাষ্ট্রের তালিকায় রয়েছে। এছাড়া, আমেরিকা এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ যখন রক্ষণশীল অর্থনীতির প্রতি পক্ষপাত দেখাচ্ছে, তখন নর্ডিক রাষ্ট্রগুলি উদার অর্থনীতির পথেই হাঁটছে। একদিকে মুক্ত অর্থনীতি, অন্যদিকে সামাজিক উন্নয়ন — এই দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষাই ‘নর্ডিক মডেল’ হিসাবে পরিচিত। এহেন পাঁচটি দেশ থেকে মোদী কতটা সুবিধা আদায় করতে পারেন, সেটাই এখন দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy