Advertisement
২৯ এপ্রিল ২০২৪

কে-৪ মিসাইল দেখে আতঙ্কে পাকিস্তান, তীব্র ক্ষোভ জানাল ইসলামাবাদ

পাকিস্তানকে না জানিয়ে সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযেগ্য দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া উচিত হয়নি ভারতের। বলল পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক। রীতিমতো উষ্মা প্রকাশ করে পাক বিদেশ মন্ত্রকের অভিযোগ, ভারত মহাসাগরকেও নয়াদিল্লি পারমাণবিক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করছে।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৬ ১৪:৩৬
Share: Save:

পাকিস্তানকে না জানিয়ে সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযেগ্য দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া উচিত হয়নি ভারতের। বলল পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক। রীতিমতো উষ্মা প্রকাশ করে পাক বিদেশ মন্ত্রকের অভিযোগ, ভারত মহাসাগরকেও নয়াদিল্লি পারমাণবিক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করছে। ভারতের এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা এশিয়ায় শক্তির ভারসাম্য নষ্ট করছে বলেও ইসলামাবাদের দাবি।

ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপনের আগে সাধারণত প্রতিবেশী দেশকে জানানো হয়। ভারত বা পাকিস্তান এর আগে কখনও পরস্পরকে না জানিয়ে কোনও ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপন করেনি, এমনটা নয়। কিন্তু ভারত না জানিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লে পাকিস্তানও ভারতকে না জানিয়ে পাল্টা উৎক্ষেপন করেছে। ঠিক উল্টোটাও হয়েছে। কিন্তু এ বার পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। পাকিস্তান শুধু নয়, বঙ্গোপসাগরের গভীর থেকে পরমাণু শক্তিধর দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কে-৪ ছোড়ার আগে, কোনও দেশকেই কিছু জানায়নি ভারত। এই ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা ভারতকে নতুন মর্যাদা এনে দিয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য যে পাঁচ দেশ, সেই দেশগুলি ছাড়া আর কারও হাতে সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযোগ্য দূরপাল্লার পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র এত দিন ছিল না। বঙ্গোপসাগরের গভীর থেকে হানা দিয়ে কে-৪ নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত হানার পর, পরমাণু শক্তির নিরিখে ভারতও নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের গোত্রে পৌঁছে গিয়েছে। পাকিস্তানের হাতে এত অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র নেই। ফলে এই রকম কোনও ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্টা উৎক্ষেপন পাকিস্তান করতে পারেনি। ভারতের বিরুদ্ধে উষ্মা প্রকাশ করেই ক্ষান্ত হতে হয়েছে।

আরও পড়ুন:

রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ উড়ান, বিশ্বের সেরা চপার এখন ভারতের হাতে

চিনা গতিবিধিকে চ্যালেঞ্জ, আন্দামানে মিসাইল করভেট পাঠাল নৌসেনা

কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপন যে পাকিস্তানকে প্রবল চাপে ফেলে দিয়েছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই কূটনৈতিক মহলের। সাপ্তাহিক সাংবাদিক বৈঠকে পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র নাফিস জাকারিয়া বলেছেন, ‘‘এই ক্ষেপণাস্ত্র যে উৎক্ষেপন করা হবে, তা আমাদের আগে থেকে জানানো উচিত ছিল ভারতের।’’ জাকারিয়ার অভিযোগ, পাকিস্তানকে না জানিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপন করে ভারত দ্বিপাক্ষিক সৌজন্য লঙ্ঘন করেছে। এতেই থামেনি পাকিস্তান। ভারত মহাসাগরকে পরমাণু যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করা হচ্ছে বলেও ইসলামাবাদ অভিযোগ করেছে। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যতগুলি দেশ রয়েছে, তার মধ্যে চিন ছাড়া অন্য. কোনও দেশের হাতে সমুদ্রের তলা থেকে পরমাণু হামলা চালাতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র ছিল না। ভারতের হাতে সেই ক্ষেপণাস্ত্র এসে যাওয়ায়, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনা আধিপত্য প্রসারের চেষ্টা আবার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ল। পাকিস্তানের দাবি, এতে ভারত মহাসাগর সম্ভাব্য পরমাণু যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হল এবং এশিয়ায় শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হল।

ভারতের প্রতিরক্ষা এবং বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানের সঙ্গে চাপে ফেলেছে চিনকেও। সরাসরি মন্তব্য না করে চিন বোঝাতে চেয়েছে, কে-৪ মিসাইল নিয়ে বেজিং ভাবিত নয়। কিন্তু পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রককে দিয়ে বিবৃতি জারি করানোর পিছনে চিনের হাত রয়েছে। পাকিস্তানকে কাজে লাগিয়ে চিন বোঝাতে চাইছে, ভারত পরমাণু অস্ত্রের প্রতিযোগিতায় ইন্ধন দিচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE